![](https://chandpurkhobor.com/wp-content/uploads/2024/02/pori-dorshon.jpg)
শওকত আলী : বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক চাঁদপুরে আসেন রেলওয়ের বিশাল অংকের অর্থব্যয়ে করা উন্নয়ন কাজ সরোজমিনে দেখার জন্য।
মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম এ সময় বলেছেন,রেলওয়ের প্রতি জনগনের অনেক প্রত্যাশা, প্রত্যাশা অনেক বেশী তা’রাতারাতি পরিবর্তন হবে না। চাহিদা হিসেবে রেলওয়ে কাজ করে আসছে। চাঁদপুরের তিন নদীর মোহনাকে কোন ধরণের পরিবর্তন না করে প্রাকৃতিকভাবে থাকা স্থানটিকে আরো সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে। এখানে যেসব গাছ আছে সেগুলো থাকবে এবং আরো নতুন করে শ্রীবৃদ্ধির জন্য গাছ লাগানো হবে। এছাড়াও সবুজায়ন করার লক্ষ্যে এখানকার ভূমিতে ঘাস লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। একই সাথে এখানে হাঁটার জন্য ফুটফাত তৈরী এবং ক্যাফেটেরিয়া থাকবে। যাতে করে আগত দর্শনার্থীদের বিভিন্নভাবে সেবা প্রদান করা যায়।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাঁদপুর রেলস্টেশনের অবকাঠামো, তিন নদীর মোহনার উন্নয়ন,শহর রক্ষা বাঁধের বড় স্টেশন মোলহেড অংশে চিত্র বিনোদনের জন্য রেল পার্ক নির্মামার্ধীন স্থান,নতুন আধুনকি স্টেশন ভবন,ফøাটফর্ম ইলিশের রাজধানী খ্যাত ইলিশ আড়তের রেলওয়ে সেট,ডিফ টিউবয়েল স্থাপনের স্থান,নির্মানার্ধীন নতুন ফ্লাটফর্ম সেট নির্মান কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তিন নদীর মোহনায় যে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা। এটাকে একটি নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরে আনা। অর্থাৎ চাঁদপুরবাসী যেন সেখানে অবসর সময় কাটানো এবং বিনোদন উপভোগ করতে পারে।
এসব উন্নয়নে কি পরিমান অর্থ বরাদ্দ হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ এই মুহুর্তে বলতে পারছি না। তবে প্রচুর অর্থব্যয় করে পর্যায়ক্রমে উন্নয়ন করা হবে। উন্নয়নের চাহিদার আলোকে ধাপে ধাপে বরাদ্দ এবং ব্যয় হবে।
মহাব্যবস্থাপক বলেন, রেলওয়ের অবকাঠামগত উন্নয়ন কাজগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে নিয়মিত কাজ হিসেবে। তারই অংশ হিসেবে চাঁদপুরে আসা। এখানে আমাদের বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান আছে সেগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। আর এখানে যেসব অবৈধ স্থাপনা রয়েছে সেগুলোকে পরবর্তীতে কি প্রদক্ষেপ নেয়া যায় সে পরিকল্পনাও করা হবে।
চাঁদপুর-কক্সবাজার ট্রেন চালু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের যে পরিকল্পনা অর্থাৎ যাত্রীদের চাহিদার আলোকে ট্রেনের সময় সূচি র্নিধারণ করি। এটি আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে ভবিষ্যতে এই রুট বর্ধিত করতে পারি। তবে দীর্ঘদিন যেহেতু চাঁদপুর-চট্টগ্রাম যাত্রী চলাচল করছে, সেখানে হুট করে চাঁদপুর থেকে কক্সবাজার ট্রেন চালু করলে চট্টগ্রামের যাত্রীদের আসন কিভাবে দেয়া হবে। এছাড়া একটি নতুন রুট চালু করার জন্য নতুন ইঞ্জিন ও লোকমাস্টারের প্রয়োজন আছে। এটির সাথে অনেক কিছু জড়িত আছে।
তিনি আরও বলেন, কবে থেকে চাঁদপুর-কক্সবাজার ট্রেন চালু হবে এটা এখনই বলতে পারছি না। তবে আমাদের কক্সবাজার স্টেশনের কাজ এখন শেষ পর্যায়। সেখানে কিছু ব্রিজ ও অবকাঠামগত কাজ চলমান। সবকিছু শেষ হওয়ার পর আমরা আশাবাদি অচিরেই চাঁদপুর-চট্টগ্রাম ট্রেন চালু হতে পারে।
চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আরো আধুনিক করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ট্রেনটিতে এখন যাত্রীদের কোন ধরণের সমস্যা হচ্ছে না। তা’দেখে এটি আধুনিক করা হবে, তবে সময় লাগবে। কারণ পদ্মা সেতু নির্মাণের পরে লঞ্চে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি। তবে আমরা সব সময় যাত্রীর চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসলে রেল লাইনের পাশে থাকা শহরের বাণিজ্যিক এলাকাগুলোর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে ফেলা হয়। কর্মকর্তারা চলেগেলে আবারও বসানো হয়। এসব বিষয়ে কি ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মহাব্যবস্থাপক বলেন, চট্টগ্রাম থেকে রেল লাইনে চাঁদপুরের দুরুত্ব ১৬০ কিলোমিটার। সেখান থেকে এসে এসব অবৈধ স্থাপনা আমরা নিয়মিত তদারকি কিংবা উচ্ছেদ করতে পারব না। এখানকার স্থানীয় প্রশাসন এবং সচেতন নাগরিকরা এগিয়ে না আসলে আমাদের একার পক্ষে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তারপরেও আমাদের পরিকল্পনা আছে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে রেলওয়ের সম্পত্তি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনা। কোনভাবেই অবৈধ দখলদারদের সুযোগ দেয়া হবে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম, প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী, বিভাগীয় প্রকৌশলী (১) মো. আবু হানিফ, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তারেক মো. ইমরান, সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ ও পূর্ত) লাকসাম মো. লিয়াকত আলী মজুমদার, রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের চীফ ইনচার্জ মো. সালামত উল্লাহ, চাঁদপুর স্টেশন মাষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) সোয়াইবুর শিকদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মহাব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তিন নদীর মোহনা,মোলহেড,রেলওয়ে পার্কের স্থান,ফøাটফর্মসহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক চলমান কাজ,রেললাইনের ২পাশে ফেসিং নির্মান স্টেশনের উন্নয়ন কাজ ও অবৈধ স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করে দেখেন।