পোল্ট্রি খাদ্য ও ঔষধের উর্দ্ধগতিতে চাঁদপুরে অধিকাংশ খামার বন্ধের উপক্রম

মোঃ মহসিন হোসাইন: অস্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থা, পোলট্রি খাদ্য ও ওষুধের দাম বৃদ্ধির বিপরীতে উৎপাদিত মুরগির দাম কম হওয়ায় হতাশা দেখা দিয়েছে চাঁদপুরের পোল্ট্রি শিল্পে। ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে জেলার অনেক খামার।

বেকার হয়ে পড়েছে এই শিল্পের অনেক শ্রমিক। পোল্ট্রি খাদ্য, মুরগির বাচ্চা ও ওষুধের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। অধিকাংশ খামারিরা লোকসান দিয়ে তাদের পুঁজি হারিয়ে খণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। এ পর্যন্ত জেলায় পোলট্রিসহ ৯৮৩টি খামার বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৮ উপজেলায় গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী, কবুতর ও কোয়েল পাখিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৯৫১৫টি খামার রয়েছে। এর মধ্যে ২৭৫ টি পোল্ট্রি ও ৭০৮টি ডেইরীসহ অন্যান্য মোট ৯৮৩ টি খামার বন্ধ হয়ে গেছে।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ৪৬৭ টি পোল্ট্রি ও ডেইরী খামারের নিবন্ধন আছে। এর মধ্যে চাঁদপুর সদরে পোল্ট্রি ৪৮টি ও ডেইরি ৫৬টি, কচুয়ায় পোল্ট্রি ৩২ টি ও ডেইরি ৬০টি, হাইমচরে পোল্ট্রি ১৯টি ও ডেইরি ২৫টি। মতলব উত্তর ও দক্ষিনে পোল্ট্রি ৫১টি ও ডেইরি ৫০টি, শাহরাস্তিতে পোল্ট্রি ২৫টি ও ডেইরি ১৭ টি, ফরিদগঞ্জে পোল্ট্রি ২৭ টি ও ডেইরী ২৯টি এবং হাজীগঞ্জে পোল্ট্রি ১৫টি ও ডেইরি ১৩টি নিবন্ধনকৃত খামার রয়েছে।

জেলায় ৪ ধরনের ডেইরি খামার রয়েছে। এদের মধ্যে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ৫১ গরু ও ছাগল উর্দ্ধের খামার হচ্ছে এ শ্রেণীর। জেলায় এ শ্রেণীর খামার রয়েছে ৪টি। ২১ থেকে ৫০ টি গরু ও ছাগল বিশিষ্ট্য খামার হচ্ছে “বি” শ্রেণীর। বি শ্রেণীর খামার রয়েছে ১৯টি। ১১ থেকে ২০ টি গরু ও ছাগল বিশিষ্ট খামার হচ্ছে সি শ্রেনীর। সি শ্রেণীর খামার রয়েছে ১৫৫টি। ৩ থেকে ১০টি গরু ও ছাগল বিশিষ্ট খামার ডি শ্রেণীর।

ডি শ্রেণীর রয়েছে ৪৭ টি ডেইরি খামার। এ সব খামার তদারকি করার জন্য সরকারিভাবে প্রতি উপজেলায় ১ জন করে মোট ৮ জন ফিল্ড অফিসার নিয়োজিত রয়েছেন। তাছাড়া সরকারিভাবে প্রতি উপজেলায় ১টি করে গাড়ি রয়েছে সেবার জন্য। রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য জেলায় সরকারিভাবে শ্রমিক রয়েছে প্রায় ২৬০ জনেরও বেশি ।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (পুষ্টি) মোঃ মোবারক হোসেন জানান, খামারগুলোতে আমরা চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সেবা পরামর্শ দিয়ে আসছি। খামারগুলোতে সরকারিভাবে কোন প্রনোদনা বা সাহায্য প্রদান করণে তা আমরা দিয়ে থাকি। বর্তমানে কোন প্রকার প্রনোদনা চালু নেই। তিনি বন্ধ হওয়া খামারের বিষয়ে জানান, পোল্ট্রি খাদ্যে

বিভিন্ন উপকরনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারগুলো বন্ধ হয়ে যায়। তাছাড়া অনেকের খণ হয়ে আছে।
চাঁদপুর জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক ডা. মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, চাঁদপুরে ৯১৮ টি ব্রয়লার পোল্ট্রি খামার ছিল। ৩০ শতাংশ খামার বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত বৈশ্বিক কারনে খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারনে অনেকগুলো বন্ধ হয়ে যায়। তবে খামারিদের বন্ধ হওয়া খামার পুনরায় চালু করতে তাদের আর্থিক সহায়তা দরকার। এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে আবার চালু করা সম্ভব হবে।

সম্পর্কিত খবর