স্টাফ রিপোর্টার :চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারদের চিকিৎসার অবহেলার কারণে মডেল থানার বাবুর্চি হতভাগ অসহায় আলমগীর গাজী দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল।
সুস্থ সবল একজন ব্যক্তি প্রতিদিনের ন্যায় চাঁদপুর মডেল থানায় ক্যান্টিনে বাবুর্চি কাজের জন্য আসে। হঠাৎ করে তার বুকে ব্যথা শুরু হলে বাবুর্চি আলমগীর হেঁটে থানা থেকে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসা নেয়। জরুরি বিভাগ থেকে তাকে দ্বিতীয় তলায় কাঠিয়ার বিভাগে পাঠানো হলে মেঝেতে শুয়ে দিয়ে চিকিৎসা শুরু করে। হাসপাতালের মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জয়ন্ত মালাকার রোগীটিকের না দেখার কারণেই ভর্তি হওয়ার মাত্র ১০ মিনিট পরেই ছটফট করতে করতে তার স্ত্রীর মাথার উপরে মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে গিয়ে উপস্থিত হন।
একজন সুস্থ সবল ব্যক্তি চিকিৎসার অভাবে মরে যাওয়ার ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
কিছুদিন পূর্বে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই বিল্লাল একইভাবে অসুস্থ হয়ে নিজে হেঁটে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসার অভাবে তার মৃত্যু হয়।
দায়িত্বরত ডাক্তার ,নার্সদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে দিনের পর দিন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে রোগীদের করুন মৃত্যু হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রোগীর সজনরা।
নিহত আলমগীর গাজী চাঁদপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড পূর্ব রঘুনাথপুর মৃত হাসেম গাজীর ছেলে।
দীর্ঘ চার বছর যাবত চাঁদপুর মডেল থানায় ক্যান্টিনে বাবুর্চির কাজ করে জীবন জীবিকা নির্ভর করে আসছে।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় আলমগীর গাজী বাড়ি থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে যায়। হঠাৎ বুক ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসার অভাবে তার এই করুন মৃত্যু হয়েছে। এখন ৪ ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে কিভাবে চলবে এই সংসার।
সরকারি জেনারেল হাসপাতালে সকাল আটটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখার কথা থাকলেও ডাক্তাররা সময় মত হাসপাতালে না এসে প্রাইভেট চেম্বারে থাকার কারণে অসহায় রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ডাক্তারদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে অসহায় রোগীদের মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানান সচেতন মহল।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের কাঠিয়ার বিভাগে দায়িত্বরত মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জয়ন্ত মালাকার জানায়, রোগীটি হাসপাতালে আসার পর তাকে ইসিজি করানো হয়েছে। কিন্তু পুরোপুরি তার সমস্যা নির্ধারণ করতে না পারায় অল্প সময়ের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে। তবে রোগীটিকে জরুরি বিভাগের ডাক্তার দেখে উপরে পাঠিয়েছে। তারপরেই তার মৃত্যু হয়।