স্টাফ রিপোর্টার:চাঁদপুরের আশিকাটি এলাকার হোসেনপুর আলিম মাদ্রাসা থেকে সকল শিক্ষার্থীকে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছেন ওই এলাকার ফয়সালের নেতৃত্বে একটি চক্র।
মঙলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের হোসেনপুর আলিম মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় আসে। এ সময় এসেম্বলি করার সময় হঠাৎ করে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে আঃখালেক পাটেয়ারীর পুত্র ফয়সালের নেতৃত্বে মনির প্রধানীয়া, আলমগীর পাটওয়ারী ও ইউছুফ পাটওয়ারীসহ একদল যুবক মাদ্রাসায় প্রবেশ করে শিক্ষকের কাছ থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে এসেম্বলি বন্ধ করে দিয়ে সকল শিক্ষার্থীদেরকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়।
সংবাদ পেয়ে সরোজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২৭ ডিসেম্বর রাতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের রুমের জানালার গ্রীল কেটে রুমে প্রবেশ করে আলমিরাতে থাকা ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা চোর চক্ররা চুরি করে নিয়ে যায়। সে সময় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নিজাম উদ্দিন ঢাকায় তার প্রতিষ্ঠানিক কাজে ছিলেন। বিষয়টি তিনি পরবর্তীতে নৈশ প্রহরীর মাধ্যমে জানতে পেরে বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে অবহিত করেন, তার নির্দেশে পরবর্তীতে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। একটি পক্ষ বিষয়টিকে ঘোলাটে করতে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার পাঁয়তারা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় তারা মঙ্গলবারে প্রতিষ্ঠানে এসে শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়।
এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, এ ঘটনায় বেশ কিছু শিক্ষকের ইন্ধন রয়েছে। তারাই এলাকার উশৃঙ্খল যুবকদের দিয়ে এ ঘটনা ঘটাচ্ছে।
বিষয়টি জানতে পেরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোস্তাফিজুর রহমান তাৎক্ষনিক ওই প্রতিষ্ঠানে ছুটে যান এবং শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক করেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মাওলানা নিজাম উদ্দিন এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ২৭ ডিসেম্বর রাতে আমাদের প্রতিষ্ঠানে একটি চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাটি নিয়ে আমাদের সভাপতির নির্দেশে কমিটির লোকজন বৈঠক করেছেন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদেরকে অবগত করেন। তারাই পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। কে বা কাহারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তা আমরা অবগত নই। কিন্তু এলাকার উশৃঙ্খল কিছু যুবক বিষয়টি ঘোলাটে করতে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার জন্য গায়ের জোড়ে সকল শিক্ষার্থীদেরকে মঙ্গলবার সকালে ক্লাশ করতে না দিয়ে মাদ্রসা থেকে বের করে দেয়। আমি উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। তারাই তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার সভাপতি ও চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ানের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আমি এ প্রতিষ্ঠানে চুরির বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা বিষয়টি চাঁদপুর মডেল থানার মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো। কিন্তু এলাকার উশৃঙ্খল যুবকরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোন এখতিয়ার রাখেনা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার তারা কে? আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাদ্রাসা বন্ধের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজন বিরাজ করছে বলে সরোজমিনে দেখা যায়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল দ্রুত এর একটি সঠিক সমাধান সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের কাছে আশা করছেন।