চাঁদপুর জেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সাথে সনাকের অ্যাডভোকেসি সভা

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ চাঁদপুর জেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সাথে সনাকের অ্যাডভোকেসি সভা গতকাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চাঁদপুরের আয়োজনে এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

“চাই স্বাস্থ্যখাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন” শীর্ষক অ্যাডভোকেসি সভায় সভাপতিত্ব করেন সনাক চাঁদপুরের সভাপতি ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিভিল সাজর্ন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন বলেন, সেবাদাতা ও গ্রহিতাদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি করতে পারলেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। আগে শুনতাম বাংলাদেশের এক নম্বর সমস্যা হলো জনসংখ্যা আর এখন দেখতে পাই বাংলাদেশের এক নম্বর সমস্যা হলো দুর্নীতি।

আর সনাক ও টিআইবি সেই দুর্নীতি নিয়ে কাজ করছে। আমরাও সবসময় সনাকের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে সহযোগিতা করে যাবো। তবে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও বেশি সচেতনতা তৈরি করতে হবে। যে কাজগুলো করলে সমাজ থেকে দুর্নীতি রোধ করতে পারবো আমাদেরকে সেই কাজগুলো করতে হবে। তিনি আরও বলেন, একজন ডাক্তারের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও সচেতন করা জরুরী। জনগণ সচেতন থাকলে কেহ তাকে ঠকাতে পারবে না।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় সবগুলো প্রতিষ্ঠান যেন দুর্নীতিমুক্ত থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে আমি সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। সনাক-টিআইবি’র কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের মাঝে আরও বেশি সচেতনতা ছড়িয়ে পড়ুক এবং প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাক সেই প্রত্যাশা করছি।

সনাক-টিআইবি’র দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে চলার পথে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সবসময় পথিক হয়ে থাকবে এবং সার্বিক সহযোগিতা করবে। এধরনের একটি সভা আয়োজন করার জন্য তিনি সনাকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

সভাপতির বক্তব্যে সনাক সভাপতি ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া বলেন, সনাক ও টিআইবি কোন দুদক বা কোন পুলিশ নয়।

সনাক ও টিআইবি’র কাজ হলো বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যেন স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন বৃদ্ধি পায় সে নিয়ে কাজ করা। সেবাদাতা ও গ্রহিতাদের মধ্যে এক সেতু বন্ধনের জন্য কাজ করছে সনাক ও টিআইবি। কোভিড-১৯ এর সময় স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিটা কর্মী অত্যন্ত নিরলসভাবে কাজ করেছে। ইউনেসকো বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগকে সম্মানীত করেছে।

এসডিজির লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে। স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে কোভিড-১৯ কে সফলভাবে মোকাবেলা করার চাঁদপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সম্মানীত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগে দালালের সমস্যাটি প্রকট।

পাশাপাশি চাঁদপুর জেলার ডায়াগণস্টিক ও ক্লিনিকগুলোর অনুমোদন দিয়ে থাকেন সিভিল সার্জন। এগুলোকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনার জন্য তিনি সিভিল সার্জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। স্বাস্থ্যখাতের কাজগুলোতে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য তিনি সিভিল সার্জনের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি সনাকের কোর এক্টরদের অংশগ্রহণে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে একটি পাঠচক্র নেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনের প্রতিও আহ্বান জানান।

অ্যাভোকেসি সভায় সনাক ও টিআইবি’র পরিচিতি ও কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য রাখেন সনাকের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সনাকের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক ডাঃ মিজানুর রহমান খান। সনাক-টিআইবি’র প্রকল্প পরিচিতি উপস্থাপন করেন টিআইবি’র এরিয়া কোঅর্ডিনেটর মোঃ মাসুদ রানা।

সনাকের স্বাস্থ্য কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে সনাক-স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বিষয়ে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সনাক সভাপতি ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, ডাঃ মোঃ জাহিদুজ্জামান, ডাঃ বাঁধন রায়, ডাঃ সাকিব ও সনাকের সহ-সভাপতি মোঃ আলমগীর পাটওয়ারী।

টিআইবি’র এরিয়া কোঅর্ডিনেটর মোঃ মাসুদ রানার সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সনাক সদস্য এবিএম নজরুল আমিন, রফিক আহমেদ মিন্টু, জেসমিন আক্তার, সনাক-চাঁদপুরের ইয়েস গ্রুপের সদস্যবৃন্দ ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।

সম্পর্কিত খবর