
চাঁদপুর খবর রিপোর্ট : চাঁদপুর পদ্মা ও মেঘনায় সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে ইলিশ শিকারের মহোৎসব।
চাঁদপুর সদরের ১৪ নং রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের নতুন দেওয়ান বাজার, মোল্লার বাজার, আছকা বাজার এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে মা ইলিশ নিধন। ইলিশ নিধনের পরে রাজরাজেশ^র ঢালী স্কুলের সামনে প্রকাশ্যে ডাকে ইলিশ বিক্রি হয়।
জেলেরা জানান, আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে মোট ১৫-১৭ দিন ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুম। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝঁকে ইলিশ আসে নদীতে। তাদের প্রজনন নির্বিঘ্ন রাখতে বছরের তিন সপ্তাহ ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করে সরকার। এবার নিষেধাজ্ঞা থাকছে ৪-২৫ অক্টোবর।
তবে প্রশাসনেরর চোখ ফাঁকি নিষেধাজ্ঞার সময় অসাধু জেলে এবার নতুন কৌশল নিয়েছে তারা। পুরুষ জেলেদের সাথে মহিলা ও “বেদে সম্প্রদায় এবং ছোট ছোট শিশুদের নদীতে নামিয়ে ইলিশ ধরার কাজে ব্যবহার করছে। জানা গেছে, নৌকাতেই এসব ইলিশ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা জেলেদের কাজটি করতে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদীর তীর লাগোয়া বিভিন্ন স্থানে সন্ধ্যা, রাত ও ভোর হলেই জমে উঠে অবৈধ ইলিশের হাট। প্রতিবছরের মতো এবারও স্থানীয় প্রশাসন মা ইলিশ শিকারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু ঠেকানো যাচ্ছে না শিকারিদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, মাছ ব্যসায়ীরাই জেলেদের জাল ফেলতে বাধ্য করেন। দাম বেশি ও দাদন দেওয়ার লোভ দেখায় কেউ কেউ। জেলেদের যারা অগ্রিম টাকা নেয়, তারা বাধ্য হয় মাছ ধরতে। প্রশাসনের কেউ কেউ অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন বলেও অভিযাগ পাওয়া গেছে। তারা আরো জানান, জেলা ট্রাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা কিছু লোক অভিযানের নামে প্রতিবছর বাণিজ্য করে থাকে।
প্রতিবছর তাদের বাণিজ্যে সফল করতে ভিন্ন ভিন্ন প্রন্থা অবলম্ভন করে। যেন কোন বছর বিকাশের মাধ্যমে লেনদেন করেন আবার কোন বছর দালালদের মাধ্যমে লেনদেন করেন। মধ্যস্থকারীদের কাজ হলো জেলা ট্রাস্কফোর্স অভিযান কোন কোন সময় হবে সেই খবর আদান প্রদান করা। এতে জেলা নৌকা প্রতি প্রতিদিন হাজার টাকা পর্যন্ত কন্ট্রাক্ট করেছে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০-এর অধীনে প্রণীত প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫ অনুযায়ী মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত ও বিপণন নিষিদ্ধ। সরকারের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করা হলে কমপক্ষে এক থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।




