হাইমচরে গত বছরের তুলনায় সুপারির ফলন তিনগুণ বেশি

মোঃ হোসেন গাজী : হাইমচর উপজেলার এ বছর সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর সুপারি গাছে গড়ে তিনগুণ বেশি ফলন হয়েছে। বাজারে দামও ভালো পাচ্ছেন তারা।

বাগান মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফলন বেশি হওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই বাজার সয়লাব হয়ে গেছে সুপারিতে। বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও প্রচুর; তাই দামও অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

এ মৌসুমে সুপারির আকার হয়েছে বড়। এখানকার সুপারি স্বাদেও মিষ্ট। ‘এক কুড়ি’ সুপারি আকার ও মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২শ ৫০ থেকে ৩শ টাকায়। স্থানীয় হিসেবে এক কুড়িতে ২শ ১০টি সুপারি থাকে। ফলন বেশি হওয়ার পাশাপাশি দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা খুশি। বাগান মালিক, চাষিরা জানান, এমনিতেই চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার সুপারির কদর রয়েছে সারা দেশে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে তাদের উৎপাদিত সুপারি পৌঁছে যাচ্ছে ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, সিলেট, লক্ষীপুরসহ দেশের নানা প্রান্তে।

উপজেলা কৃষি সূত্র জানায়,সরকারি হিসেবে ৬ ইউনিয়নের বিভিন্ন জমির বাগানে বাণিজ্যিকভাবে সুপারির চাষ করা হয়। বাণিজ্যিক বাগান ছাড়াও স্থানীয় প্রায় প্রতিটি বাড়িতে, পুকুর পাড়ে, সড়ক ও পথের দুধারে সুপারি গাছ লাগানো হয়।

একবার সুপারি গাছ লাগালে তেমন কোনও পরিচর্যা ছাড়াই তা বেড়ে উঠে এবং ৩০ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত ফলন দেয়। এতে আয় হয় ধান ও পানের চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি। তাই এ অঞ্চলের মানুষেরা সুপারি ও পানের চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। সুপারি বাগানে সহজেই লেবু, হলুদসহ বিভিন্ন বাড়তি ফসল চাষ করা যায়। এদিক থেকেও সুপারি বাগান লাভজনক।

হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাকিল খন্দকার জানান, হাইমচর উপজেলায় বছরে গড়ে ৫ হাজার টন সুপারির উৎপাদন হয়। বৃষ্টির কারণে গত এক যুগের মধ্যে এবছর সবচেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। পোকার আক্রমণও নেই। চাষিদের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান,গত বছরের তুলনায় এবছর প্রায় তিনগুণ বেশি সুপারির উৎপাদন হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার মে. টন সুপারি উৎপাদনের আশা করছি আমরা।

হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাকিল খন্দকার জানিয়েছেন, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এ অঞ্চলে সুপারির ফলন অত্যাধিক ভালো হয়েছে, যা দেখে এলাকার মানুষ সুপারি চাষে আরও উৎসাহী হবে বলে মনে করছি। লাভজনক হওয়ায় সুপারি গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে। তিনি আরো বলেন হাইমচর উপজেলার ঐতিহ্য ও প্রধান অর্থকারী ফসল পান সুপারির খ্যাতি দেশজুড়ে।

সম্পর্কিত খবর