চাঁদপুরে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে আপনের ব্যতিক্রমী দেশজ ফল উৎসব

সকাল থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে আসতে থাকে আমন্ত্রিত ব্যক্তিবর্গ। আসে, রেলস্টেশন আর দরিদ্রপল্লির সুবিধাবঞ্চিত শিশুরাও।

আমন্ত্রিত ব্যক্তিবর্গের শিশুসন্তান আর সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুরা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তাদের কোলাহলে মুখর হয়ে ওঠে পুরো হল রুম। কেউ ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে খুনসুটিতে, কেউ খেলায়। অবশেষে ডাক আসে ফল চেনা এবং খাওয়ার। সাথে সাথে সবাই মেতে ওঠে ফল উৎসবে।

১৬ জুন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে ব্যতিক্রমী এই দেশজ ফল উৎসবের আয়োজন করে সামাজিক ও মানবিক সংগঠন আপন। চাঁদপুর শহরের ওয়াই ডব্লিউসি স্কুলের হলরুমে আয়োজিত ফল উৎসবে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, লটকন, নুইন্না, ডেউয়া, সফেদা, মন্ডল, আনারশ, পেয়ারা সহ প্রায় ২০ প্রজাতের দেশীয় ফল স্থান পায়।

প্রদর্শন শেষে সবাইকে নিজের ইচ্ছেমত ফল খাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের দেয়া হয় ফল উপহারের প্যাকেট। যার প্রতিটি প্যাকেটে ছিলো আম, আনারশ, কাউ, সফেদাসহ বাহারী রকমের ফল। একসাথে এত ফল পেয়ে আনন্দে উচ্ছ্বাসিত হয়ে পড়ে ভাগ্যহত শিশুরা। আনন্দ আড্ডার মাধ্যদিয়ে শুরু হওয়া ফল উৎসবে শিশুরা উপস্থিত সকলকে গান ও ছড়া পাঠ করে শোনায়।

আপনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি রোটারিয়ান রাশেদা আক্তারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কবি আশিক বিন রহিমের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের উপদেষ্টা ও বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন, উপদেষ্টা ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মুনিরা আক্তার,

আপনের উপদেষ্টা রোটারিয়ান মো. মাসুদ হাসান, বঙ্গবন্ধুর আবৃত্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন বিশ্বাস, চাঁদপুর উইমেন চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস প্রেসিডেন্ট জেসমিন নাসরিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি রোটারিয়ান আশ্রাফুল আরিফ।

বক্তারা বলেন, আপন বরাবরই ভিন্নরকম সব আয়েজন করে থাকে। গৃষ্মের এ মধুমাসে তারা দ্বিতীয়বারের মত দেশজ ফল উৎসবের আয়োজন করেছে। এ আয়োজনের মাধ্যমে শিশুরা দেশজ বিলুপ্ত প্রায় অনেক ফলের সাথে পরিচিত হলো এবং স্বাদ গ্রহণ করলো।

বক্তারা বলেন, এ আয়োজনের সবচেয়ে সুন্দর বিষয়টি ছিলো, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের এ উৎসবে সামিল করা এবং তাদের ফল উপহার দেয়া। এখানে অনেক শিশুই রয়েছে, যারা জীবনে অনেক ফল দেখলেও খাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। কারণ বিলুপ্ত হতে যাওয়া আমাদের দেশজ ফলগুলোর দামও অনেক বেশি। আমরা এই ভিন্নধর্মী আয়োজনের জন্য আপন পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই।

ফল উৎসবের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন, আপনের নির্বাহী সদস্যরা রৌশন আরা, মাহমুদা খানম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিত্তূল মুনা চৈতী, সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন মুন্সি, কোষাদক্ষ আল-আমিন ইসলাম।

সম্পর্কিত খবর