কল্যান্দীতে রাতের আঁধারে লক্ষ টাকার গাছ কেটে সম্পত্তি দখলের চেষ্টা !

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর সদর উপজেলার ৩নং কল্যাণপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড কল্যান্দী (মেলেটারি দোকান সংলগ্ন) পাটোয়ারী বাড়িতে রাতের আঁধারে অসহায় কৃষক মনির পাটোয়ারী ও বৃদ্ধ মিজান বকাউলের সম্পত্তিতে লাগানো ১১/১২ টি মূল্যবান গাছ কেটে জমি দখলের চেষ্টা করেছে একই বাড়ির মরহুম সেলিম পাটোয়ারীর ছেলেরা ওমর ফারুক পাটোয়ারী (৩৫), আরিফ পাটোয়ারী (৩২), সোহাগ পাটোয়ারী (২৭), মৃত আবুল পাটোয়ারী ছেলে হারুন পাটোয়ারী (৪৭) তার ছেলে মাসুদ পাটোয়ারী।

এই ঘটনাটি ঘটে ৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১১:৪৫ ঘটিকায়। এলাকাবাসি থেকে জানাযায় মরহুম সেলিম পাটোয়ারীর ছেলেরা ওমর ফারুক, আরিফ, সোহাগ এবং মরহুম আবুল পাটোয়ারী ছেলে হারুন ও তার ছেলে মাসুদ রাতের আধাঁরে দা, কুড়াল, লাঠিসোটা দিয়ে মনির পাটোয়ারীর ও তার বিক্রি করা সম্পত্তির উপর থেকে মূলবান মেহগনি গাছ সহ অন্যান ১১/১২ টি গাছ কর্তন করে।

এমন অবস্থায় মনির এবং মনির থেকে ক্রয়করা সম্পত্তির মালিক মিজান বকাউল ও তার সন্তানরা বাঁধা দিলে উত্তেজিত অবস্থায় ফারুক, আরিফ, সোহাগ, হারুন ও তার ছেলে মাসুদ তাদেরকে মারধোর করতে আসে বলে জানান প্রত্যক্ষ উপস্থিতগন ।

মরহুম আলিউল্লাহ পাটোয়ারী ছেলে মনির পাটোয়ারী বলেন হাল ৩১নং কল্যান্দী মৌজার ১৫ নং সি এস খতিয়ানের সাবেক ১০৩৯ দাগে বর্তমান ২৫৯৬ দাগে আমাদের বাড়িটা ১ একর ২৪ শতাংশ। আমি আমার হিস্যা ও ১২২১ খারিজ খতিয়ান থেকে দখল থাকা অবস্থায় ৩ শতাংশ জমি রাস্তার পাশে চৌহদ্দি দিয়ে মিজান বকাউল এর নিকট বিক্রি করি। এই ৩ শতাংশ জায়গা মিজান বকাউলের নামে ১৫৯৯নং খারিজ খতিয়ান হয়। আমার বাকী অংশ আমাকে বাড়ির পিছনে তারা দিয়েছে। আমি এই ১০৩৯ দাগে পত্তিক ও খরিদ সুত্রে মালিক হই। আমি আমার প্রয়োজনের তাগিদে দখলকৃত সম্পত্তি থেকে ৩ শতাংশ জমি বিক্রি করি।

বিক্রির কয়েক বছর পর ফারুক ও তার ভাইরা মিজান বকাউল এর ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে জোর করে ঘর নির্মান করে। এতে করে মিজান বকাউল চাঁদপুর বিজ্ঞ আদালতে ৪৭০/২২ নং উচ্ছেদ মামলা করেন। যাহা এখনো চলমান। ১০/১২ দিন আগে রাস্তার সাথে জোরপূর্বক দিনরাত কাজ করে ফারুক ও তার ভাইরা আরেকটি ঘর করেন।

এখন আবার ৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ১১:৪৫ ঘটিকায় ফারুক ও তার ভাই চাচা দা, কুড়াল ও লাঠিসোটা নিয়ে সম্পত্তি দখল করা উদ্দেশ্যে মিজান বকাউল ও আমার সম্পত্তির উপর থেকে মূলবান ১১/১২ টি গাছ কেটে নিয়ে যায়। যার বর্তমান বাজার মূল্য হবে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। আমরা বাঁধা দিতে আসলে আমাদের মাইরধোর করে ও হত্যার হুমকি দেয়। আমরা এই ভূমি দূস্যদের বিচার চাই।

এই বিষয়ে ওমর ফারুক পাটোয়ারী বলেন আমাদের বাড়িটা সেকান্দর পাটোয়ারীর ৩ ছেলে অলিউল্লাহ পাটোয়ারী, আবুল পাটোয়ারী ও বাচ্চু পাটোয়ারী মধ্যে তিন ভাগে মৌখিক বন্টন। আমাদের মধ্যে আপোষ বন্টন নামা কোন দলিল নেই। আমরা আবুল পাটোয়ারীর ওয়ারিশ।

