চাঁদপুরে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল যুদ্ধ জাহাজ মেঘনা

চাঁদপুর খবর রির্পোট : মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে চাঁদপুরে নৌবাহিনীর জাহাজ মেঘনা সর্ব সাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

রবিবার (২৬ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চাঁদপুর শহরের পুরাতন লঞ্চঘাট সংলগ্ন বিআইডাব্লিউটিএ ঘাটে জাহাজটিতে পরিদর্শনে আসেন শহর ও আশপাশের এলাকার শিশু-কিশোর ও বিভিন্ন বয়সী লোকজন।

পরিদর্শনে আসা শহরের হাজী মসহীন রোডের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষার্থী তানজিনা তাবাচ্ছুম জানান, অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল যুদ্ধ জাহাজ দেখা। কয়েকজন সহপাঠি নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখেছি। যারা এটি পরিচালনা করেন এদের মধ্যে একজন আমাদেরকে জাহাজের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। এটি আমাদের জন্য বড় চমৎকার অভিজ্ঞতা।

বড় স্টেশন এলাকার ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন জানান, আসলে অনেক জাহাজ আমাদের নদীতে চলে। কিন্তু জাহাজের ভিতরে প্রবেশ করে দেখার সুযোগ হয়না। স্বাধীনতা দিবস হওয়ার কারণে জাহাজের অনেক কিছু দেখার সুযোগ হয়েছে। জাহাজ দেখার জন্য শিশু-কিশোর অনেকেই এসেছেন। তবে এখানে দেখার জন্য শৃঙ্খলা মানতে হয়।

জাহাজে দায়িত্বরত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদ জানান, মংলা বন্দর থেকে ২৪ মার্চ দুপুরে চাঁদপুর বিআইডাব্লিউটিএ ঘাটে জাহাজটি আসে। আজকে সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। এ সময় বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনসাধারণ জাহাজ ও মেরিটাইম মিউজিয়ামটি ঘুরে দেখেন। সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে আবার মংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে জাহাজ নিয়ে রওয়ানা হব।

তিনি আরো জানান, এই জাহাজের দায়িত্বে রয়েছেন অধিনায়ক মহসিন রেজা। এটি একটি উপকূলীয় টহল জাহাজ। এটি নদী এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার সিঙ্গাপুর থেকে বানৌজা মেঘনা জাহাজটি ক্রয় করে। ১৯ জানুয়ারি, ১৯৮৪ সালে জাহাজটিকে প্রথম বারের মত পানিতে ভাসানো হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে জাহাজটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।
জাহাজটির আকার আয়তন অপেক্ষাকৃত ছোট হলেও নদী এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে অভিযান পরিচালনায় এর সক্ষমতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।

শত্রু জাহাজ মোকাবেলা, চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে: ১টি ৫৭ মিমি বোফোর্স ডিপি কামান; ১টি ৪০ মিমি বোফোর্স বিমান বিধ্বংসী কামান; ২টি ৭.৬২ মিমি মেশিনগান। ৫৭ মিমি বোফর্স ডিপি কামানটি প্রতি মিনিটে ২.৪ কেজি ওজনের ২০০টি গোলা ১৭ কিলোমিটার দুরত্বে নিক্ষেপ করতে সক্ষম। ৪০ মিমি বোফোর্স কামানটি প্রতি মিনিটে ৩০০টি ০.৯৬ কেজির গোলা ১২ কিলোমিটার দুরত্বে নিক্ষেপ করতে সক্ষম।

সম্পর্কিত খবর