ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, ফকিহ ও মুহাদ্দিসকে তলব!

চাঁদপুর খবর রিপোর্ট : চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার ফকিহ ও মুহাদ্দিস পদে নিয়োগের বিষয়ে অভিযোগ তদন্ত সংক্রান্তে তলব করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর পরিদর্শণ চটগ্রাম বিভাগ শাখা ঢাকা ।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ৫৭.২৫.০০০০.০১০.১০.০০৫.২২.৭৩৫ নং স্মারকে স্ব-শরীরে উপ-পরিচালক (অর্থ), মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নিকট ১৩/১১/২০২৪ খ্রি. তারিখ বুধবার সকাল ১১ ঘটিকায় ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ করা হয়।

স্মারকে উল্লেখিত বিষয় থেকে জানা যায়, উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এইচ এম আনোয়ার হোসেন মোল্লা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপি ও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর, ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) এর পরিশিষ্ট (ঘ) এর বিধি লঙ্ঘন করে ফকিহ ও মুহাদ্দিস পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন মর্মে একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে এবং উক্ত বিষয়ে একাধিক অভিযোগ অধিদপ্তরে দাখিল করা হয়েছে।

এমতাবস্থায়, প্রকাশিত সংবাদ ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে বর্ণিত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এইচ এম আনোয়ার হোসেন মোল্লা, হাবিবুর রহমান মোল্লা এবং মোঃ মোশারফ হোসেনকে স্ব-শরীরে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উপস্থিত হযে উপ-পরিচালক (অর্থ), মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নিকট ১৩/১১/২০২৪ খ্রি. তারিখ বুধবার সকাল ১১ ঘটিকায় ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

প্রসঙ্গত, বিধি বহির্ভূত ও অনিয়মের অভিযোগে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার মজিদিয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস ও ফকিহ নিয়োগ বাতিল করা হয়।

বিধি বহির্ভূত ও অনিয়মের অভিযোগ উঠে মজিদিয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস ও ফকিহ নিয়োগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখা লেখি হয়েছে। মুহাদ্দিস পদে নিয়োগ পেয়েছে চাঁদপুর সদরের মান্দারী আলিম (প্রস্তাবিত ফাজিল) মাদরাসার আরবী প্রভাষক মোঃ মোশাররফ হোসেন আর ফকিহ পদে নিয়োগ পেয়েছেন উপজেলার কামতা ডি. এস. ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার হাবিবুর রহমান মোল্লা।

অভিযোগ উঠেছে আপন ভাইকে নিয়োগ দিতে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি এইচ এম আনোয়ার হোসেন মোল্লা। মাদ্রাসার ফকীহ ও মুহাদ্দিস নিয়োগে এ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অধ্যক্ষ আনোয়ার মোল্লার ভাই হাবিবুর রহমান মোল্লা উপজেলার কামতা ডি. এস. ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় এবং মোঃ মোশারফ হোসেন মান্দারী আলিম (প্রস্তাবিত ফাজিল) মাদ্রাসায় কর্মরত ছিলেন। নিয়মানুসারে পদ দুইটিতে নিয়োগ পেতে ফাযিল/কামিল মাদ্রাসায় ৮ বছর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু অভিজ্ঞতা ঘাটতি থাকার পরও ভাই হাবিবুর রহমান মোল্লাকে ফকীহ পদে এবং মোশাররফ হোসেন নামে অপর একজনকে মুহাদ্দিস পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেন অধ্যক্ষ মুফতি এইচ এম আনোয়ার হোসেন মোল্লা।

এদের মধ্যে মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে বিগত সময়ে কাগজপত্র জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বেতন গ্রেড অবনতি হয়েছে বলে জানা গেছে। আলিম পর্যায়ের এমপিওর অভিজ্ঞতা নিয়ে দুই জন শিক্ষক কিভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছালেন? আবেদন যাচাই বাছাইয়ে কেন তাদের অযোগ্যতাসমূহকে আমলে নেওয়া হয়নি? এ সকল প্রশ্নের সদুত্তোর দেননি অধ্যক্ষ আনোয়ার মোল্লা। আপন ভাইকে নিয়োগ প্রদানের স্বার্থে তিনি এ অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের কারণে মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সদস্য মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেননি। এমন অভিযোগের সত্যতা তিনি নিশ্চিত করেন।

সার্বিকভাবে অনিয়মের দায় তিনি এড়াতে পারেন কিনা? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি দায় এড়াতে পারেননা বলে স্বীকার করেন। অনিয়মের দায়ে তিনি পদত্যাগ করবেন কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি পদত্যাগ করবেন না বলে জানান।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ এইচ এম আনোয়ার মোল্লা বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে অনিয়ম হয়েছে তার দায় আমি এড়াতে পারিনা। এই নিয়োগ বাতিল করে শীঘ্রই গভর্নিং বডির সভার মধ্য দিয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে।

 

সম্পর্কিত খবর