কচুয়ায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও মসজিদের ‘ইমাম’

ইসমাইল হোসেন বিপ্লব,কচুয়া : কচুয়া উপজেলার গোহট উত্তর ইউনিয়নের বুরগী ও পালগিরি গ্রামের মানুষে সঙ্গে প্রতারণা করে ৪মাসে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছে মসজিদের ইমাম মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তিনি বুরগী গ্রামের উত্তরপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব। গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে লাপাত্তা রয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বুরগী উত্তরপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বিক্ষোভ করেন। দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করে টাকা আদায়ের দাবি জানিয়েছেন তারা।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী প্রতারক ইমাম মিজানুর রহমান ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী ৩১২ এর ইসমাইল হোসেন মজুমদারের ছেলে। তার জম্মস্থান ঠিকানা কুমিল্লা লাকসাম উপজেলার পরানপুর গ্রাম।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, এলাকার বেশকিছু লোকের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে গত ৪ মাস পূর্বে বুরগী উত্তর পাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় মিজানুর রহমানকে। তিনি এ মসজিদের ইমাম পদে যোগদান করার আগে পাশ^াবর্তী পালগিরি গ্রামের জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন। ওইখানে ইমাম মিজানুর রহমান মুসল্লির কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। বুরগী উত্তরপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুসল্লিদের কাছ থেকে বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে অভিনয় কাঁদায় ও বিভিন্ন অজুহাতের কথা বলে ৪ মাসে প্রায় ৫০ লাখ হাতিয়ে নিয়েছেন ।

ধার নিয়েছেন মসজিদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ক্যাশিয়ার সহ মসজিদ কমিটি অন্যান্য লোকজনের কাছ থেকে। এসব টাকা ফেরত চাইলে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে তাকে আর খুঁেজ পাওয়া যায়নি।

বিক্ষোভ মিছিলে ভুক্তভোগীরা জানান, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ মাস্টার কাছ থেকে ৭ লক্ষ,সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার, মসজিদের মুসল্লি আল আমিনের ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, সাদ্দাম হোসেনের কাছ থেকে ৩লক্ষ ৫০হাজার টাকা, ইয়াছিনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা, রফিকুল ইসলাম কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা, নাছির পাটোয়ারী কাছ থেকে ২ লক্ষ,টাকা,বাবুল হোসেন ১ লক্ষ টাকা, আবুল খায়ের বিএসসি’র ১ লক্ষ টাকা, শাহজাহানের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকাসহ মসজিদের একাধিক মুসল্লিদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় ইমাম মিজানুর রহমান।

মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল বলেন, গত ৪ মাস পূর্বে আমাদের মসজিদে মিজানুর রহমানকে এলাকার কিছু পরিচিত মানুষের আত্মীয় সুবাদে ইমাম পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি এ এলাকার মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে গোপনে ধার নিতে থাকেন। ১০ সেপ্টম্বর কাউকে কিছু না বলে মুসিল্লদের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যান। ইমাম ও তার স্ত্রীর ব্যবহারিত মোবাইল ফোন বন্ধ। আমরা মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তার সন্ধান ও টাকা উদ্ধারের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এব্যাপারে ইমাম মো.মিজানুর রহমানের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় ও তার বাড়িতে গিয়ে বক্তব্য নিতে গেলে তাকে ও তার পরিবারকে না পাওয়া তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত খবর