বাগাদী দরবারের পীর আল্লামা আরিফ উল্যাহ খান (রহঃ) এর ৯ম ওফাত দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত ২০১৫ সালের ২৬জুন শুক্রবার মোতাবেক ৮ই রামজান হাজারো ভক্ত, মুরিদ আশেকান ছাত্র ও গ্রামবাসীদের কাঁদিয়ে ওফাত লাভ করেন এই মহান আউলিয়া।

দিবসটি যথাযথ মর্যাদার সাথে পালনের জন্য বাগাদী দরবার শরীফ ও পীর আরিফ উল্যাহ খান রহঃ ফাউন্ডেশন ও এর পক্ষ থেকে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

এ উপলক্ষ্যে বাগাদী দরবার শরীফ ছাড়াও দেশের বিভিন্নস্থানে হুজুরের ভক্ত মুরিদান এর উদ্যোগে সওয়াব রেসানী মাহফিল মিলাদ ও দোয়া আয়োজন করা হয়েছে।

ঐতিহ্যবাহী বাগাদী দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা উপমহাদেশের সুফিবাদের অন্যতম প্রানপুরুষ, মুসলিম জানাজের প্রথম খলিফা আবু বকর সিদ্দিক (রা:) এর বংশধর ফুরফুরা শরীফের মরহুম মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশ ফুরফুরাভী রহ: এর প্রধান খলিফা শাহসুফী আলহাজ্ব মাওলানা ছালামত উল্যাহ খান রহঃ এর পুর্ন কামালীয়াতের অধিকারী বড় সাহেবজাদা সাবেক অধ্যক্ষ ও সাবেক চেয়ারম্যান আল্লামা শাহসূফী মাওঃ মোঃ ছায়াদ উল্যাহ খান ( বড় মিয়া হুজুর) রহঃ এর সুযোগ্য সাহেবজাদা ও ফুরফুরার মুজাদ্দেদে জামান এর ফুরফুরার শাহসুফী নাজমুস সাদাত সিদ্দিকী আল কুরাইশী ফুরফুরাভী ন’হুজুর কেবলার একান্ত ছোহবত ও ইজাজত প্রাপ্ত, ফুরফুরার পীর আবুল আনছার মুহাম্মদ কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশ ফুরফুরাভী রহঃ আশির্বাদ প্রাপ্ত,ও ফুরফুরা শরীফের খলিফা নানুপুর -যাত্রাবাড়ির পীর সাহেব শাহসুফী আলহাজ্ব আবুল খায়ের মোহাম্মদ ওয়াজি উল্যাহ রহ: হুজুরের খেলাফত প্রাপ্ত প্রধান খলিফা বাগাদী দরবার শরীফ এর কুতুবুজ্জামান পীরে মোকাম্মেল আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আরিফ উল্যাহ খান রহঃ।

