শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে চাঁদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর

সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী: শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি অধিদপ্তর। এটি সরকারের শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন, অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং শিক্ষাখাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত। স্বাধীনতা যুদ্ধোত্তর যুদ্ধ বিধস্ত বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুন:নির্মাণ ও মেরামতের লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে একটি প্রকৌশল ইউনিট গঠনের মাধ্যমে আজকের এই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সৃষ্টি করেন।

স্বাধীনতার পর থেকেই বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে দেশের প্রতিটি মানুষকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে কাজ শুরু করেন। এ লক্ষ্য অর্জনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাবপত্র সরবরাহ করার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। চাঁদপুরসহ সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এ অধিদপ্তরের নিবেদিত প্রকৌশলী ও কমকর্তা-কর্মচারিরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নত অবকাঠামো তৈরি করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। রূপকল্প ২০২১ এর আওতায় ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যুগোপযোগি ও মানসম্মত শিক্ষার প্রসারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি সুবিধাসহ ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে। সবার জন্য মানসম্মত ও যুগোপযোগী শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ এবং মিশন সুশিক্ষিত, দক্ষ ও উন্নত নৈতিকতা সম্পন্ন মানব সম্পদ সৃষ্টি করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রকৌশলী,

কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা, ডিজাইনিং, পরিবীক্ষণ ও উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র সরবরাহ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম শরীফ ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানের পর থেকে ভিন্ন আঙ্গিকে চাঁদপুরকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ অব্যাহত রেখে এ বিভাগের কাজের গুণগত মান সঠিক রাখার স্বার্থে কাজ করছেন।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, চাঁদপুর এর নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম শরীফ বলেন, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ও শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভৌতিক অবকাঠামো উন্নয়ন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দক্ষ নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং শিক্ষাখাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সারাদেশে উন্নয়ন কাজ রেকর্ড গড়েছে। কারণ অতীতে অন্য কোনো সরকারের আমলে এত বেশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ এসব অবকাঠামো নির্মাণে ও দৃষ্টিনন্দন করতে কাজ করছে। এসব ভবন নির্মাণে এলাকার পরিবেশ, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করে ভবনের নকশা প্রণয়ন করা, ভবনে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা টয়লেট, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য র‍্যাম্প এবং টানা বারান্দা, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা, ঢালু ছাদ এবং ছাদে লাল টালি স্থাপনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এসব ভবনে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজ সমূহের মেরামত, সংস্কার ও শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্র নির্মাণ করছে সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ।

নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নেরর ফলে জেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বৈপ্লিবিক পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে। ভবনগুলো লেখাপড়ার মানোন্নয়নে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। শিক্ষার্থীদের সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা নতুন ও উন্নত পরিবেশে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকরা পাঠদানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেমন সক্ষমতা অর্জন করেছে তেমনি শিক্ষা ব্যবস্থায় এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এ অর্জনে সরকারের সাথে সম্পৃক্ত থেকে শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিটি কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিরলসভাবে দেশগঠনে ভূমিকা রেখে চলছে।

এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন মজুমদার স্যারের ঐকান্তিক চেষ্টা ও আন্তরিকতায় সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরের শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।

সম্পর্কিত খবর