হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি: হাজীগঞ্জের ১১নং হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ডিজে গান বাজিয়ে বখাটে কিশোরদের পুর্তি করায় বাঁধা দেওয়ায় রোষানলে পড়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে গায়েল করতে অপ-প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠে। গত ২০ ফেব্রুয়ারী রাতে উপজেলার ১১নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের ধড্ডা গ্রামে এ দূর্ঘটনা ঘটে।
মহান ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০ ফেব্রুয়ারী রাতে ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ একেএম মজিবুর রহমানের বাড়ির পাশে উচ্চ স্বরে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে ডিজে গান চালিয়ে ফয়সাল কবির নামের এক যুবকের নেতৃত্বে পুর্তি করে বখালে যুবকরা।
ওই দিন আশ-পাশের উপজেলার ও বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বখাটে যুবকরা মাতৃভাষা দিবসে ডিজে গান বাজিয়ে পুর্তি করার সময় বাঁধা দিতে এগিয়ে যান ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ একেএম মজিবুর রহমান তার ছেলে জনি। ওই সময় ওঁত পেতে থাকা কালচোঁ গ্রামের মো. আলোয়ার হোসেনের ছেলে নূর মোহাম্মদ, ধড্ডা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ সোহাগ হোসেন (২৯), একই গ্রামের মো. ছফি উল্ল্যাহর ছেলে মোঃ রাজিব হোসেন (২৫), লালু মিয়ার ছেলে মোঃ হাবীবুর (২৪)।
এদের সাথে হাজীগঞ্জ উপজেলার কালচোঁ, পিরোজপুরসহ আশপাশের গ্রাম এবং পাশ^বর্তী কচুয়া উপজেলা কাদলা গ্রাম থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫জন যুবক একত্রিত হয়ে ডিজে গান চালিয়ে বিভিন্ন নেশাদ্রব্য সেবন করে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
গত ২১ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাতে অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারী রাতে মাতৃভাষা দিবসে ডিজে পার্টি করার সময় বাঁধা দেয় ইউপি চেয়ারম্যন আলহাজ¦ একেএম মজিবুর রহমান ও তার ছেলে মো. জনি। এই সময় ফয়সার কবির নামের স্থানীয় যুবকের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫জনের বখাটে চক্র ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা করে। বাড়ির বিল্ডিংয়ের গ্লাস ভাংছুর করে।
ওইদিন রাতে ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে জনি ৯৯৯ কল দিয়ে পুলিশের সহায়তা চাইলে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় হাজীগঞ্জ থানার এস.আই আব্দুল আজিজ সঙ্গীয় ফোর্স। পুলিশের সহায়তায় বখাটে যুবকদের হামলা থেকে রক্ষা পায় ইউপি চেয়ারম্যানের পরিবার।
এ ঘটনায় জড়িত ধড্ডা গ্রামের সোহাগ রাজাকার ইদ্রিস দফদারের নাতী। সোহাগের দাদা ইদ্রিস দফদার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাক-বাহিনীর দোসর ছিল। যুদ্ধের শেষ দিকে ৬নং কালচোঁ ইউনিয়নের খিলপাড়া বাংলা বাজারে মুক্তিযোদ্ধারা ইদ্রিস রাজাকারকে আটক করে। এসময় ফায়ারিংয়ে ইদ্রিস রাজাকারের মৃত্যু হয়।
এ বখাটে যুবকেরা নিজেদের রক্ষা করতে পরদিন ২১ ফেব্রুয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ একেএম মজিবুর রহমান ও তার ছেলে জনির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রভাকান্ড চালায়। বখাটেরা সেই দিন বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চ এর ভাষণ চালানোকে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে। যা বাস্তবের সাথে কোন মিল নেই।
ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টায় ফয়সার কবির দাবী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করে। বিষয়টি সতত্যা নিশ্চিত হয়ে পুলিশ এ বিষয়ে অভিযোগ গ্রহণ করেনি।
গত ৮ই মার্চ ২০ ফেব্রুয়ারী রাতের ঘটনাকে পুঁজি করে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করে চাঁদপুর পৌর এলাকার ব্যাংক কলনীর বাসিন্দা সেলিম নামের এক ব্যক্তি। হাজীগঞ্জের ধড্ডা গ্রামের ঘটনায় চাঁদপুরে বসবাসকারী সেলিমের অভিযোগ করা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগেও ইউপি চেয়ারম্যান একেএম মজিবুর রহমানকে ফাঁসাতে ধর্ষণের চেষ্টার সাজানো অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে । যা আদৌ কোন হদিস মিলেনি। বিভিন্ন নামে বেনামে লোকজনকে এনে ফয়সাল কবির ইন্দন দিয়ে একাধিক মামলা করে ইউপি চেয়ারম্যানকে উৎখাত করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান নৌকা প্রতীকে বিজয়ী একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বখাটে ফয়সালের বিরুদ্দে কথা বললে নানান ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়। ইউপি নির্বাচন থেকেই চেয়ারম্যানের উপর এবং তার বাড়িতে রাতে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ একেএম মজিবুর রহমাকে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে ফেলতে ইচ্ছে করেই সেদিন ডিজে গান চালায় এ বখাটে যুবকরা। এতে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে তিনি মাতৃভাষা দিবসে ডিজে গান চালানের প্রতিবাদ করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ একেএম মজিবুর রহমান নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ফয়সাল কবিরের নেতৃত্বে সরকার বিরোধী একটি চক্র ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ একেএম মজিবুর রহমান বলেন, মাতৃভাষা দিবসে দেশত্ববোধক গান না বাজিয়ে একদল বখাটে সেদিন ডিজে গান বাজিয়ে পুর্তি করে। আমি এবং আমার ছেলে ও গাড়ির ড্রাইভার রবিউল এসে বাঁধা দেই। ডিজে গান না বাজানোর অনুরোধ করি। ওই সময় বখাটে যুবকরা আমাদের উপর হামলা করে। আমার বাড়ি ভাংছুর করে। নির্বাচনের সময় থেকে আমাদের উপর একের পর এক হামলা করা হচ্ছে। এ নিয়ে থানায় একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। এর একটির কোন সমাধার পাইনি। আমি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চ এর ভাষণ চালানোর কাজে বাঁধা গিতে পারি না। আমার শরীরের আওয়ামী পরিবারের রক্ত রয়েছে। আমার চাচা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য অধ্যাপক একেএম ফজলুল হক। এর আগেও এই চক্রটি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মামলা করে। যা ইতো মধ্যে সত্যতা বেরিয়ে এসেছে।