হাজীগঞ্জে আইনজীবি সহকারির মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল ॥ চাচা আটক

গাজী মহিনউদ্দিন : চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে আইনজীবি সহকারি ছালামত উল্ল্যাহর মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের পরিবারের দাবী সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে চাচার ঘুষিতে ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত চাচা কাউছার নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে উত্তেজিত হয়ে তেড়ে আসার সময় হঠাৎ মাটিতে লুটে পড়ে ছালামত উল্ল্যাহ। উপস্থিত বাড়ির লোকজনের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা ঘটে।

১ এপ্রিল শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলার ৩ নং কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের তারাপাল্লা গ্রামে আমিন উদ্দিন প্রধানিয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, সম্পত্তির উপর বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কের এ পর্যায়ে প্রধানিয়া বাড়ির রবিউল আলমের ছেলে আইনজীবি সহকারি ছালামত উল্ল্যাহ নামের ওই ব্যক্তি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছালামত উল্ল্যাহকে মৃত ঘোষণা করে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল থেকে চাচা কাউছারকে আটক করে পুলিশ। নিহত ছালামত উল্লাহ ওই বাড়ির রবিউল আলমের ছোট ছেলে। ঘটনার দিন সকালে ছালামত উল্ল্যাহ চাঁদপুর থেকে বাড়িতে ছুটে আসে। সে চাঁদপুর কোর্টে আইনজীবি সহকারি হিসেবে কাজ করে।

নিহত ছালামত উল্ল্যাহর পরিবারের দাবী আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বালু দিয়ে জায়গা ভরাটে বাঁধা দেওয়ায় বাড়ির পাশ^বর্তী ঘরের চাচা কাউছারের ঘুষিতে আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছালামত উল্ল্যাহ। তবে এ ঘনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই বাড়ির আব্দুল লতিফের স্ত্রী নাছিমার ভাষ্যমতে মারামারির ঘটনা ঘটেনি। দুই পক্ষকে বাড়ির লোকজন ধরে রেখেছে ছালামত উত্তেজিত হয়ে দৌঁড়ে আসতে গিয়ে হঠাৎ মাটিতে লুটে পড়ে।
ছালামতের পরিবার ছাড়া আর কারো কাছেই মারামারির ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি।

জানা যায়- নিহত সালামত উল্লার পরিবারের সাথে একই বাড়ির মৃত আমির হোসেনের ছেলে কাউছার ও তার ভাই জাবেদ, এমরান, মোস্তফার সাথে দীর্ঘ দিন তাদের সম্পত্তিগত বিরোধ চলছে। বিরোধ চলা সম্পত্তিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

শনিবার সকালে বিরোধ চলা সম্পত্তিতে আদালতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক বালি ভরাটের কাজ করে কাউছার । এতে রবিউল আলম ও তার ছেলে ছালামত উল্লাহ বাঁধা দিলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছালামত উল্ল্যাহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ছালাম উল্ল্যাহ ৬মাস পূর্বে হাজীগঞ্জের ফুলছোয়া গ্রামের বিবাহ করে। তার স্ত্রী ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা রয়েছে। স্বামীকে হারিয়ে স্ত্রী দিশেহারা হয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জোবাইর সৈয়দ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। এবং কাউছার আলমকে আটক করি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত খবর