স্টাফ রিপোটার: চাঁদপুরে সুপারী গাছ লাগানোকে কেন্দ্র করে সম্পতাত্তিগত বিরোধের জের ধরে হামলায় উভয় পক্ষের নারী-পুরুষ সহ ৯ জন আহত হয়েছে। ১৬ জুলাই মঙ্গলবার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪ নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডস্থ মান্দারি গ্রামের গাজী বাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহতরা হলেন, ওই বাড়ির মৃত আঃ রশিদ গাজীর স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৬০), তার ছেলে ফারুক গাজী (৪৫), আরিফ হোসেন গাজী(৩০), কাউসার গাজী (২৫), প্রতিবন্ধী রিয়াদ গাজী (২০) ফারুক গাজীর মেয়ে ফারজানা আক্তার (১৫)।
এছাড়া তাদের প্রতিপক্ষের আহতরা হলেন, মৃত ফয়েজ বকসের ছেলে খালেক গাজী (৭০) তার স্ত্রী হাসিনা বেগম (৬০) ছেলে আশরাফ গাজী (২৫)। তার সাধারণ চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যান।
এদের মধ্যে গুরুতর বৃদ্ধা মরিয়ম বেগম ও তার ছেলেরা গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গুরুতর আহত মৃত আঃ রশিদ গাজীর পরিবারের অভিযোগ গত এক দেড় বছর পূর্ব থেকে তাদের বাড়ির পেত্রিক ১৫ শতাংশ জমি নিয়ে প্রতিপক্ষ খালেক গাজীদের সাথে একটি বিরোধ চলে আসছে। খালেক গাজীর পরিবারের লোকজন তাদের সেই সম্পত্তি নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। এ বিষয় নিয়ে গত এক দেড় মাস পূর্বে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে আমিন দিয়ে জমির সীমানা নির্ধারণ করে তাদের সেই বিরোধ মীমাংসা করা হয়। তারা জানান, ঘটনার আগের দিন খালেক গাজী তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে তাদের সেই পৈত্রিক জমিতে জোরপূর্বক সুপারি গাছ রোপন করেন। এতে তারা ডাক দেওয়ায় দিয়ে বাধা দিলে খালেক গাজীর মেয়ের জামাই কানা মামুনের ইন্দনে খালেক গাজীর পরিবারের লোকজন ফারুক গাজীকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধরক মারধর করেন। পরে বিষয়টি এলাকার লোকজন তাদেরকে শান্ত করে দেন।
আহতদের অভিযোগ সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটনার পরের দিন মঙ্গলাবার সকালে বৃদ্ধা মরিয়ম বেগম রাস্তা দিয়ে হেটে পুকুরে যাওয়ার সময় তাকে একা পেয়ে খালেক গাজী তার ছেলে আশরাফ গাজী ও হোসেন গাজী, খালেকের স্ত্রী হাসিনা বেগম, মেয়ে হিরা বেগম ও মনোয়ারা বেগম তার সাথে কথা কাটাকাটি তার ওপর হামলা চালায়। এসময় তারা তাদের মা মরিয়ম বেগমকে বাঁচাতে গেলে উল্লেখিতরা বাঁশের লাঠি, রড, ছেনা এবং রিক্সার প্যাডেলের চেইনের কাটা দিয়ে বৃদ্ধা মরিয়ম বেগম ও তার ছেলেদের ওপর এলোপাতারি ভাবে হামলা চালায়। এতে মরিয়ম বেগমের হাতে রক্তাক্ত জখম হয়ে গুরুতর আহত হয়ে পড়েন। এসময় হামলাকারী খালেক গাজীর পরিবারের হাত থেকে রেহাইপাইনি শারীরিক প্রতিবন্ধী রিয়াদ গাজী।
পরে ৯৯৯ কল দিলে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত মরিয়ম বেগম ও তার ছেলেদের উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। একই সাথে ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারী খালেক গাজীর বসতঘর থেকে রড ও ধারালো অস্ত্র রিক্সার প্যাডেলের চেইনের কাটা উদ্ধার করেন চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ।
এসময় নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশিরা অভিযোগ করে বলেন খালেক গাজী ও তার ছেলেরা পেশীশক্তি দিয়ে অসহায় মৃতঃ রশিদ গাজীর পরিবারের উপর অমানসিক অত্যাচার করেন। প্রতিবেশিরা তাদের অত্যচারের বিরুদ্ধে কথা বললে তারা গালমন্দ করে অসভ আচরন করে। খালেক গাজী জোরপূর্বক ভাবে রশিদ গাজীর সম্পত্তি দখল করে ভোগ দখল করে আসছে। আমরা অত্যাচারী খালেক গাজীর সুষ্ঠ বিচার চাই।
এদিকে খালেক গাজীদের অভিযোগ তারা তাদের সম্পত্তিতে সোমবার দিন কয়েকটি সুপারি গাছের চারা রোপন করেছেন। আর সেগুলো মৃত আঃ রশিদ গাজীর পরিবারের লোকজন উঠিয়ে ফেলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি হলে, রশিদ গাজীর ছেলে ফারুক গাজী, আরিফ হোসেন গাজী, কাউসার গাজী সহ তারা তাদেরকে মারধর করে গুরুতর ভাবে আহত করেন। তাদের হামলায় তার ছেলে মেয়েরাও রক্তাক্ত জখম হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ তাদের। তবে তাদের প্রতিপক্ষকে তারা কোনো হামলা বা মারধর করেননি বলে জানান অভিযুক্তরা।
