চাঁদপুরে আলুর আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১ হেক্টর জমিতে

শওকত আলী: চাঁদপুরে এ বছর আলুর লক্ষ মাত্রা অর্জিত হয়েছে। এ বছর সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১ হেক্টর জমিতে। এ বছর আলু আবাদে ফলন তুলনামূলক ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকরা আলু ভালো দামে বিক্রিও করছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত কয়েক বছর চাঁদপুরে আলু আবাদে কৃষকদের লোকসান গুণতে হয়েছে। তবে এবার আলুর ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে।

উত্তোলনের পর শুরু হয়েছে বিক্রি। প্রত্যাশিত দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। বাকি আলু উত্তোলন শেষে ভালো দাম পাওয়ার আশা প্রকাশ করছেন কৃষকরা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতে অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত এবং ঘন কুয়াশায় জেলায় আলুর কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা ছিল চাষিদের মধ্যে। কিছুদিন পরেই আবহাওয়া অনুকুলে চলে আসায় আলুর ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। গত বছরের তুলনায় এবার আলুর দ্বিগুণ দাম। ফসলি জমিগুলোতে এখন শেষ সময়ে আলু তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা।

জেলা সদরের বিষ্ণুপুর এলাকায় জামালপুর থেকে আসা শ্রমিক আবু হোসেন বলেন, এই সময়ে জামালপুরে কোনো কাজ নেই। প্রতি বছর এই সময়ে চাঁদপুরে ক্ষেত থেকে আলু তোলা হয়। আমরা ৩১ জন এসেছি কাজ করতে। এই বছর চাঁদপুর সফরমালী গ্রামে আলু চাষাবাদ কম হয়েছে। তারপরও দাম বেশি থাকায় কৃষক কিছুটা পোষাতে পেরেছেন। আমরা ১৫-১৬ দিন কাজ করলে ১৮-২০ হাজার টাকা পাই। ঈদের আগে আবার বাড়ি ফিরে যাবো।

ওই গ্রামের কৃষক শাহ জালাল বলেন, জমি থেকে আলু বাছাই করে ৫০ কেজি করে বস্তায় সংরক্ষণ করা হয়। গত বছর যেখানে একশ বস্তা আলু বিক্রি করেছি ৬৫-৭০ হাজার টাকায়। আর এবার দাম ভালো হওয়াতে জমিতেই একশ বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায়। দাম বেশি পাওয়ায় এলাকার সব কৃষকেই খুশি।

সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ঘোষেরহাট এলাকার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এই এলাকায় গত কয়েকবছর বৃষ্টির কারণে শেষ মুহূর্তে আলুতে লোকসান হয়েছে। এ বছর ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় গত কয়েক বছরের লোকসান কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠাতে পারবেন চাষিরা।

একই এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি এ বছরই প্রথম আলুর আবাদ করেছি। যদিও সার, বীজ ও কীটনাশকের দাম বেশি ছিল। তবে ফলন ভালো হওয়ায় এখন আর লোকসান হবে না মনে করছি।

চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাফায়াত আহম্মদ সিদ্দিকী বলেন, এ বছর মৌসুমে আলুর প্রথম বীজতলা নষ্ট হওয়ায় নতুন বীজতলা তৈরিতে বিলম্ব হয়েছে। জেলায় এ বছর সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১ হেক্টর জমিতে। এবার নির্ধারিত সময়ের পরও ফলন ভালো হয়েছে। আগামীতে আলু আবাদে কৃষকরা আগ্রহী হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে এবং কৃষকদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

সম্পর্কিত খবর