চাঁদপুরে ম্যাফের আয়োজনে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে সেবার মান উন্নয়নের দাবিতে গোলটেবিল বৈঠক

ইব্রাহিম খান :  চাঁদপুর জেলায় সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে সেবার মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষপে গ্রহণরে আহ্বান জানিয়েছেন মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ) ও নাগরকি সমাজের প্রতিনিধিরা।

সোমবার শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত ‘সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে সেবার মান উন্নয়নের দাবিতে গোল-টেবিল বৈঠক শীর্ষক এক অনুষ্ঠান থেকে এই আহ্বান জানানো হয়।

এত জেলা সিভিল সার্জন প্রতিনিধি, চাঁদপুর সদর হাসপাতালরে তত্বাবধায়ক, বিএমএ, ড্যাব, চাঁদপুর বেসরকারী হাসপাতাল এ্যাসোসয়িশেন প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, যুব সংগঠন প্রতিনিধি এবং আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

গোল-টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সদস্যদের সমন্বয় গঠিত এমএএফ।

মাল্টি-পার্টি এডভোকেসি ফোরামের (ম্যাফ) চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মুনির চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের বাচ্চু পাটওয়ারীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারী হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা.আশরাফ আহমেদ চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন,জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জহিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মাওলানা  জাকির হোসেন হিরু।

চাঁদপুর একটি প্রাচীন জেলা এর অন্তর্গত বিভিন্ন উপজেলা হতে প্রতিনিয়ত মানুষকে চাঁদপুর শহরে সেবা গ্রহণ করতে আসতে হয়। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো চিকিৎসা সেবা গ্রহণে মানুষকে প্রতিনিয়ত শহরের আসতে হচ্ছে। কিন্তু চাঁদপুর জেরা শহরে সরকারী হাসপাতালসহ সকল বেসরাকারী হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে জনগনের অসন্তুষ্টি মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ) কাছে দৃশ্যমান । এরই পরিপ্রেক্ষিতে জনভোগান্তি নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাঁদপুরের সংস্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে এই

ইউকেএইড -এর অর্থায়নে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশন্যাল পরিচালিত বাংলাদেশ স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল একাউন্টিবিলিটি ফর সিটিজেন এমপাওয়ারমেন্ট  (বিস্পেস) প্রকল্প এই উদ্যোগের সহায়তা করছে।

সভায় বক্তারা যে সকল সমস্যা তুল ধরেনঃ সরকারী হাসপাতালে বেড না পাওয়া, হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিয়মিত না থাকা, রোগিকে যে খাবার পরিবেশন করা হয় তা নিম্নমানের, হাসপাতালের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর ও নোংড়া, এক্সরে ও আল্ট্রাসনো মেশিন কাজ করেনা। পাশাপাশি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ও টেষ্ট মানম্মত নয় কিন্তু ব্যয় বেশি। সামগ্রিকভাবে মানুষকে এই খাতে চরম ভোগান্তি ও প্রতারনার শিকার হতে হয়।

এরই প্রেক্ষিতে কিছু সুপারিশ ও বক্তারা তুলে ধরেনঃ ১. হাসপাতালের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে ব্যবস্থাপনা কমিটির কাজকে দৃশ্যমান করা এবং যাতে প্রশাসনিক সেবা ও স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা সেবা ২ টি ভিন্ন কাঠামো প্রতিষ্ঠা পায়;

২. সরকারী হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর মাধ্যমে রোগী দেখার জন্য ২ টি শিফট চালু রাখা, ৩. রোগির ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ঔষধ ও টেষ্ট হাসপাতালে যাতে করা যায় তা নিশ্চিত করা। ৪. রোগির জন্য বরাদ্দকৃত খাবার ও অন্যান্য সুবিধাদি সঠিকভাবে প্রদান করা, ৫. হাসপাতালে নুন্যমত ১০টি আইসিইউ বেড স্থাপন করা, ৬. বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিক এ সরকার ঘোষিত সনদ টাঙানো ও একজন তথ্য কর্মকর্তার নিয়োগ ও সেবা প্রদান নিশ্চিত করা, ৭. নিয়মতিভাবে বেসরকারী হাসপাতালে সরকারী টিম দ্বার পরিদর্শন নিশ্চিত করা। ৮. জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি, সংকট ও তার সমাধান পদক্ষেপ নিয়মিতভাবে মিডিয়াতে প্রচার করা, যাতে করে

মানুষ সরকারি পদক্ষেপ এর উপর আস্থা রাখতে পারে।

আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি অধ্যাপিকা মাসুদা নূর, জেলা মহিলা দলের সভাপতি অ্যাড. মুনিরা চৌধুরী,জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হযরত আলী,জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন হিরু, ফেরদৌস খান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেবেকা সুলতানা, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার, জেলা ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক শাওন পাটওয়ারী, ভিবিয়ান ঘোষ। এ সময় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও যুব সংগঠন প্রতিনিধি,  নারী উদ্যোক্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাল্টি পার্টি এডভোকেসি ফোরাম কুমিল্লা বিভাগীয়  রিজিউনাল অফিসার আবুল বাশার।

সম্পর্কিত খবর