চাঁদপুর খবর রির্পোট: শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ফরিদগঞ্জের গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজ।
রোববার (১৭ নভেম্বর ২০২৪) কলেজ ক্যাম্পাসে সৃষ্ট ঘটনায় শিক্ষক লাঞ্ছিত হবার প্রতিবাদে সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কলেজ গেইটে তালা বন্ধ করে আন্দোলন করে।
একই সময়ে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি অংশ শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এ সময় তাদের মধ্যে কয়েক দফা হাতাহাতি হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে পুলিশ এবং পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। তারা পরিস্থিতি শান্ত করে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজের পাঠদান অনির্দিষ্ট কালের জন্যে বন্ধ রেখেছে।
জানা গেছে, গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির স্ত্রীকে নির্বাচত করায় রোববার (১৭ নভেম্বর) কলেজ প্রাঙ্গণে বিএনপির একটি অংশ বিক্ষুব্ধ হয়ে মানববন্ধন করে। পরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে কিছু উশৃংখল লোকের হাতে দেলোয়ার হোসেন নামে কলেজের একজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হন। বিক্ষুব্ধরা এই সময়ে তাদের দাবি না মানায় কলেজের অধ্যক্ষের রুমের সিসিটিভি ক্যামেরার যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে কলেজ গেইটে তালা মেরে দেয়।
এদিকে সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে কলেজে এসে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীসহ কলেজের শিক্ষার্থীদের বড়ো একটি অংশ শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়া ও হামলা এবং কলেজ ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধের প্রতিবাদে কলেজ গেইটে তালা মেরে আন্দোলন শুরু করে।
অন্যদিকে কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির কিছু ছাত্র শ্রেণি শিক্ষা অব্যাহত রাখা ও রাজনীতি মুক্ত কলেজের দাবিতে অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীদের উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ সময় তাদের কয়েক দফা হাতাহাতিও হয়। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ এবং পরবর্তীতে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়, গৃদকালিন্দিয়া কলেজ রাজনীতি মুক্ত। কিন্তু রোববার কলেজে কমিটি নিয়ে আমাদের শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন লাঞ্ছিত হন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথেও অশোভন আচরণ করা হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা কলেজ গেইটে তালা মেরে এই ঘটনার বিচার দাবি এবং কলেজ ক্যাম্পাসকে রাজনীতি মুক্ত করার দাবিতে মাঠে নেমেছি। অপরদিকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একাংশ জানায়, এমনিতেই আমরা ক্লাস থেকে বঞ্চিত হয়েছি। কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে রোববার দিনও কলেজে পাঠদান ব্যাহত হয়।
আজও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গেইটে তলা মেরে ক্লাস বন্ধ রেখেছে। শিক্ষকরা আমাদের ক্লাস নিতে আগ্রহী। তাই আমরা শ্রেণি শিক্ষা অব্যাহত রাখতে ও কলেজকে রাজনীতি মুক্ত করতে আন্দোলনে নেমেছি।
ফরিদগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ হানিফ সরকার ও এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল আমাদের সাথে যোগ দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। কলেজ কর্তৃপক্ষ অনিদিষ্ট সময়ের জন্যে পাঠদান স্থগিত করেছে।
এ ব্যাপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌরি রাণী সাহা জানান, কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় পাঠদান অনির্দিষ্ট কালের জন্যে বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা সকলের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেবো।