ফরিদগঞ্জে টিসিবির কার্ড বিতরণে ইউপি চেয়ারম্যানের নয়-ছয় করার অভিযোগ

মামুন হোসাইনঃ রাষ্ট্র প্রধানগণ দিনরাত পরিশ্রম করে জনগণের কল্যাণে কাজ করলেও, কিছুসংখ্যক অসাধু লোকের জন্য সেই কাজ ভেস্তে যাচ্ছে। এমনি এক বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্ম দিয়েছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩নং সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন।

চেয়ারম্যানের এমন স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের মানুষ গুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। জনরোষের শিকার হয়েছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যরা। মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

সরেজমিনে জানা যায়, প্রতি মাসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) ওই ইউনিয়নের নিম্ন আয়ের তালিকা ভুক্ত মানুষদের মাঝে টিসিবি পণ্য বিক্রয়ের তারিখ ধার্য করা হয়। ওই ইউনিয়নে ১১৭৫ জন গ্রাহকের মাঝে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করেছেন।

প্রতিজন ইউপি সদস্য নির্বাচিত এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ১২০টি টিসিবি কার্ড পেয়ে থাকেন। পণ্য বিক্রয়ের আগেরদিন স্ব-স্ব ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের মাঝে টিসিবি কার্ড চেয়ারম্যানের দায়িত্বে পোঁছে দেওয়া হয়।

কিন্তু এ মাসের টিসিবির কার্ড চেয়ারম্যানের কাছের কয়েকজন ইউপি সদস্যকে দেয়া হলেও আগের তুলনায় দিয়েছেন কম। দুই ওয়ার্ডের দুইজন ইউপি সদস্যকে একটি কার্ডও দেয়া হয়নি। এতে তালিকাভুক্ত টিসিবির গ্রাহকেরা কার্ড না পেয়ে ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের বকাঝকা করেন। এদিকে পূর্বের গ্রাহক অনেকে কার্ড না পেয়ে পরিষদে এসে চিৎকার চেঁচামেচি করতেও দেখা যায়।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন টিসিবি কার্ডের গ্রাহক বলেন, তারা আগে কার্ড পেত, টিসিবির পণ্য ক্রয় করে কিছুটা হলেও তাদের পারিবারিক খরচের সহায়ক হতো। কিন্তু এ মাসে তাদের কার্ড দেয়া হয়নি। এতে ক্ষোভের পাশাপাশি তারা হতাশ হয়েছেন।
ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন দুলাল বলেন, আগে ১১০টি কার্ড পেতাম, তা তালিকানুযায়ী নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দিতাম। কিন্তু এ মাসে আমাকে একটি কার্ডও দেয়া হয়নি, তাই আমি কাউকে কার্ড দিতে পারিনি। এতে সাধারণ মানুষজন আমার বাড়িতে এসে আমাকে বকাঝকা করেছে। আমি তিন বারের জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এ বয়সে আমি জনরোষের শিকার হতে হয়েছে।

ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান বলেন, আমি আগে ১১৫টি টিসিবি কার্ড পেলেও এ মাসে আমাকে একটি কার্ডও দেয়া হয়নি। টিসিবির কার্ড নিয়ে পরিষদে নয়ছয় চলছে। এতে আমাকেও জনরোষের শিকার হতে হয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমি টিসিবির কার্ড বিতরণ করেছি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌলি মন্ডল বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না, খোঁজখবর নিয়ে অনিয়ম হলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

 

সম্পর্কিত খবর