জায়গার অভাবে-তীব্র তাপদাহের প্রভাবে বিলুপ্তির পথে “চাঁদপুর নার্সারি”

মহসিন হোসাইন :  “গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই”। এই প্রতিপাদ্যে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে প্রত্যেকের উচিত একটি করে হলেও গাছ লাগানো। কিন্তু তা আমরা ক’জনে করছি। গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। আমরা অক্সিজেন পাই গাছ থেকে। কিন্তু তারপরও আমরা গাছ লাগনোর প্রতি তেমন আকৃষ্ট না। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিৎ একটি করে হলেও গাছ লাগানো।

বলছিলাম সব ধরনের গাছের কথাই। শুধু কেবল ফলের গাছ না। ফুল, ফল, ভেষজগুণ সম্পন্ন সব ধরনের গাছের কথাই বলছি। এই গরমে তীব্র তাপদাহের প্রভাবে ও জায়গার অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে “চাঁদপুর নার্সারি”।

চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ঘাট কোর্টের সামনেই অবস্থিত “চাঁদপুর নার্সারি” বাগানটি। মালিক স্বপনের দীর্ঘদিনের এই নার্সারিটি জায়গার অভাবে আর গরমে তীব্র তাপদাহের প্রভাবে বিলুপ্তির পথে প্রায় এখন।

যদিও একটা সময় অনেক ভালো গাছ গাছালিসহ বিভিন্ন ফুলের চারা গাছ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সমাহার ছিল স্বপনের এই “চাঁদপুর নার্সারি’তে। কিন্তু সম্প্রতি গত কয়েক মাস আগে থেকে চাঁদপুর- কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ শুরু হলেই দেখা দেয় সমস্যা।

নার্সারিটি মূলতঃ হাইওয়ে রাস্তার পাশে হ‌ওয়াতে তেমন বেশি জায়গা নিয়ে বেড়ে উঠতে পারেনি। যখনি চেষ্টা করছে একটু ছোটোখাটো পরিসরে এই নার্সারিটি’কে একটি মনোরম পরিবেশে তৈরি করবে, ঠিক তখনি কোনো না কোনোভাবে হারিয়ে যায় এর নিজস্ব সত্তা। স্থায়িত না পাওয়াতে নার্সারিটি’কে আর নিজস্ব রূপে সাজাতে পারেননি নার্সারি’র মালিক স্বপন মিয়া।

অতি দুঃখের সহিত তিনি সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিনের এই নার্সারিটি আর মনে হয় ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। কেননা, হাইওয়ে সড়কের কাজ শুরু হ‌ওয়াতে রাস্তা বড় করতে গিয়ে এখন কোথাও স্থায়ী ঠিকানা পাচ্ছে না এই “চাঁদপুর নার্সারিটি।

তীব্র তাপদাহে মরে গেছে তার অনেক গাছ। এরমধ্যে রয়েছে, বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চারা, ফলের গাছ। যেমন- নারকেল গাছের চারা, কুল গাছ, মরিচের চারাসহ অসংখ্য ফুলের চারা গাছ গুলো যেন নিমিষেই শুকিয়ে নিষ্পেষিত হয়ে গেছে। শুকিয়ে লাকড়িতে পরিনত হয়েছে বাগানটির সকল প্রকারের গাছগুলো।

একদিকে তীব্র তাপদাহের প্রভাবে মরে গেছে তার সব চারাগাছ গুলো অন্যদিকে জায়াগার অভাবে স্থায়ীভাবে রূপ দিতে পারছেন না নার্সারিটি’র। এতে করে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নার্সারির মালিক স্বপন। জায়গার অভাবে দিন দিন তার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এমন অবস্থায় “চাঁদপুর নার্সারি’র মালিক স্বপন তার ক্ষতিগ্রস্ত নার্সারি’র কথা উল্লেখ করে বলেন, জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যদি তার এই ক্ষতিগ্রস্ত নার্সারি’র প্রতি একটু সুদৃষ্টি দিতেন, তাহলে তার হয়তোবা কিছুটা হলেও লাঘব হতো। নিজে থেকে একা একা এই ক্ষতিগ্রস্ত কাটিয়ে উঠতে সম্ভব হচ্ছে না তার একার পক্ষে।

জুন-আগস্ট পর্যন্ত ফলের মৌসুম। ফলের মৌসুমেই সাধারণত বিক্রির পরিমাণ বেশি তাদের। তাই এই সময়ের মধ্যে যদি নার্সারিটি দাড় করানো যায়, তাহলে ভালো ফল গাছের আশা করা যায় এই নার্সারিটি থেকে। নার্সারিতে ফুল-ফল-বনজ ওষধি মিলে প্রায় ৫-৭হাজার চারাগাছ ছিল। কিন্তু এখন তা বিলুপ্তির পথে প্রায়। ১শ গাছের চারাও নেই এখন তার নার্সারি’র ভিতরে।

তিনি চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল সহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। যেন তারা এই বিষয়ে তার পাশে থেকে কিছুটা হলেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাহলে তিনি পূনরায় আবার নার্সারিটি একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে পারবেন বলে আশাবাদী।

 

সম্পর্কিত খবর