চাঁদপুর শহরে দিনভর বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর শহরে সোমবার (৯ ডিসেম্বর ২০২৪) সারাদিন বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে বিবদমান একটি গ্রুপের উত্তেজনা বিরাজ ও হট্টগোল করতে দেখা গেছে।

এ ঘটনায় কাজী ইব্রাহিম জুয়েলের ছেলে কাজী আফতাব সামি ও সাংবাদিকসহ ১০জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চাঁদপুর সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে যৌথ বাহিনী সতর্ক অবস্থানের কারণে তা বড়ো ধরনের সহিংস ঘটনায় রূপ নেয়নি।

পরিস্থিতিতে জনমনে আতঙ্ক ছিলো বেশ। বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সোমবার উত্তেজনাকর পরিস্থিতির একটি দিন অতিবাহিত হয়েছে চাঁদপুর শহরে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই উত্তেজনা ছিলো কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সকল পদ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত ইব্রাহিম কাজী জুয়েলকে নিয়ে। জেলা বিএনপির নতুন কার্যালয়ের জন্যে জমি খরিদ করার বিষয়ে জেলার শীর্ষ নেতার নাম জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠে কাজী জুয়েলের বিরুদ্ধে।

এতে চরম ক্ষুব্ধ হন চাঁদপুর জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। আর এই অপপ্রচার জেলা বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত ইব্রাহিম কাজী জুয়েলের ইন্ধনে হচ্ছে এবং হয়েছে দাবি করে বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্যে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করে এর ব্যাখ্যাও দেয়া হয়েছে। অপরদিকে বহিষ্কৃত ইব্রাহিম কাজী জুয়েল এ ব্যাপারে পাল্টা প্রতিবাদ সভা বা সংবাদ সম্মেলন করার ঘোষণা দেন।

এ সংক্রান্ত ঘোষণা জুয়েল তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে প্রচার করেন। এ নিয়ে চাঁদপুর শহরকেন্দ্রিক বিএনপি নেতা- কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ও অসন্তোষ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সোমবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ওয়ার্ডভিত্তিক নেতা-কর্মীরা দলের সাংগঠনিক শান্তি- শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যে অবস্থান নেন এবং মিছিলও করেন।

দলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ইব্রাহিম কাজী জুয়েল যাতে সংবাদ সম্মেলন বা প্রতিবাদ সভা না করতে পারেন সেজন্যে শহরকেন্দ্রিক বিএনপির নেতা-কর্মীরা শহরের বিভিন্ন মোড়ে মহড়া দেন। দুপুরের পর বাসস্ট্যান্ড ও চক্ষু হাসপাতালের সামনের সড়কে দুটি গ্রুপ অবস্থান নিলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় সেখানে সেনা টহল এবং সদর মডেল থানা পুলিশ অবস্থান নিয়ে দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি বাহার মিয়া বলেন, জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আমরা পুলিশ ফোর্স নিয়ে সতর্ক অবস্থানে ছিলাম এবং কাউকে সংঘাতে জড়াতে দেয়া হয়নি। তবে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও কিছু ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আগের দিন সন্ধ্যায় কে বা কারা মোটরসাইকেল মহড়া এবং ককটেল বা আতশবাজি ফুটানোর মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে কাজী ইব্রাহিম জুয়েলের বাড়িতে হামলা-ভাংচুর-লুটপাট ও ছেলে কাজী আফতাব সামি গুরুতর আহত করা হয়েছে দাবি করে জুয়েল তার পক্ষ থেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। ইব্রাহিম কাজী জুয়েলের উপর ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীদের ক’জন জানান, ফ্যাসিবাদের দোসররা আবার মাথাচাড়া দিতে বিভিন্নভাবে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। ফ্যাসিবাদ রুখতে শান্তি-শৃঙ্খলার জন্যে আমরা শহরে মিছিল করেছি।

সম্পর্কিত খবর