ভুল চিকিৎসায় খান ডেইরি এন্ড এগ্রো ফার্মের বিশাল আকৃতির গরুর করুন মৃত্যু!

শওকত আলী : চাঁদপুরে জেলা পশু চিকিৎসক মকবুল হোসেনের ভুল চিকিৎসায় ও দায়িত্ব অবহেলার কারনে জোহান খান ডেইরি এন্ড এগ্রো ফার্মের বিশাল আকৃতির অস্ট্রেলিয়ান প্রজাতির কালো রঙ্গের গরুটির করুন মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্ট্রেলিয়ান প্রজাতির কালো রঙ্গের গরুটির মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে,চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের সেনগাও গ্রামের বিআইডব্লিউটিএ’ প্রজেক্টের জোহান খান ডেইরি এন্ড এগ্রো ফার্মে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়রিী) মৃত গরুটি ডেইরি ফার্মের পাশে মাটি গর্ত করে মাটি চাপা দেওয়া হয়।

ডাক্তার মকবুল হোসেন গরুটিকে নিজে না দেখেই রোগ নির্ণয় না করে মুঠোফোনে ভুল চিকিৎসা দেওয়ার কারণেই গরুর করুন মৃত্যু হয়। গরু মৃত্যুর ঘটনায় প্রজেক্ট মালিক জুয়েল খান অভিযোগ করে বলেন, অস্ট্রেলিয়ান প্রজাতির গরুটি হঠাৎ খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিলে চিকিৎসার জন্য ফার্মের দায়িত্বে থাকা মাসুম ও ইসমাইল তাদের মুঠো ফোন থেকে ডাক্তার মকবুল হোসেনকে ফোন করে তিনি রিসিভ করেনি।

পরবর্তীতে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে ফোন করে জানানো হলে তিনি সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মকবুল হোসেনকে ফার্মে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু পশু চিকিৎসক মকবুল হোসেন নিজে না গিয়ে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পিয়ন মামুন ও আলমগীর হোসেন হাজরাকে গরুর চিকিৎসার জন্য পাঠান।

গরুর অবস্থা অবনতির খবর পিয়ন মামুন ও আলমগীর হোসেন ডাক্তার মকবুল হোসেনকে অবগত করলে তিনি না এসে রোগ নির্ণয় না করেই মুঠোফোন ভুল চিকিৎসা দিয়ে ইনজেকশন পুশ করার জন্য নির্দেশ দেন।

ভুল চিকিৎসায় অবশেষে চার লক্ষ টাকার মূল্যের অস্ট্রেলিয়ান প্রজাতির গরুটি চোখের সামনে মৃত্যু হয়ে যায়।

অভিযোগ উঠেছে, ডাক্তার মকবুল হোসেন একটি গরু দেখার জন্য আড়াই থেকে চার হাজার টাকা ফি নিয়ে থাকেন। সরকারি চাকরি করে মানুষদের গরুর সেবা না দিয়ে নিজে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ফার্মের মালিক। আরো অভিযোগ উঠেছে,শুধু তাই নয় সরকারি ঔষধ অধিক দামে বিক্রি করে নিজেই লাভবান হচ্ছেন। চাঁদপুরে পাঁচ বছরের অধিক সময় চাকরি করে অবৈধ পন্থায় কোটি টাকার মালিক হন।
এ দুর্নীতিবাজ সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানান এলাকাবাসী।

এই বিষয়ে ফার্মের দায়িত্বে থাকা মাসুম ও ইসমাইল অভিযোগ করে বলেন, গরুর অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য ডাক্তার মকবুল হোসেনকে প্রায় ২০০ বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেনা। ডাক্তার মকবুল হোসেন নিজে না এসে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পিয়নকে পাঠিয়ে গরুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ভুল চিকিৎসার কারণে অবশেষে গরুটির করুন মৃত্যু হলো।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার মকবুল হোসেন জানান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নির্দেশে গরুর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য এসিস্টেন্ট মামুন ও উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনকে পাঠান হয়। তারা যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে সেই মোতাবেক মুঠোফোনে গরুটিকে ইনজেকশন দেওয়ার জন্য বলা হয়।
তবে কি কারনে এই গরুটির মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি।

গরুর চিকিৎসা দেওয়ার নামে অতিরিক্ত ফ্রি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা গরুর ফার্মের মালিকরা দিয়ে থাকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য না বলে জানান।

এদিকে ভুল চিকিৎসা ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে চার লক্ষ টাকার গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।

সম্পর্কিত খবর