ঢাকা মহানগর উত্তর আ.লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশ

বিশেষ প্রতিনিধি :আগুন-সন্ত্রাস করে ও পেছনের দরজা দিয়ে বিএনপি এবং তার দোসরদের ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের একজন কর্মী বেঁচে থাকতে এই দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব আমরা কায়েম করতে দেব না।

তিনি আরো জানান, আওয়ামী লীগকে উৎখাত করার বিএনপি ও তার দোসরদের স্বপ্ন কখনোই সফল হবে না। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ জাগ্রত, বাংলার জনগণ শেখ হাসিনার জন্য উপস্থিত। আজ ষড়যন্ত্র করে, এদেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করে, ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করা হলে দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে। কাউকে দাঁড়াতে দেয়া হবে না। যত বড় সন্ত্রাসীই হোক, তাকে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করা হবে।

রোববার (২১ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, আজকে বিএনপি-জামায়াত জোট ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করার জন্য, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার জন্য তৎপর। জায়গায় জায়গায় আগুন, জায়গায় জায়গায় মিছিল-মিটিংয়ের মধ্য দিয়ে তারা মারামারি করছে। বাংলাদেশকে একটি অস্থিতিশীল দেশ বানানোর পাঁয়তারা করছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীরা।

তিনি বলেন, তারা শেখ হাসিনার উন্নয়নকে ভয় পায়। তারা শেখ হাসিনার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হোক, তারা সেটা চায় না। তারা দেশটাকে পাকিস্তান বানাতে চায়। এই দেশটাকে আবার উল্টে দিতে চায়। তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে আমাদের শান্তি সমাবেশ।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষা করা, জনগণের পাশে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পবিত্র দায়িত্ব। তাই তারা শান্তি সমাবেশের মধ্য দিয়ে যারা দেশে অশান্তি সৃষ্টি করে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার শপথ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, আজ বিএনপি-জামায়াত বলে, বাংলাদেশ বাই চান্স বাংলাদেশ, অর্থাৎ হঠাৎ বাংলাদেশ হয়ে গেছে। এত বড় গর্দভ আমার জীবনে দেখি নাই। বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ২৪ বছর লড়াই-সংগ্রাম করতে হয়েছে। তাঁকে জেলে যেতে হয়েছে। তিন-তিনবার তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছেন।

তিনি আরো বলেন, এই বাংলাদেশ স্বাধীন করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ আত্মত্যাগ করেছেন। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা। দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর ১১ বছর কারাবাসের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা। আর বিএনপি-জামায়াত আজ বলছে – বাই চান্স বাংলাদেশ।

এসময় বিএনপির প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কথা বলবেন, তারা দেশদ্রোহী। তাদের এই দেশে থাকার কোনো অধিকার নাই।

তিনি আরো বলেন, যারা বলে – বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান ভালো ছিল, তারা পাকিস্তানে চলে যায় না কেন?

এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, খালেদা জিয়া নাকি বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা – এই কথা শুনে পাগলেও হাসে। তারেক জিয়া নাকি শিশু মুক্তিযোদ্ধা। এটা (বিএনপি) একটা ভুয়া সংগঠন। একবার দেয় ২৭ দফা, একবার দেয় ১০ দফা। এখন বলে এক দফা। পরে বলবে শূন্য দফা। তিনি বলেন, দফায় কাজ হবে না, জনগণের পাশে দাঁড়ান।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেবদের বলি, লাফালাফি কম করেন। আপনাদের লাফালাফি আমার অনেক দেখেছি। আপনারা কাগুজে বাঘ। লাফালাফি বন্ধ করে নির্বাচনে আসেন। নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নাই ক্ষমতায় যাওয়ার। জনগণের ভোটে জয়লাভ করলে সেলাম দিয়ে আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেব। আর ষড়যন্ত্র করে নির্বাচনে যেতে চাইলে তার দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি আরো বলেন, আপনারা নির্বাচনে আসবেন কি আসবেন না, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, নির্বাচনে বিশ্বাস করে, তাদের নিয়েই আগামী সংসদ নির্বাচন হবে।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। বিশেষ বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাদেক খান।

সম্পর্কিত খবর