চাঁদপুরে বড়দিন উদযাপনে চার্চগুলোতে নানা প্রস্তুতি

চাঁদপুর খবর রির্পোট: সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও প্রভু যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন বড়দিন উদযাপনে বর্ণিল উৎসবের আয়োজনে মেতে উঠেছে খ্রিস্টিয়ান পল্লীর বাসিন্দারা।

দিনভর চার্চগুলো সাজস্বজ্জা ও একে অপরকে উপহার দেয়ার ভাবনায় কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময়। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নির্বিগ্নে বড়দিন উদযাপনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

২৪ ডিসেম্বর রোববার দিনব্যাপী শহরের ২টি খ্রিস্টিয়ান মিশনপাড়া ঘুরলে বড়দিনের সাজ সাজ উৎসবের আমেজ দেখা যায়।
চাঁদপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সম্পাদক সুভাষ মন্ডল বলেন, শহরের ২টি মিশন পাড়ায় ৩৫টি খ্রিস্টান পরিবারসহ সবমিলিয়ে প্রায় ২৫০ খ্রিস্টান ধর্মালম্বী লোক এ জেলায় রয়েছেন। যারা চাঁদপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চসহ মোট ৫টি চার্চে বড়দিনের মধ্য দিয়ে সর্বত্র প্রভু যিশুর শান্তির বার্তা পৌঁছাচ্ছেন। প্রশাসন থেকেও বড়দিনের আয়োজনে আমরা সর্বোচ্চ আইনী নিরাপত্তা পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছি।

জানা যায়, খ্রিস্টিয়ান ধর্মালম্বীদের জন্য এ জেলায় প্রধান উপাসনালয় হচ্ছে চাঁদপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চ। যেটি শহরের প্রেসক্লাব সড়কের কাছে অবস্থিত। যেই চার্চটির মোট সদস্য ১শ’ ৩০ জন। এছাড়াও শহরের গুনরাজদী, সদরের বাগাদীর গ্রাম পক্ষী দিয়া, লক্ষীপুরের বহরিয়া এবং হাইমচর চরভৈরবীতে একটি করে সর্বমোট ৫টি ব্যাপ্টিস্ট চার্চ রয়েছে।

বড়দিনের আনন্দ প্রকাশ করতে গিয়ে জেনিমা, দীর্ঘসহ অন্যরা বলেন, প্রভু যিশু খ্রিস্টের জন্মতিথির বাৎসরিক উৎসব বড়দিন উদযাপনে আমাদের সারা বছরের অধির আগ্রহ শেষ হচ্ছে রাতে। তাই আমরা এখন গোছালো ও পরিপাটিভাবে উৎসবের আমেজে উপহার প্রদান, সংগীত, বড়দিনের কার্ড বিনিময়, ধর্মোপাসনা, ভোজ, বড়দিনের বৃক্ষ রোপন, আলোকসজ্জা, মালা, যিশুর জন্মদৃশ্য এবং হলি সমন্বিত বিশেষ সাজসজ্জার প্রদর্শনী গোছাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি।

তারা আরও বলেন, এবার চাঁদপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে পাট দিয়ে স্টার, স্নোবেট, কাগজ দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি তৈরি করে সাজাচ্ছি। দিনটিতে সান্টাক্লজ বছর শেষে বিভিন্ন উপহার দিবে সেই প্রত্যাশায় রয়েছি। তাছাড়া একে অপরকে উপহার দেয়া এবং সকলে মিলে একত্রে প্রার্থণা করার আনন্দে মেতে উঠবো ভাবতেই খুব ভালো লাগছে।

বড়দিন প্রসঙ্গে চাঁদপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পালক রসি বর্মণ বলেন, মাতা মেরির গর্ভ আলো করে শান্তির বার্তা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন প্রভু যিশু খ্রিস্ট। বড়দিনে প্রভুর শান্তির সেই বার্তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে ধর্ম বর্ণ জাতি নির্বিশেষে সকলে বড়দিনের আনন্দে একি সহমর্মিতায় উপভোগ করবে প্রত্যাশা করছি। চার্চে সকালে প্রার্থণা, দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজ, সন্ধ্যায় ক্রিসমাস পোগ্রামে শিশুদের উপহার ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে বড়দিনের আনন্দ সবাই ভাগাভাগি করবে। এছাড়া মিশন পাড়ার প্রত্যেকটি গৃহে নগর কীর্ত্তন করায় এখন উৎসবের আমেজ চলছে। আমাদের আয়োজনকে সাফল্যমন্ডিত করতে সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করছি।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মোঃ শেখ মুহসীন আলম বলেন, খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের বড়দিনের ধর্মীয় উৎসবসহ সকল আয়োজনে নিরাপত্তা দিতে তৎপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নির্বিগ্নে বড়দিন উদযাপন করতে দিতে পুলিশ সজাগ রয়েছি।

সম্পর্কিত খবর