চাঁদপুরে বড়ষ্টেশন এলাকায় অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

শওকত আলী : চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে রেলওয়ের মালিকানাধীন সম্পত্তিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে চট্রগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ের ভু-সম্পত্তি বিভাগের কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া রেলওয়ে থেকে লীজ প্রাপ্ত-৩৮শ’স্কিয়ার ফুট রেলওয়ে সম্পত্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে সে জায়গা লীজার মো: আবু ছায়িদকে বুঝিয়ে দিয়েছেন চট্রগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) দীপঙ্কর তঞ্চঙ্গ্যা।

মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে ও বিকেলে চাঁদপুর শহরের বড়স্টেশন এলাকায় রেলওয়ের জায়গায় গড়ে উঠা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে।

চাঁদপুর বড়স্টেশন এলাকায় ৩৮শ’স্কিয়ার ফুট রেলওয়ে সম্পত্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে সে জায়গা লীজারকে বুঝিয়ে দেওয়ায় রেলওয়ে ১২ লাখ টাকা রাজস্ব পেয়েছে বলে চট্রগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) দীপঙ্কর তঞ্চঙ্গ্যা জানিয়েছেন।

পূর্ব নির্ধারিত উচ্ছেদ কর্মসূচির আলোকে চাঁদপুরে চট্রগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা কালে চাঁদপুর-লাকসম রেলপথের শহরের বড় ষ্টেশন এলাকার ও রেলওয়ে রেষ্ট হাউজ এলাকায় গড়ে উঠা প্রায় ৩০টির মত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। এতে করে উচ্ছেদকৃত স্থানের ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা বেকার হয়ে পড়লো।

রেলওয়ের চাঁদপুর ষ্টেশন এলাকার সম্পত্তিতে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের ২ পাশে দীর্ঘ বছর ধরে এ ভাবে অবৈধ ভাবে হাজার-হাজার ছোট-বড় এ সব অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠে।

সরোজমিনে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের চাঁদপুর স্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,চাঁদপুর রেলওয়ের সম্পত্তি উপর দখল করে দীর্ঘ বছর যাবত প্রায় ৫শতাধিক বিভিন্ন প্রকার অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পাকা, সেমিপাকা ও টিনসেট অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
এ সব ব্যবসায়ীরা রেলওয়ে থেকে কোন প্রকার অনুমতি বা লিজ নেননি। এতে করে সরকার লাখ-লাখ টাকার রাজস্ব পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। বিগত বহু বছর যাবত অবৈধ ব্যবসায়ী ও স্থাপনা নির্মানকারীদেরকে রেলওয়ে থেকে লাইসেন্স নেওয়ার জন্য বলা হলেও তারা লাইসেন্স গ্রহন করে সরকারকে রাজস্ব দেয়নি।

রেলওয়ে ভু-সম্পত্তি বিভাগ জানান,যার ফলে রেলওয়ে থেকে গত ২২মে ২০২৪ তারিখে এ অবৈধ ভাবে ব্যবসা করা ব্যবসায়ী ও স্থাপনাকারীদের বরাবর নোটিশ করে ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা বলেন, উচ্ছেদ অভিযান আমাদের পূর্বের কর্মসূচি। আগামীতে পূর্নরায় সময় নির্ধারন করে এই অভিযান পরিচালনা করা হবে। যেখানে অবৈধ স্থাপনা সেখানে চলবে উচ্ছেদ। আজকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমরা চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় প্রায় ৩০টির মত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করেছি। এ ছাড়া ব্যাক্তি মালিকানায় লীজকৃত ৩৮শ’ স্কিয়ার ফুট সম্পত্তি অভৈধভাবে দখলদার থেকে উচ্ছেদ করে লীজারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে লাকসামের দায়িত্বে থাকা কানুনগো মো. ইকবাল এর নেতৃত্বে শ্রমিকরা উচ্ছেদ অভিযান করেন। এ সময় চাঁদপুর স্টেশনের দক্ষিণে ভিআইপি ঘাট সংলগ্ন প্রায় ২০টি দোকান উচ্ছেদ চালানো হয়। এর পূর্বে স্টেশন এলাকার বিভিন্ন অংশে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করা হলেও দখলে থাকা লোকদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়।

রেলওয়ে লাকসামের দায়িত্বে থাকা কানুনগো মো. ইকবাল জানান, ২৭ মে থেকে উচ্ছেদ অভিযানের কর্মসূচি ঠিক হয়। কিন্তু ঘুর্ণিঝড় রিমালের কারণে সোমবার উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। আজকে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হলো। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এদিকে উচ্ছেদ কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের জন্য সকালে চাঁদপুরে আসনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) দীপঙ্কর তঞ্চঙ্গ্যা। উচ্ছেদ অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকাল থেকে পূর্ব সতর্কতা হিসেবে চাঁদপুর শহরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ এলাকায় মাইকিং করেছে। যাতে করে অবৈধ দখলে থাকা লোকজন তাদের স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নেয়।

অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. শহীদুজ্জামান, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের,কাননগ্ েলাকসাম মো: ইকবাল মাহমুদ,অফিসার ইনচার্জ আর.এন.বি.লাকসাম মো:সালামত উল্লাহ, উর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী এসএসএই (কার্য) লাকসাম , অফিসার ইনচার্জ চাঁদপুর রেলওয়ে থানা মো: মাসুদ আলম ও আমিন লাকসাম মো: জাকির হোসেনসহ রেলওয়ের অন্যান্যকর্মকর্তারা ও কর্মচারীরা।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন, রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরাদ উল্যাহ বাহার, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ইনচার্জ মো. খোরশেদ আলমসহ চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ কর্মকর্তা মো: শাহজাহান এবং সদস্যবৃন্দ।

সম্পর্কিত খবর