হাইমচরে মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সে চলছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার

স্টাফ রিপোর্টার: চাঁদপুরের হাইমচরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স নবায়ন হয়নি গত দুই বছরে। এখানকার অনুমোদিত প্রায় সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেরই লাইসেন্স এখন মেয়াদোত্তীর্ণ।

যেসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন আছে, সেগুলোর লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ তো আছেই, আবার অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স ছাড়াই মাসের পর মাস ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবেই চলছে পুরো হাইমচরের ক্লিনিক ও প্যাথলজির ব্যবসা।

একই সাথে দালালের খপ্পরে পড়ে দিনের পর দিন প্রতারিত হচ্ছে অসহায় মানুষ। আর লাভবান হচ্ছেন কতিপয় দালাল ও অসাধু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা। মূলত এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে একশ্রেণীর দালাল।

দালালদের মাধ্যমে ভাগিয়ে আনা হয় রোগী। বিভিন্ন রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নাম দিয়ে সাইনবোর্ড টাঙানো থাকলেও নিয়মিত রোগী দেখতে বসেন না তারা। অনুমোদনহীন এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে চিকিৎসার নামে ব্যবসা, প্রতারণা, রোগী ভোগান্তির অভিযোগ উঠছে হরহামেশাই।

নদীবেষ্টিত হাইমচর উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলের অধিকাংশ রোগী অনেকটা নির্ভরশীল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওপর। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিন, অপারেশন থিয়েটার, শক্তিশালী জেনারেটর অকেজো হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘ সময়। আর এই সুযোগে ক্লিনিকগুলোয় চলছে অপচিকিৎসা।

বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠানে অহরহ অপচিকিৎসার অভিযোগ উঠছে। বেশিরভাগ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকেই নেই সুচিকিৎসার পরিবেশ। অনেকেই কোনোমতে ভবন ভাড়া নিয়ে ঘিঞ্জি পরিবেশে চালিয়ে যাচ্ছে ব্যবসা।

রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় হাইমচরের এ.কে মেমোরিয়াল ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নেই হালনাগাদ কোন কাগজপত্র। এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন আছে নেই টেকনিশিয়ান! তবুও হয় এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাফি। প্রতিনিয়ত যে সকল মেডিক্যাল বর্জ্য উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে সঠিকভাবে সংরক্ষন ও অপসারন না করে নিজেরাই মাটিতে গর্ত করে পুড়িয়ে ফেলেন বলে দাবি এ.কে মেমোরিয়াল ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের।

এই অবস্থায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি পরিচালনা করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এ.কে মেমোরিয়াল ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্নধার ডা. কাজী মো. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন অনুমোদন (লাইসেন্স) নবায়নের জন্য তাকে তিন মাসের সময় দিয়েছেন হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন।

একই সাথে দালালের খপ্পরে পড়ে দিনের পর দিন প্রতারিত হচ্ছে অসহায় মানুষ। আর লাভবান হচ্ছেন কতিপয় দালাল ও অসাধু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা। মূলত এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে একশ্রেণীর দালাল। দালালদের মাধ্যমে ভাগিয়ে আনা হয় রোগী। বিভিন্ন রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নাম দিয়ে সাইনবোর্ড টাঙানো থাকলেও নিয়মিত রোগী দেখতে বসেন না তারা। অনুমোদনহীন এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে চিকিৎসার নামে ব্যবসা, প্রতারণা, রোগী ভোগান্তির অভিযোগ উঠছে হরহামেশাই।

এছাড়া সরকারি বিধিমালায় নিয়ম আছে-সরকারি সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫০০ গজের ভিতর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার করা যাবে না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,
হাইমচরে ৬ থেকে ৭টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। কাউকেই তিন মাস সময় দেয়া হয়নি। যাদের লাইসেন্স নবায়ন নেই তাদেরকে অনলাইনে আবেদন করে আবেদনটি জমা দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং যাদের আবেদন নাই তাদেরকে কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহীন বলেন, অবৈধ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার জন্য সিভিল সার্জনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছি।

চিকিৎসা সেবা প্রত্যাশীদের দাবি লাইসেন্স নবায়ন না থাকা ও চিকিৎসাসেবার যথাযথ পরিবেশ না থাকার বিষয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো তদারকিও নেই।

সম্পর্কিত খবর