শাহরাস্তিতে ৩০ ঘন্টা পর স্থানীয় চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে মায়ের লাশ দাফন

স্টাফ রিপোর্টার : শাহরাস্তিতে একটি অমানবিক ঘটনা ঘটে গেল জন্মদাতা বাবা মাকে প্রচন্ড মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে সম্পত্তি দখল করে নেয় প্রবাসী ছেলে ও তার স্ত্রী।

পরিকল্পিতভাবে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাবাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ২৩ শতাংশ সম্পত্তি লিখে নিয়ে একতলা বাড়ি দখল করে নেয় ছোট ছেলে ওমান প্রবাসী মীর হোসেন। দীর্ঘ এক বছর চাঁদপুর পুরানবাজার বাসা ভাড়া থেকে চিকিৎসার অভাবে প্রবাসীর মা রহিমা বেগম মারা যায়।

লাশ দাফন করতে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসলেও বৃদ্ধ অসুস্থ বাবাকে ঘরের ভিতরে ঢুকতে দেয়নি প্রবাসীর ছেলের স্ত্রী ফারিয়া বেগম। মায়ের লাশ নিয়ে বাড়ির সামনে দীর্ঘ সময় বসে থাকে বাবা হাবিবুর রহমান। ৩০ ঘন্টা পর অবশেষে স্থানীয় চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে মায়ের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে। এই ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলা টামটা উত্তর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড বলশি দোয়েল বাড়ি গ্রামের প্রধানিয়া বাড়িতে।

বৃদ্ধ বাবা হাবিবুর রহমানকে নিজের বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। অবশেষে ত্রিপল নাইনের সংবাদ পেয়ে হাজীগঞ্জ থানার এস আই কিশোর সঙ্গীও ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আইএনএন টিভিতে সংবাদ প্রচারের পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে ছুটে যান শাহারাস্তি থানার তদন্ত ওসি মোঃ খাইরুল।

বাবা ছেলের সম্পত্তিগত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য মায়ের মিলাদ শেষে প্রশাসনিকভাবে বিষয়টি সমাধান করবে বলে আশ্বস্ত করেন।

ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়া বৃদ্ধ পিতা হাবিবুর রহমান জানান, ঢাকায় চাকরি করে শেষ উপার্জিত অর্থ দিয়ে বাড়িতে ছেলেদের জন্য একতলা বিল্ডিং নির্মাণ করে। চার ছেলে এক মেয়ে থাকলেও তিন ছেলে ঢাকায় থাকায় সুযোগ পেয়ে ছোট ছেলে মীর হোসেন জোরপূর্বক অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টিপসই দিয়ে ২৩ শতাংশ জায়গা লিখে নেয়। তারপর অমানসিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিলে চাঁদপুর পুরান বাজার একটি রুম ভাড়া নিয়ে স্বামী স্ত্রী বসবাস শুরু করে।

চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝির মেজো ছেলে সজীব মাঝি নিজে দেখাশোনার দায়িত্ব নেয়। চিকিৎসার অভাবে বৃদ্ধ স্ত্রী রহিমা বেগম মারা যাওয়ায় লাশ কবর দিতে এসে ঘরে ঢুকতে দেয়নি পুত্রবধূ ফারিয়া বেগম।

ছেলে জোরপূর্বক জায়গা লিখে নিলেও আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত দুইটি রায় দেয়। আদালতের রায় পেয়েও এখন বাড়িতে স্থান হয়নি। ছোট ছেলে মীর হোসেন ওমান চলে গেলেও তার স্ত্রী ফারিয়া বেগমকে বাদী করে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। পুত্রবধূর অত্যাচার থেকে বাঁচতে ও নিজের ঘরে স্থান পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বৃদ্ধ বাবা।

সম্পর্কিত খবর