চাঁদপুর খবর রির্পোট: চাঁদপুর শহরের তালতলা কর্ণফুলী হাসাপাতালে এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় গত ৬ নভেম্বর নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় চাঁদপুর সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ দায়ের করেন : চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষীপুর ইউপির (৮ নং-ওয়ার্ড) দোকানঘর, হাছান বেপারী বাড়ীর ভিকটিম ফারজানা বেগম (২০)। স্বামী- মোঃ জসিম বেপারী, পিতা-মোঃ হান্নান গাজী।
এতে বিবাদী করা হয়, ১। ডাঃ শামছুন নাহার তানিয়া, স্বামী- ডাঃ হাসানুর রহমান, সদর হাসপাতাল চাঁদপুর। (২) ডাঃ হাসানুর রহমান, (নিঃসন্তান দম্পত্তির চিকিৎসক), সদর হাসপাতাল চাঁদপুর সাং- পূর্ব নাজির পাড়া (আবুলের দোকান), এলাহী মসজিদের পাশে, ৩। ডাঃ মোঃ মামুন, ৪। মোঃ কাউসার, (তালতলা কর্নফুলী হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষদ্বয়), ওয়ার্ড নং- ৯, চাঁদপুর পৌরসভা, চাঁদপুর সদর, চাঁদপুরগণকে। জানা যায়, অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই মহসিন। পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেছে বাদী। থানায় রফাদফা করার চেষ্টার করছে। থানায় আপোষ করতে দৌঁড়ঝাপ চলছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে বিবাদী ডাক্তার পক্ষ তৎপর হয়ে উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে তালতলা কর্নফুলী হাসাপাতালে মালিক শেয়ার ডাঃ শামছুন নাহার তানিয়া ও তার স্বামী- ডাঃ হাছানুর রহমান। সরকারি চাকুরী করে কিভাবে শহরে প্রাইভেট হাসপাতালের মালিকানা হন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়গুলো তদন্ত হওয়া জরুরী।চাঁদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ ও যৌথবাহিনী এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন ভোক্তভোগী পরিবার।
জানা গেছে, বতমানে ভিকটিম চাঁদপুর শহরের প্রিমিয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থাও আশংকাজনক। এ ব্যাপারে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী বিভাগ) ডাঃ হাসানুর রহমান গতকাল ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় দৈনিক চাঁদপুর খবরকে জানান, নবজাতকের মৃত্যুর ব্যাপারে আমার স্ত্রী ডাঃ শামছুন নাহার তানিয়ার চিকিৎসায় কোন অবহেলা ছিলো না। বিভিন্ন কারনে গর্ভবতী বাচ্চার মৃত্যু হতে পারে। এটা সম্পুন্ন আল্লাহর ইচ্ছা। এখানে ডাক্তারের কিছুই করার ছিলো না। প্রসূতি মা এখন প্রিমিয়ার হাসাপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আমারা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। আমার স্ত্রী ডাঃ শামছুন নাহার তানিয়া ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজহার সূত্রে জানা যায়, ১নং ও ২নং বিবাদীদ্বয় স্ত্রী রোগ, প্রসূতি বিদ্যা বিশেষজ্ঞ ও সার্জনকারী ডাক্তার। বাদী বিগত ৭ মাস যাবৎ গর্ভবর্তী অবস্থায় ছিলাম। এমতাবস্থায় বাদীর গর্ভধারণ করা শিশুর শাররিক অবস্থা পরিক্ষা করার জন্য বিগত ২/১১/২০২৪ইং তারিখে উল্লেখিত ১নং বিবাদীর সহিত গিয়ে আমার পেটের আলট্রা: করাই এবং প্রাথমিক চিকিৎসায় আমার পেটে ধারণ করা শিশুর শাররিক অবস্থা ভালো পাওয়া যায়। ১নং বিবাদী আমাকে প্রাথমিক কিছু ঔষধ প্রদান করে।
উক্ত ঔষদগুলো আর্থিক সমস্যার কারনে ১ দিন পর ঔষধ গুলো এনে সেবন করি। পরবর্তী ২ (দুই) দিন ঔষধ সেবন করা অবস্থায় গত ০৫/১১/২০২৪ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১০.০০ ঘটিকার সময় আমার শাররিক অবস্থা গুরুত্বর দেখে দ্রুত ১নং বিবাদীকে ফোন এর মাধ্যমে যোগাযোগ করিলে আমাকে তার চেম্বারে যাওয়ার জন্য বলে।
একপর্যায়ে ১নং বিবাদীর চেম্বারে উপস্থিত হইলে আমাকে আলট্রা: করানো হয় এবং বহু সময় অপেক্ষা করে আল্টা করার ৫ ঘন্টা পর ১নং বিবাদী আমাকে উল্লেখ্য প্রতিষ্ঠান তালতলা কর্নফুলী হাসাপাতালে রেফার করে। পরবর্তীতে উক্ত হাসপাতালে আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পর হটাৎ হাসপাতালে উপস্থিত থাকা ১নং বিবাদী আমার গর্ভধারনে ৭ মাসের শিশু মৃত বলে ঘোষনা করে এবং নরমাল ডেলিভারি করার প্রস্তাব করে।
উল্লেখিত বিবাদীগনের ভুল চিকিৎসা ও মিথ্যা বানোয়াট কথা বলার কারনে আমার পেটে গর্ভধারন করা শিশুর অবস্থা গুরুত্বর হয় এবং মারা যায়।
বহু সময় অপেক্ষা করে মারা যাওয়া কারন জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিবাদীগণ আমাদের কথায় কোনো প্রকার কর্নপাত করে না এবং একপর্যায়ে অত্র প্রতিষ্ঠান বিবাদীগনসহ হাসপাতালে উপস্থিত সকল নার্স ও ডাক্তার সকলে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। সর্বপরি ১নং ও ২নং বিবাদীর বাসস্থানে উপস্থিত হইয়া বিবাদীদ্বয়ের সাথে মতবিনিময় করিতে চাইলে বিবাদীদ্বয় তাদের বসত ঘরের ভিতর হইতে তালাবন্ধ করে এবং প্রকাশ্যে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে থাকে।