চাঁদপুরের ৫টি আসনে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে নৌকা

সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী : আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণায় এখন সরব চাঁদপুর জেলার ৫টি আসনে।

নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিনক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদেরও গণসংযোগ প্রচার-প্রচারণাসহ সব কিছুই চলছে খুব জোরেশোরে। চাঁদপুর জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে ২৯ প্রার্থীর প্রায় ১৫ প্রার্থী সমানতালে প্রচার-প্রচারণা করে ৫ আসনের অন্য প্রার্থীরা তা পারছেন না।

প্রার্থীরা গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও কর্মী সমাবেশ করছেন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বিরামহীনভাবে। নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী নিজে এবং তাদের কর্মী-সমর্থকরা দিনরাত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি দুপুর ২ টার পর থেকে মাইকে ভোটারদের নিজেদের মার্কায় ভোট প্রদানে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণা ও রকমারি স্লোগানে মুখর প্রতিটি সংসদীয় এলাকা। প্রার্থী ছাড়াও তাদের কর্মী-সমর্থকরা গ্রুপে-গ্রুপে ভাগ হয়ে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তবে ৫টি আসনের অধিকাংশ স্বতন্ত্র বা অন্য দলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা খুব কমই দেখা
যাচ্ছে।

চাঁদপুর ১ আসন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ সোমবার থেকেই নৌকার প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ উঠান বৈঠক পথসভা, ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় সহ নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

চাঁদপুর -২ সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এর সংসদীয় আসন মতলব উত্তর-দক্ষিণ এলাকায়ও সেজেছে নৌকার পোস্টারে। তিনি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা নির্বাচনী এলাকায় পথসভা গণসংযোগ উঠান বৈঠক এবং ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় অব্যাহত রেখেছেন।

চাঁদপুর- ৩ সদর ও হাইমচর আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির আসনে চাঁদপুর শহরের অলিগলিতে হাঁটলেই চোখে পড়ছে চারদিকে ঝুলিয়ে রাখা সাদাকালো পোস্টার। আসন্ন নির্বাচনের প্রচারণা যে শুরু হয়ে গেছে, তা চাঁদপুরের এই অলিগলির রাস্তার সাজসজ্জাতেই বোঝা যাচ্ছে। তবে সকল পোস্টারই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর ডাঃ দীপু মনির নৌকার। এ আসনে ডা দীপু মনি প্রতিদিন উঠান বৈঠক গণসংযোগ ভোটারদের সাথে কৌশল বিনিময় এবং পথসভা অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপাশি তার কর্মী ও সমর্থকরা ভিন্নভাবে নৌকার সমর্থনে লিফলেট, হ্যান্ডবিল বিতরণ, উঠান বৈঠক অব্যাহত রেখেছেন।

চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান প্রতীক পেয়েই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। প্রতিদিন তিনি ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন গ্রামে পথসভা, উঠান বৈঠক এবং ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় অব্যাহত রেখেছেন।

মুহম্মদ শফিকুর রহমান প্রথমবার পরাজিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে আবারও তাকেই পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেবার অল্প কিছু ভোটে হারেন তিনি, কিন্তু দমে যাননি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যা তাকে বেছে নেন সৎ এবং যোগ্য প্রার্থী হিসেবে। এবার তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রথিতযশা সাংবাদিক।

চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি): এ আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম নৌকার পক্ষে সভা সমাবেশ উঠান বৈঠক পথসভা অব্যাহত রেখেছেন। হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির অলিগলিতে হাঁটলেই চোখে পড়ছে চারদিকে ঝুলিয়ে রাখা সাদাকালো পোস্টার আর ব্যানারে। পাশাপাশি তার কর্মী ও সমর্থকরা ভিন্নভাবে নৌকার সমর্থনে লিফলেট, হ্যান্ডবিল বিতরণ, উঠান বৈঠক অব্যাহত রেখেছেন।

শুক্রবার ৫টি আসনের মধ্যে ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার অধিকাংশ অলিগলিতে নৌকার প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার ঝোলানো হয়েছে। নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকরা তাদের এলাকার মানুষদের কাছে হ্যান্ডবিল, লিফলেট বিতরণ করছেন। তার নির্বাচনী এলাকার অলিগলিতে নৌকারই পোস্টার ব্যানার দেখা গেছে। অন্য কোনো দলের প্রার্থীর পোস্টার কিংবা প্রচারণা সেখানে দেখা যায়নি।

প্রচারণার দিক থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও চাঁদপুরের পাঁচটি আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরব রয়েছেন। নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারাও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

সম্পর্কিত খবর