শাহমাহমুদপুরে ক্ষমতার জোরে সরকারি গাছ কর্তন!

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর সদরের বড় শাহতলীতে সরকারি রাস্তার পাশে থাকা কয়েকটি গাছ ক্ষমতার জোরে কর্তন করার অভিযোগ উঠেছে।

গত রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের খন্দকার বাড়ির দক্ষিণে পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদের সামনের রাস্তার পাশ থেকে এই গাছ কাটা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই সকল গাছ কাটার সাথে জড়িত হলেন ভড়ঙ্গাচর গ্রামের বেপারী বাড়ির মোঃ ছলেমান বেপারীর বড় ছেলে মোঃ মালেক হোসেন মুন্না (৪৫)।

গতকাল সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের হযরত শাহ মাহমুদ বাগদাদি (রাঃ) এর মাজার গেট থেকে দেড়শ গজ দক্ষিণে পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদের একটি ভবনের পাশেই নতুন তৈরি হয় একটি পাকা রাস্তা। আর এই পাকা রাস্তার পাশে থাকা কয়েকটি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এমনকি গাছের চিহ্ন যেন না বুঝা যায় সেজন্য গাছের গোড়ায় লেপে দেয়া হয়েছে মাটি দিয়ে। এবং তার উপরে তৈরি করা হয়েছে ঝোপঝাড়। স্থানীয় সরকারের কোন ধরনের নিয়ম-নীতি না মেনেই কাটা হয়েছে এ সকল গাছ। এলাকাবাসী বলছেন পেশী শক্তি ব্যবহার করেই এমনটা করা হয়েছে। এর আগে গত ১৪ এপ্রিল রোববার সকালে বড় শাহতলী পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সরকারি রাস্তার পাশে থাকা সরকারি ৮-১০ টি গাছ কর্তন করে নিয়ে যায় ভড়ঙ্গাচর গ্রামের বেপারী বাড়ির মোঃ ছলেমান বেপারীর বড় ছেলে মোঃ মালেক হোসেন মুন্না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, মোঃ মালেক হোসেন মুন্না রাজনীতির ক্ষমতা ও পেশি শক্তির বলে এই গাছগুলো কেটে ফেলেছে। যতটুকু শুনেছি তিনি নাকি এই জায়গা কিনবেন তাই গাছগুলো নিজের বলে দাবি করে কেটে ফেলেছেন। সরকারি রাস্তার পাশে গাছগুলো যদি এভাবে কেটে ফেলা হয় তাহলে জীববৈচিত্র্যের উপরে প্রভাবসহ পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে থাকবে। এই বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান সহ প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হওয়া উচিত।

গাছ কাটার সাথে জড়িত মোঃ মালেক হোসেন মুন্না বলেন, রাস্তার পাশে এই জমিটি মাহফুজ খন্দকারের পৈত্রিক সম্পত্তি। তিনি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন জমিতে থাকা গাছগুলি কাটার জন্য। এ বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন। রাস্তার পাশে থাকা গাছগুলোর কাঁটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে ছোট ছোট কয়েকটি গাছ ছিল তাই কেটে ফেলেছি। পাশের পুকুরে মাছ চাষে সুবিধা হয় তাই। আমার আগেও কয়েকজন এখান থেকে কয়েকটি গাছ কেটে ফেলেছে।

এই বিষয়ে জমির মালিক দাবিদার মাহফুজ খন্দকার বলেন, আমি মালেককে আমার জমির গাছগুলো কাটার জন্য বলেছি। রাস্তার পাশের গাছগুলোর বিষয়ে চেয়ারম্যানকে কয়েকবার বলেছি কাটার জন্য। কিন্তু তিনি আমার কথা না শোনার কারণে আমি এ গাছগুলো কাটতে বলেছি।

গাছ কাটার বিষয়ে শাহমামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাসুদুর রহমান নান্টু জানান, সরকারি রাস্তার পাশের গাছ কাটার বিষয়ে আমি অনুমতি দেওয়ার কেউ না। গাছগুলো কাটার বিষয়টি যখনই শুনেছি তখনই গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে আমার ইউপি সচিব গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছে। গ্রাম পুলিশ তাদেরকে বলে দিয়েছে গাছগুলি না কাটার জন্য। এরপর তারা যদি গাছ কেটে থাকে তাহলে অবশ্যই নিজেদের ইচ্ছেমতোই গাছগুলি কেটেছে। আমাদের ইচ্ছেমতো হলে তো একটি গাছও তারা কাটতো না।

সম্পর্কিত খবর