বিজ্ঞ আদালতে চলমান ৪৭০/২২ নং উচ্ছেদ মামলা থেকে জানাযায় সাবেক ২১ হাল ৩১ নং কল্যান্দী মৌজার সি.এস ১৫ নং খতিয়ানে ৫.০৫ একর ভূমিতে জগবন্ধু মজুমদার, দ্বীনবন্ধু মজুমদার, রামদুলাল মজুমদার, ঈশান চন্দ্র মজুমদার, পূর্ণ চন্দ্র মজুমদার, শতীশ চন্দ্র মজুমদার প্রত্যেকে হিস্যায় অংশে ০.৮৪.১৭ একর ভূমিতে ১ কিত্তা রায়তী স্বত্বে মালিক দখলকার হয়।

সতীশ চন্দ্র মজুমদার নালিশী জমায় মালিক থাকা অবস্থায় বিগত ০৭/০৭/১৯৬৪ইং রেজিস্ট্রিকৃত ২৩১০নং ছাপকবলা দলিল মুলে ছবর আলী ভূইয়ার নিকট ১.৩০ একর ভূমি বিক্রয় করে। তৎপর ছবর আলীর মৃত্যুর পর ওয়ারিশ ৪ পুত্র আঃ খালেক গং নালিশী জমায় মালিক থাকিয়া বিগত ২৭/০৬/১৯৬৭ ইং রেজিস্ট্রিকৃত ৬০৫২ নং ছাপকবলা দলিল মূলে সেকান্দর আলী পাটওয়ারী ও তার স্ত্রী নুরেন্নেছা, শহিদউল্লাহ পাটোয়ারী, রকমান পাটোয়ারী সহ ৪ জনের নিকট সি.এস ১০৩৯ দাগে ০.৪১ একর ভূমি বিক্রয় করে। তাতে প্রত্যেকে ১০.২৫ শতাংশ ভূমিতে মালিক হয়। রকমান পাটোয়ারী থেকে ১২.২৫ শতক সেকান্দর পাটোয়ারী ক্রয় করে। বর্ণিত মতে সেকান্দর আলী ও তার স্ত্রী নুরেন্নেছা এবং ক্রয়কৃত অংশ সহ সি.এস ১০৩৯ দাগে ০.১০.২৫ একর + ০.১০.২৫ একর+০.১০.২৫ =. ৩০.৭৫ একর ভূমিতে মালিক দখলকার থাকাবস্থায় সেকান্দর পাটওয়ারীর নামে বি.এস ৮০৭ নং খতিয়ান হয়। তৎপর সেকান্দর ও তার স্ত্রী নুরেন্নছা জীবদশায় ৩ পুত্র অলি উল্যা পাটােয়রী, আবুল পাটােয়ারী, বাচ্চু পাটোয়ারী ৪ কন্যা লুতি বেগম, জানু বেগম, শুকুরী বেগম, তাহামিনা বেগমকে ওয়ারিশ রাখিয়া মারা যায়।

১০৩৯ দাগে এরপর যতগুলো দলিল সৃজন হয়েছে দলিল গুলো ১একর ২৪ শতাংশের অন্দরে খন্ড খন্ড আকারে সৃজন হয়েছে। নিদিষ্ট কোন চৌহদ্দী ছিল না, আপোষ বন্টনও ছিলনা।

মিজান বকাউলের দায়ের করা ৪৭০/২২ নং উচ্ছেদ মামলার আইনজীবী এডভোকেট মোঃ কামাল হোসেন মজুমদার বলেন আমার বাদী পক্ষ সাবেক ১০৩৯ দাগে মনির পাটোয়ারী থেকে ৩ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করে। যাহার উত্তরে বাচ্চু পাটোয়ারী ও ফারুক পাটোয়ারী, দক্ষিণে সরকারি পাকা রাস্তা, পূর্বে মিজান বকাউল ও পশ্চিমে মনির পাটোয়ারী।

মিজান বকাউলের নামে ১৫৯৯ নং খারিজ খতিয়ান আছে। এই ৩ শতাংশ জমি মিজান বকাউল ছারা অন্য কেউ দখল করলে তা টিকবে না এবং তা সম্পূর্ণ বেআইনি। যত বহুতল ভবনেই করা হোক না কেন তা আদালতের মাধ্যমে ভাঙ্গা হবে। এই সম্পত্তির এখন প্রকৃত মালিক মিজান বকাউল। আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আদালতের মাধ্যমে আমরা আমাদের সম্পত্তি বুজে পাবো।

 

সম্পর্কিত খবর