নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনপূর্বক পুন: নির্বাচনের দাবী জানিয়েছেন চাঁদপুর-৩ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া গত ৭ জানুয়ারী রোববার সন্ধ্যা ৭টায় প্রার্থী নির্বাচনী অফিসে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রার্থী নিজে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া বলেন, তিনি নির্বাচন প্রত্যাখান ও পুঃন নির্বাচনের দাবী জানিয়ে দুপুর সোয়া ৩টায় চাঁদপুর জেলা রিটানিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিতভাবে জানান।
তিনি আরও বলেন, ভোট গ্রহন শুরুর পর থেকে সকাল দুপুর ১টা পর্যন্ত ১২ থেকে ১৫ পারসেন্ট ভোট পড়েছে। এরপর দুপুর ১টার পর থেকে একশ্রেণির ভোট ডাকাতের দল ভোট ডাকাতি শুরু করে। আমি এ বিষয়টি রিটানিং কর্মকর্তাকে বেশ কয়েকবার ফোন করে জানাই, ওনি এ বিষয়ে কোন কর্ণপাত না করায় শেষ পর্যন্ত ভোট চলাকালীন সময়ে দুপুর সোয়া ৩টায় লিখিতভাবে ভোট বর্জন ও পুননির্বাচনের আবেদন করি। এ ভোট ডাকাতির পিছনে প্রায় প্রত্যেক কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন। আমরা যে আশংকা করেছিলাম সেই আশংকাই বাস্তবে রুপ নিয়েছে। আসলে কোন ভোট হয়নি, ভোট ডাকাতি হয়েছে। এ ডাকাত দল প্রত্যেকটি কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে দুপুর ১টার পর থেকে তথাকতিত কর্মীর নামে ভোট ডাকাতি করে।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের কর্মকান্ডের প্রসঙ্গে প্রার্থি বলেন, আমরা ভোট কারচুপির বিষয়টি আচ করতে পেরেই রিটানিং কর্মকর্তাকে বলেছি, যারা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হচ্ছে তাদের নিয়ে হাসান আলী সরকারি উচ্চ স্কুল সভা করেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ৬ তারিখ রাতে সকল কলেজের শিক্ষক যারা প্রিজাইডিং বা সহকারি প্রিজাইডিং হবে তাদের নিয়ে সভা করেন ও ভোট কারচুপির বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন।
এ বিষয়গুলো আমি লিখিতভাবে আমি রিটানিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি যে, প্রিজাইডিং কর্মকর্তরা প্রভাতি। এছাড়াও সদর ইউএনও এবং ওসিকে পরিবর্তন করার বিষয়ে জানিয়েছি, কিন্তু রিটানিং কর্মকর্তা কোন বিষয়ে ব্যবস্থা নেননি। এছাড়াও হাইমচরের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটের আগের দিন রাতে নির্বাচনী সরঞ্চাম বিশেষ করে ব্যালট পেপার পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নাম উল্লেখ করে বলেন, রামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন পাটওয়ারী, তরপুরচন্ডি ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল গাজী, বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামীম খান, লক্ষীপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান, হাইচরের আতিক পাটওয়ারী, স্ব স্ব ইউনিয়নে নৌকার পক্ষে থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর, ব্যানার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলেছে তা আমরা রিটানিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কিন্তু রিটানিং কর্মকর্তা কোন ব্যবস্থা নেয়নি, আর ব্যবস্থা না নেওয়র কারনে আজকে চাঁদপুরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে ফরিদগঞ্জে ৫টি কেন্দ্রে বিষয়ে আমি রিটানিং কর্মকর্তাকে জানাই। বিশেষ করে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৫নং গুপ্টি ইউনিয়নের আব্দুল গফুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, ৪নং ইউনিয়নের সেতলবাগ প্রাথমিক বিদ্যালয় একই ইউনিয়নের তাম্রশাসন কেন্দ্র ও বালিথুবা উচ্চ বিদ্যালয় এ কেন্দ্রগুলোর বিষয়ে আমি রিটানিং কর্মকর্তাকে কেন্দ্র বাতিল করার জন্য জানাই। কিন্তু রিটানিং কর্মকর্তা সাময়িকভাবে ভোট গ্রহন বন্ধ রেখে পরবর্তীতে ১ থেকে দেড় ঘন্টার একটি নিদিষ্ট সময় দিয়ে এসকল কেন্দ্রে আবার ভোট গ্রহন শুরু করে। ভোট বন্ধের পর আবার পুনরায় ভোট শুরু হলে তারা ভোট সিলিং শুরু করে। এ কোন নির্বাচন হয়নি এটা জাস্ট প্রশাসনের সাথে আতাত করে একটি দেখানো প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমনের পরিচালনায় প্রার্থির প্রথান নির্বাচনী এজেন্ট ও জেলা আওয়ামী লীগের-সহ সভাপতি ইঞ্জি. আব্দুর রব ভূঁইয়া, যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট জহিরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক শাহআলম মিয়া, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নুরুল ইসলাম মিয়াজীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে গতকাল ৮ জানুয়ারী সোমবার ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয় চাঁদপুর-৩ আসনের যেকটি কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতির করার সুযোগ পায়নি সেসব কেন্দ্রে ঈগল প্রতীক বেশী ভোট পেয়েছে। এরমধ্যে আমিরাবাদ জি. কে. উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঈগল প্রতীক পেয়েছে ১৮৪ ভোট ও নৌকা প্রতীক ১৭০ ভোট। ভোট পড়েছে সারে ১৮ শতাংশ। ১২৫ নং দক্ষিণ আশিকাটি শহীদ মো. খার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ঈগল প্রতীক ৪২০ ভোট ও নৌকা প্রতীক ২৫৮ ভোট পায়।