আজ চাঁদপুরের ৫টি আসনে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে নৌকা-ঈগল প্রতীকে

চাঁদপুর খবর রিপোর্ট : আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারাদেশে একযোগে ভোটগ্রহণ চলবে। ভোটের দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

গত ৩ জানুয়ারী থেকে জেলার পাঁচটি আসনেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে তারা জেলা এবং উপজেলা শহরে টহল দিয়ে রাস্তা-ঘাট চিনে নিচ্ছেন। মাঠে নেমেছে সশস্ত্র বাহিনীও। কে হচ্ছেন আগামীর সংসদ সদস্য । তবে সাধারণ ভোটারদের বিভিন্ন আলোচনা বলছে, চাঁদপুর জেলায় ৫টি আসনের ৪টিতেই রয়েছে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী। শুরু মাত্র চাঁদপুর-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ড.সেলিম মাহমুদের সাথে ছোট-খাটো দলের দুই জন দুর্বল প্রার্থী। এরা হচ্ছে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর সেলিম প্রধান (চেয়ার), জাসদের মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম এর মশাল প্রতীক ।

চাঁদপুর-২ (মতলব দক্ষিণ-মতলব উত্তর) আসন থেকে ৫ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এখানে মায়ার অবস্থান সুদৃঢ়। তার প্রতিপক্ষরা ভিড় করেছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সি আই পি এম. ইসফাক আহসানের ঈগল প্রতীকের সাথে। বাকী প্রার্থীরা মাঠে থাকলেও তাদের নিয়ে তেমন কোন আলোচনা নেই এ আসনে। এখানে অন্য প্রতিদ্বদ্ধিরা হলেন, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. এমরান হোসেন মিয়া (নাঙ্গল), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. মনির হোসেন (একতারা) এবং জাসদ মনোনীত প্রার্থী মো. হাছান আলী সিকদার (মশাল) ।

চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসন থেকে ৭ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি ভোটের মাঠে ভোটারদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ভোটের দৌড়ে এ পর্যন্ত তিনি এগিয়ে আছেন। তবে এখানে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়ছেন, ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী চাঁদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ড. শামসুল হক ভূঁইয়া। রাজনীতির মাঠে প্রবীণ হওয়ায় নির্বাচন সম্পর্কে ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তাকে উৎসাহ যোগাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।

এ ছাড়াও এ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. মহসীন খানকে নাঙ্গল, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী আবু জাফর মো. মাইনুদ্দিন (মোমবাতি), জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. কাওছার মোল্লা (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ তরিকত মনোনীত প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান (ফুলের মালা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রেদোয়ান খান বোরহান ( ট্রাক প্রতীক) নিয়ে মাঠে আছেন।

চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসন থেকে ৮ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মুহম্মদ শফিকুর রহমানের সাথে মূল প্রতিদ্বদ্ধিতায় আছেন ঈগল প্রর্তীক নিয়ে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. মোহাম্মদ শামসুল হক ভূঁইয়া। এখানে শেষ পর্যন্ত কে নির্বাচিত তা বলা মুশকিল। এ আসনে আরও নির্বাচন করছেন নাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সাজ্জাদ রশিদ। সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে তৃণমূল বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুল কাদির তালুকদার। এছাড়াও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আব্দুল গনি( আম), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (বিটিএফ) বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী (ফুলের মালা) এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ আন্দোলন (বিএনএম) মনোনীত প্রার্থী ড. মোহাম্মদ শাহজাহান ( নোঙ্গর), এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জালাল আহমেদ( ট্রাক)।

চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসন থেকে ৬ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। তার মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। তার সাথে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ সফিকুল আলম (ট্রাক) এবং হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মাইনুদ্দিন (ঈগল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বদ্ধিতা আছেন। এ ছাড়া প্রার্থী ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ-সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মুজাদ্দেদী (চেয়ার), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের (বিটিএফ) বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী (ফুলের মালা), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মনোনীত প্রার্থী আক্তার হোসেন( ছড়ি)। প্রসঙ্গত গত শুক্রবার সকাল ৮টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) শরীফুল আলম জানান, ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টায় থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে। তার আগের ৪৮ ঘণ্টা হিসাবে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে সব ধরনের প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। এখন আর ভোট চেয়ে মাইকিংও করা যাবে না। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২৯৯ আসনে ১ হাজার ৯৭০ প্রার্থী নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন এবং তারা নিজ নিজ প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

২৮টি রাজনৈতিক দলের হয়ে লড়াই করছেন ১ হাজার ৫৩৪ প্রার্থী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন ৪৩৬ জন। ইতিমধ্যেই ভোটের দিন উপলক্ষে ওইদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শুক্র ও শনিবারও ব্যাংক খোলা রাখার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

 

সম্পর্কিত খবর