নিজের মরহুম দাদা হুজুর কেবলা ফুরফুরা শরীফের মুজাদ্দেদে জামান আবুবকর সিদ্দিকী আল-কুরাইশী ফুরফুরাভী রহঃ এর খলিফা, ঐতিহ্যবাহী বাগাদী দরবার শরীফের আলা’হযরত পীরে কামেল আলহাজ্ব হযরত মাওলানা সালামত উল্যাহ খান ফুরফুরাভী (রহঃ) এর স্নেহ-আদর- ভালোবাসা আর আদর্শে বুকে ধারণ করে, নিজ পিতা পীরেকামেল আল্লামা ছায়াদ উল্যাহ খান (রহঃ) এর গভীর সান্যিদ্ধে থেকে দোয়া ও ইজাজত প্রাপ্ত হয়ে ফুরফুরার হুজুর কেবলার অসিয়ত ও নিদ্দেশে নিজ ভগ্নিপতি যাত্রা বাড়ীর/ নানুপুরের পীরসাহেব শাহসুফী আলহাজ্ব আল্লামা আবুল খায়ের মোহাম্মদ ওয়াজি উল্যাহ রহ এর খেলাফত প্রাপ্ত হয়ে ধীরে ধীরে তিনি আধ্যাত্মিক জ্ঞানে সমৃদ্ধি লাভকরে মানুষকে আধ্যাত্মিকদীক্ষা ও আমজনতাকে হেদায়াতের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। দরবার শরীফের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি নিজ দাদা হুজুর কেবলা’র প্রতিষ্ঠিত বাগাদী আহমদিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় আরবি সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, এছাড়াও তিনি সোবানপুরের প্রথম মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম-খতিবের দায়িত্ব পালন করেন পরবর্তীতে বাগাদী মিয়াজি বাড়ি জান্নাতুল ফেরদৌস জামে মসজিদে খতিব ও মৈশাদী হামানকরদ্দী ঈদগাগ ময়দানের খতিব ছিলেন, পরবর্তীতে নিজ দাদা হুজুর কেবলা’র প্রতিষ্ঠিত ঈদগাহ ময়দান নিজ গাছতলা পীর আল্লামা সালামত উল্যাহ খান রহঃ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান এর খতিব হিসেবে ইন্তেকালের পুর্ব পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ফুরফুরা শরীফের ন’হুজুর কেবলার ইজাজত ও নানুপুর পীর সাহেব হুজুর এর খেলাফত প্রাপ্ত হয়ে তিনি দাদা হুজুরের তষ্ঠিত নিজ দরবার বাগাদী দরবার শরীফে সাপ্তাহিক হালাকায়ে জিকির ও তালিমী জলসায় আয়োজন করেন বিভিন্ন এলাকায় ওয়াজ-নসিহত, মানুষের প্রাত্যহিক সমস্যার শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাখ্যা প্রদান ও মানুষকে হেদায়াতের পথে আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর গোটা জীবন অতিবাহিত করেন। হুজুরের মরহুম পিতা আল্লামা ছায়াদ উল্যাহ খান (রহ:) ১৯৬৪ সালে তিনি বাগাদী ইউনিয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন (উল্লেখ্য তার বাবা মরহুম পীর ছালামত উল্যাহ খান রহঃ ১৯১৪ সাল থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত মহকুমা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। ফলে ক্ষুব্ধ পাক বাহিনী বাগাদী মাদরাসায় আর্মি ক্যাম্প স্থাপন করে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। পরে বাগাদীর পীরের কারামত দেখে তারা ক্যাম্প গুটিয়ে ভয়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। প্রসঙ্গতঃ পরে এ মাদরাসায় ওনার ছাহেবজাদাদের নেতৃত্বে সরাইখানা খুলে নিয়মিত মুক্তিকামী অসহায় মানুষের খাবার রুটি ও খিচুড়ি বিতরণ করেন। এসকল কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন হুজুরের বড় ভাই সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান পীর আল্লামা এ কে এম নেয়ামত উল্যাহ খান ও মেঝ ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির উল্যাহ খান (আমেরিকা প্রবাসী) এ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় তিনি জেনারেল এমএজি ওসমানি স্বাক্ষরিত পাসধারী ছিলেন।

মরহুম পীর মাও: আরিফ উল্যাহ খান রহঃ ছিলেন দীর্ঘদেহী ভরাট কন্ঠের অধিকারী গভির জ্ঞানের অধিকারী। যার ছোহবতে সারা বাংলার হাজার হাজার আলেম ওলামা ও পীর মাশায়েখ ধন্য হয়েছেন। আজো তার বহু ছাত্র বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছেন। বাগাদী মাদরাসার ছাত্রদের মাধ্যমে বহু মাদরাসা, মসজিদ ও খানকাহ এবং মাহফিল প্রতিষ্ঠিত করেন। যা স্থানিয় ভাবে এখনো টিকে রয়েছে।

তিনি নিজ দাদা ও পিতার নামে মসজিদ ও মাদ্রাসায় ভবন নির্মাণ করেন । মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা আল্লামা আরিফ উল্যাহ খান (রহঃ) বাবার পুর্ন কামেলীয়াতের অধিকারী হয়ে ও এজাজতপ্রাপ্ত হয়ে যোগ্য প্রতিনিধি হিসেবে তা ধরে রেখেছিলেন ও বাবার যোগ্য সন্তান হিসেবে তিনি বহু মসজিদ এবং ঈদগাহ কায়েম করেছেন। যেগুলোর ইমাম ও খতিব হিসেবে খেদমতে আজো তার সন্তান এবং ছাত্ররা রয়েছেন হুজুরের ৯ম ওফাত দিবসে দোয়া কামনা করেছেন হুজুরের বড় সাহেবজাদা ও খলিফা বাগাদী দরবারের সাজ্জাদানেশীন সাহেবজাদা আলহাজ্ব আল্লামা আশেকুল আরেফীন সিদ্দীকি। মেঝো সাহেবজাদা রোটারিয়ান পীরজাদা মেহেদী হাসান খান আল আরেফীন ও ছোট সাহেবজাদা পীরজাদা জুনায়েদ উল্যাহ খান আল আরেফীন ।

সম্পর্কিত খবর