হাজীগঞ্জে কিস্তির টাকার জন্য এক নারী জামিনদারকে আটকে রাখে উদ্দীপন !

সাইফুল ইসলাম সিফাত : চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় নারী সদস্যেকে গভীর রাত পর্যন্ত আটক রেখেছে। কর্মীরা বাড়িতে গিয়ে হামলা ও করার অভিযোগ উঠেছে।

জিম্মাদার নারীকে মধ্যরাত পর্যন্ত অফিসে আটকিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় কিস্তির টাকা দেয়ার শর্তে গভীর রাতে ছাড়া পায় ওই জামিনদার নারী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৪ নং কালচোঁ ইউনিয়নের শরিফুল আলমের স্ত্রী ইশতিয়া আলম নোহা এনজিও উদ্দীপন মহিলা সদস্য হিসেবে ২০২২ সালে ১৮ মাস মেয়াদী দুই লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। ১৮ মাসে মোট পরিশোধ করবেন দুই লাখ ৪১ হাজার ৬শত ৬৮ টাকা। শর্তানুযায়ী ইশতিয়ার দাবী ১১টি কিস্তি (১ লাখ ৪৭ হাজার ৬শ’ ৮৬ টাকা পরিশোধের কথা। কিন্তু উদ্দীপনের দাবী ৯ কিস্তির ১ লাখ ২০ হাজার ৮শত ৩৪ টাকা পরিশোধ করেন ইশতিয়া আলম নোহা। কিন্তু ইশতিয়া আলম নোহার স্বামীর উপার্জন না থাকায় গত ২ মাস কিস্তি দিতে পারেনি।

সংসারে তেমন আয় না থাকায় ইশতিয়া আলম নোহা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাবার বাড়ি ফরিদগঞ্জের ৬নং গুপ্টি ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের হামছাপুর পাটোয়ারিতে বেড়াতে যায়। যে কারণে (৩০ আগস্ট) বুধবার রাত ৮টায় উদ্দীপন এনজিও’র ম্যানেজার, ক্যাশিয়ার ও ফিল্ড অফিসার জিম্মাদার নাহিদা সুলতানাকে সাথে নিয়ে ইশতিয়ার বাবার বাড়িতে গিয়ে উঠেন। সেখানে ইশতিয়ার বাবার বাড়িতে এনজিও’র কর্মকর্তারা দুর্ব্যবহার করেন। ইশতিয়ার পরিবারকে ২০ লাখ টাকার মামলা দিবে বলে ও হুমকি দেয় উদ্দীপন।

একইদিন রাতে শাখা ব্যবস্থাপক মাজহারুল ইসলাম, মাঠ কর্মী জান্নাত আক্তার ও পাপিয়া, নূর আলম ও সবুজ জিম্মাদার নাহিদা সুলতানাকে জোরপূর্বক আফিসে নিয়ে রাত দেড়টা পর্যন্ত আটকে রাখেন। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পরে ৩১ আগস্ট ২০হাজার টাকা দেয়ার শর্তে জামিনদার নাহিদা সুলতানাকে ছেড়ে দেন উদ্দীপন কর্মকর্তারা।

নাহিদা সুলতানা বলেন, অফিসে নিয়ে গিয়ে ম্যানেজার মাজহারুল ইসলাম, মাঠ কর্মী জান্নাত আক্তার, পাপিয়া, নূর আলম ও সবুজসহ অন্যরা তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন এবং তাকে অফিসে আটকিয়ে রাখেন। ম্যানেজার মাজহারুল তাকে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখতে মাঠ কর্মিদের নির্দেশ দেন।
রাত দেড়টায় এক পর্যায়ে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে হট্টগোল করলে জামিনদার নাহিদাকে ছেড়ে দেয় এনজিও কর্মীরা।

জামিনদার নাহিদা আরো বলেন, আমাকে রাত দেড়টা পর্যন্ত আটকিয়ে রাখেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এনজিও সদস্যরা। পরে ৩১ তারিখে ২০ হাজার টাকা দেয়ার শর্তে রাত দেড়টায় আমাকে ছেড়ে দেন।

উদ্দীপন হাজীগঞ্জ শাখার ম্যানেজার মাজহারুল ইসলাম বলেন, নাহিদা সুলতানাকে আমরা আটক করিনি। তিনি নিজেই আমাদের অফিসে টাকা দেয়ার বিষয়ে কথা বলতে আসেন। কথা বলতে বলতে রাত ১টা বেজে যায়। উল্টো টাকার জন্য গেলে ইশতিয়ার বাবা আমাদের এক কর্মীর গায়ে হাত তুলেন। সেই ঘটনায় কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে নাহিদাকে হালকা গালমন্দ করেছে।
তবে বেধে রাখার কথা বলেছি ভয় দেখানোর জন্য। বেধে তো রাখিনি।

উদ্দীপন এনজিওর সদস্যরা ৯৯৯ ফোন করে পুলিশ কে খবর দিয়ে আবার অজ্ঞাত কারণে নিষেধ করে দেয়।
এই ঘটনায় জামিনদার নাহিদা সুলতানা উদ্দীপনের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

সম্পর্কিত খবর