চাঁদপুর রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাথে মেয়রের মতবিনিময়

বিশেষ প্রতিনিধি : চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেছেন, পৌরবাসী ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা নিয়ে পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট, মশানিধন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ ও যানবাহন চলাচলসহ বিভিন্ন কাজ করে পৌর এলাকার উন্নয়ন করতে চাই। বিগত মেয়াদে যারা মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন, তারাও ভাল কাজ করেছেন। সে হিসেবে আমি আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে ভালভাবে কাজ করে চাই।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে চাঁদপুর পৌরসভার হলরুমে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি চাঁদপুর জেলা শাখার নেতা ও মালিকদের সাথে পৌর উন্নয়ন নিয়ে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, চাঁদপুর পৌরসভাকে সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রকার অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় না। পৌরসভা পৌর এলাকা থেকে যেসব ট্যাক্স উত্তোলন করেন, তা দিয়েই পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজ হয়। বর্তমানে পৌরসভার যে আয় হচ্ছে, তা দিয়ে পৌর এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। বর্তমান পরিষদ স্টাফদের বেতন ভাতা ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেও কোন প্রকার ঋণগ্রস্থ হচ্ছে না।

বিগত বছরে পৌরসভার স্টাফদের ৮মাস এবং সাড়ে ৮ মাসের বেতন বকেয়া ছিল। এ পরিষদ একমাসে এক কোটি ২২ লাখ টাকা বেতন প্রতিমাসে দিয়ে যাচ্ছে। বিগত বছর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল ২৭ কোটি টাকা। বিগত দিনে পানির বিদ্যুৎ বিলে ব্যয় হত ৩৫ লাখ টাকা। পোস্ট প্যাড মিটার ছিল ৫৮টি।

এতে সিস্টেম লস হত। এ পরিষদ দায়িত্ব নেয়ার পর ১ মাসের মাথায় মিটারগুলো প্রি-পেডে চলে গেলাম। ৪টি পোস্ট পেড এবং ৩৪টি প্রি-পেড করে দিয়েছি। এখন আর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকছে না। বর্তমানে ৭-৮ লাখ টাকার স্থলে ৪ থেকে সাড়ে ৪লাখ টাকা বিল আসছে। এখন প্রতিমাসের বিল প্রতিমাসেই পরিশোধ করা হচ্ছে।

মেয়র বলেন, যেখানে পানি খাতে ৩৫লাখ টাকা বর্তুকি দেয়া হত, তা এখন কমিয়ে ২২ কোটি টাকায় আনা হয়েছে। বর্তমান পরিশোধ ২৪ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছে। ৮ কোটি টাকা প্রজেক্ট থেকে এবং বাকী ১৬ কোটি টাকা নিজস্ব খাত থেকে ব্যয় হয়েছে। নতুন বরাদ্দ আসলে রাস্তার উন্নয়নে কাজ করা হবে। শহরের পুরো কাজ সম্পন্ন করা হলে ব্যাপক উন্নয়ন দেখা যাবে। দায়িত্ব নেয়ার পর ১৭৩টি অটোরিকশার লাইসেন্স বাতিল করেছি।

তিনি রেস্তোরাঁ মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, হোটেল রেস্তোরাঁর বর্জ্য সরাসরি ড্রেনে চলে যায়। এতে ড্রেনের পানির সমস্যা হচ্ছে ব্যাপকভাবে। তিনি বলেন, শহরের ডাস্টবিন তুলে দেব এবং ময়লা আবর্জনা পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মাধ্যমে নির্ধারিত স্থানে নিয়ে ফেলা হবে। এতেকরে পৌরসভার কোন স্থানে দুর্গন্ধ ছড়াবে না। ৭০-৮০টি পয়েন্টে ময়লা জমা করা যাবে না। ৮ থেকে ১০টি স্থানে ময়লা রেখে সেখান থেকে তুলে নেয়া হবে। দিনের বেলা যে ময়লা আবর্জনা জমে, সেগুলো রাতে পরিস্কার করা হবে। হোটেলগুলোর আবর্জনা জমা করে রাখলে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এসে নিয়ে যাবে।

মেয়র বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সকল প্রকার ব্যবসায়ী ও মালিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তাঁকে নির্বাচনে সকল প্রকার সহযোগিতা করার জন্য।

এ সময় বক্তব্য রাখেন পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম ভুঞা, পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর আয়শা খানম, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান হাওলাদার, কঞ্জারভেন্সী পরিদর্শক মো. শাহজাহান খান, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি, নুরুল আমিন লালু, সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আখন্দ, ক্যাফে কর্ণারের পরিচালক এমএ লতিফ, চাঁদপুর হোটেলের পরিচালক মো. জাকির হোসেন বেপারী, কৃষ্ণক্যাপের মালিক বীরমুক্তিযোদ্ধ অজিৎ সাহা ও রান্না বান্না হোটেলের মালিক আব্দুর রহমান প্রমূখ।

সম্পর্কিত খবর