শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী ওমর ফারুক দুই মামলার আসামী

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ওমর ফারুক এর বিরুদ্ধে ঠিকাদারী কাজে অংশীদারীর নামে প্রতারণাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর তদন্তে মামলার সত্যতা পাওয়াগেছে। আদালত সমন জারির করার পরও এই ব্যাক্তি হাজির হননি বলে অভিযোগ রয়েছে। মামলার তথ্য হলফনামায় গোপন রেখে তিনি বর্তমানে নির্বাচনী গণসংযোগ করছেন।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মো. ওমর ফারুক। তার ডাক নাম রুমি। তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারী কাজে অংশীদারীর নামে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার দুটি মামলা রয়েছে। এই দুটি মামলার বাদী হলেন বিয়ন্ত মিডিয়া লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইবনে হাসান খান। তিনি ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ঢাকা চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিআর ৭৮৯/২০২২ এবং সিআর ২৪২১/২০২২ নম্বরে দুটি মামলা করেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ার গাজীখালি নদীর ১৫ কিলোমিটার খাল খননের কাজে অংশীদারীর নামে ওমর ফারুক ২০২০ সালে বিয়ন্ত মিডিয়া লিমিটেড এর কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে মোট সাড়ে ৩ কোটি টাকা নেন। পরে সেই কাজটি শেষ না হলেও সেই টাকা ফেরৎ দেননি ওমর ফারুক। টাকা পরিশোধের এক পর্যায়ে বিয়ন্ত মিডিয়াকে ২৫ লাখ টাকার দুটি চেক দেন তিনি। কিন্তু ব্যাংকে তার তহবিল অপ্রতুল দেখিয়ে চেক ফেরতদেন আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার বলেন, আসামী ওমর ফরুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে তিনি অগ্রীম টাকা নিয়েছিলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। অগ্রীম টাকা নিয়ে কিছু কাজও করেছেন। পরে বাকী কাজ আর করেননি। পিবিআই তদন্তে স্পষ্ট কথা বলা আছে, আসামী রুমি এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং আদালত পিবিআই তদন্ত গ্রহণ করেন। আসামী ওমর ফারুককে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণাসহ ঢাকার আদালতে একাধিক মামলার প্রমাণ রয়েছে। আগামী ধার্য তারিখে আসামী ওমর ফারুকের বিরুদ্ধ গ্রেফতারী পরোয়ান জারি করার জন্য আবদেন করা হবে। কারণ তিনি সমন এড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এই বিষয়ে মুঠোফোনে গণমাধ্যম থেকে জানতে চাইলে ওমর ফারুক মামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার সাথে বিয়ন্ত মিডিয়ার সাথে কোন লেনদেন নেই। আমি ব্যবসার করতে গিয়ে কতজন থেকেই টাকা নেই। ওই ব্যাক্তি কিভাবে কি করলো সেটাতো আমি জানিনা। আমাকে মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দিয়েছে কিনা সেটাও আমি জানিনা। আপনি যদি মনে করেন কোর্টে মামলা আছে, তাহলে কোর্ট দেখবে। ছোট বিষয় নিয়ে আমাকে কেন বার বার বলা হচ্ছে। অবশ্যই তথ্যবহুল বিষয় নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন।

এদিকে জানাগেছে, ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা ঢাকা চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারধীন রয়েছে। এর মধ্যে বিয়ন্ত মিডিয়া লিমিটেড এর একটি মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন পিবিআই। তবে তিনি তার নির্বাচনী হলফনামায় তার বিরুদ্ধে প্রতারণাসহ দুটি মামলা আছে বলে এমন তথ্য উল্লেখ করেননি।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা বশির আহমেদ বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে এই প্রার্থীর বিষয়ে মামলার বিষয় আমরা কাছে আসছে। যাচাই বাছাই সময়ে তার হলফনামায় মামলার কোন তথ্য ছিল না এবং থানা থেকেও আসেনি। সরকারি কোন নির্ভরযোগ্য সংস্থা অভিযোগ দেয়নি। এখন কেউ যদি তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া হবে।

সম্পর্কিত খবর