বিশেষ প্রতিনিধি : চাঁদপুরে সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিবন্ধন ছাড়া কি পরিমান এর কোন সঠিক তথ্য নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার নিবন্ধিত বহু অটোরিকশা জেলার কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় অহরহ চলছে। যার ফলে সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি অনেক সময় অবৈধ অটোরিকশা করে নানা অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত হচ্ছে।
সরেজমিন এসব এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলায় অনেক সময় চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব কাজে জেলার বাহিরের অটোরিকশা ব্যবহার হয়। এছাড়া শাহরাস্তির কালিয়াপাড়া ও দোয়াভাঙ্গা এলাকায় বাহিরের জেরার বহু সংখ্যক অটোরিকশা যাত্রী পরিবহন করছে। অবৈধ ও বাহিরের জেলার অটোরিকশা চলাচল করার সুযোগ করে দিচ্ছে শাহরাস্তির আবুল নামে শ্রমিক নেতা। তিনি এর বিনিময়ে প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা উঠানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
কালিয়া পাড়ার সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক আলাউদ্দিন জানান, কালিয়াপাড়া থেকে কচুয়া পর্যন্ত তিনি অটোরিকশা চালান। তার অটোরিকশা কুমিল্লা জেলার নিবন্ধিত। এর জন্য তাকে মাসিক দিতে হয় এবং প্রতিদিন পৌরসভাকে টোল দিয়েত হয় ৪০টাকা।
দোয়াভাঙ্গা ও কালিয়া পাড়া থেকে অটোরিকশায় যাত্রী পরিবহন করেন চালক রবিউল। তিনি বলেন, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার নিবন্ধিনত বহু গাড়ী চলে। তাদেরকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কোন কিছুই বলে না।
দোয়াভাঙ্গার একাধিক অটোরিকশা চালক জানান, যখন চাঁদপুরে নিবন্ধন বন্ধ ছিল তখন অনেকেই কুমিল্লা থেকে অটোরিকশার নিবন্ধন নিয়েছেন। ওইসব অটোরিকশা এখানে চলে।
অটোরিকশা শ্রমিক নেতা আবুল মুঠোফোনে বলেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশা চললে ক্ষতি কি? বড় গাড়ীই চলে। সেগুলোর বিষয়ে কেউ কথা বলে না। অন্য জেলার গাড়ী চাঁদপুরে চলে কেন এটার উত্তর দিবে পুলিশ সুপার। পৌরসভাগুলোতে কমপক্ষে ৩০ হাজার অটোরিকশা চলে। সেখানে টাকা উত্তোলন হলেও মেয়রদের সাথে কেউ কথা বলে না। অবৈধ যানবাহন থেকে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা উঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ১০ লাখ না ১০ কোটি টাকা উঠালে আপনার সমস্যা কি?
বিআরটিএ চাঁদপুরের মোটরযান পরিদর্শক মো. আফজাল হোসেন বলেন, এইসব বিষয়ে সংবাদ করে কি লাভ হবে। সংবাদ করে বিরক্ত হবেন। কারণ সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিবন্ধন ছাড়া ভাল চলে। সব জেলায় যেতে পারে। কারণ এক সময় নিবন্ধনের জন্য আমাদের কাছে তারা এসেছে। নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর তারা আসেন না।
বিআরটিএ চাঁদপুর জেলার সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চাঁদপুর জেলায় শুরু থেকে নিবন্ধন হওয়া অটোরিকশার সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ১০১টি। পরে পুনরায় নিবন্ধন হওয়ার পর সর্বশেষ নিবন্ধন নম্বর হচ্ছে ৮হাজার ২২৭। অবৈধ অটোরিকশা কি পরিমান তার সঠিক তথ্য নেই। তবে কয়েক হাজার হবে। আর সীমান্ত উপজেলায় মাঝে মাঝে প্রশাসনের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়। এটি অব্যাহত আছে।
শাহরাস্তির (টিআই) কামরুল হাসান বলেন, সীমান্ত উপজেলায় আমি একা দায়িত্ব পালন করছি। অন্য জেলার গাড়ী অনেক সময় রোগী নিয়ে মতলব ডায়েরিয়া হাসপাতালে যায়। এছাড়া যাত্রী পরিবহন করে তাও সঠিক। এসব গাড়ীর বিরুদ্ধে মামলা দিতে হলে কচুয়া ও শাহরাস্তি থানায় যেতে হয়।
অন্য জেলার অটোরিকশা চাঁদপুরের কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় যাত্রী পরিবহন করে। বিষয়টি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে তার কার্যালয়ে গিয়ে জানানো হয়। তিনি বলেন, ট্রাফিকে আমাদের লোকবল কম। এরপর যে পরিমাণ আছে তারা শহর কেন্দ্রিক দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শহরেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আপাতত উপজেলাগুলোতে লোকবল দেয়া কিংবা কাজ করা যাচ্ছে না। ট্রাফিকে লোকবল বাড়লে তখন কাজ করতে পারবে।