স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ইস্যুতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে ওই কলেজ ক্যাম্পাসে শ্রেণি শিক্ষা ও পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে এই ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের পর গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হরিপদ দাসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে কলেজে মিছিল সমাবেশের কারণে দীর্ঘদিন তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। সম্প্রতি রাজনৈতিক সমীকরণে তিনি কলেজে যোগদান করেন।
এনিয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে একটি পক্ষ। এরই জের ধরে মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় একদল শিক্ষার্থীর সাথে ফরিদগঞ্জ থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচয় দিয়ে একদল যুবক কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মিছিলের এক পর্যায়ে কলেজের ভবনে তালা মেরে দেয়।
অপরদিকে অধ্যক্ষের পক্ষে কলেজের শিক্ষার্থীর একাংশ, স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের একটি অংশ ঘটনা শুনে কলেজ ক্যাম্পাসে আসলে দুই পক্ষ মুখোমুখিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে অন্তত ৮জন আহত হয় বলে স্থানীয়রা জানায়।
আহতদের মধ্যে কামরুল হাসান (১৮), শাহরিয়ার নাফিস (১৭), ফাহিম (১৯) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।
কলেজ শিক্ষার্থী সানজানা মনির ইভা, মেহেদী হাসান, রাকিবসহ কয়েকজন জানান, ক্লাস চলাকালিন সময়ে বহিরাগতরা কলেজে এসে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছে। আমরা কোন স্যারের পদত্যাগ চাই না। তারা আমাদের কলেজে তালা মেরে দিয়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে পরীক্ষার ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। পরে আমরা তাদের প্রতিহত করেছি।
স্থানীয় লোকজন আরও জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে অধ্যক্ষ হরিপদ দাস কলেজে অনুপস্থিত থাকায় কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হরিপদ দাসের পদত্যাগ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেয়। এরই মধ্যে তিনি রাজনৈতিক সমঝোতায় কলেজে যোগদান করেছেন।
তারা আরো জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অধ্যক্ষ হরিপদ দাসের অনিয়ম দূর্নীতি দৃশ্যমান রয়েছে। কি কারণে তার দুর্নীতির বিচার হলো না, তা আমাদের বুঝে আসেনা।
কলেজ অধ্যক্ষ হরিপদ দাস জানান, কলেজ শিক্ষার্থী ও এলাকার লোকজন আমাকে কলেজ পরিচালনায় সহযোগিতা করছেন। কিন্তু আজ সকালে কয়েকজন যুবক এসে আমাকে নানাভাবে প্রশ্ন করার এক পর্যায়ে হেনস্তা চেষ্টা করে। এসময় কলেজ শিক্ষার্থীরা তাদের রুখে দাঁড়ায়।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হানিফ সরকার জানান, অধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা সেখানে অবস্থান নেয়। এমন সংবাদে পুলিশ সেখানে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।