চাঁদপুর খবর রির্পোট: চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬নং মৈশাদী ইউনিয়ন বিএনপির অফিসে হামলার ঘটনায় হামলাকারী ১নং আসামী সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য মো: শাহাদাত গাজী, পিতা-আবুল গাজী, সন্ত্রাসী ২নং আসামী সালাউদ্দিন মৃধা (৩৭), পিতা-হাকিম মৃধা ও সন্ত্রাসী ১১নং আসামী জসিম বেপারী (৪৫), পিতা-আতিক উল্লাহ বেপারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে আদালত আসামীদের জামিন না-মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরন করেন।
২৬ অক্টোবর (শনিবার) চাঁদপুর সদর মডেল থানার মামলা নং-৪০, তারিখ-২৬/১০/২০২৪খ্রিস্টাব্দ, ধারা-১৪৩,৪৪৮,৩২৩,৩২৪,৩২৫,৩২৬,৩০৭,৪২৭, ৫০৬ (২), পেনাল কোড-১৮৬০ এর মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় হামলাকারী ও মামলার ১নং আসামী শাহাদাত গাজীকে চাঁদপুর সদর হাসপাতাল থেকে এবং দিবাগত রাতে ২নং আসামী সালাউদ্দিন মৃধা ও ১১নং আসামী জসিম বেপারীকে গ্রেফতার করে চাঁদপুর সদর থানা পুলিশ।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী মোঃ ওমর ফারুক (২৮), পিতা-শাহজাহান গাজী, সাং-মৈশাদী, পোঃ-মৈশাদী, উপজেলা-চাঁদপুর সদর জেলা-চাঁদপুর।
এজহারভুক্ত অন্য আসামীরা হলো-৩নং আসামী সাগর (৩০), পিতা-বাবুল গাজী, ৪নং আসামী বাবু মুন্সি (৩৫), পিতা-মৃত তাফু মুন্সি, ৫নং আসামী জয়নাল মৃধা (৩৭), পিতা-খালেক মৃধা, ৬নং আসামী পেয়ার বেপারী (২৬), পিতা-মোস্তফা বেপারী, ৭নং আসামী সুজন গাজী সুটার নলেজ (২৮), পিতা-হান্নান গাজী, ৮নং আসামী মোবারক হোসেন মিজি (৪৫), পিতা-নুরু মিজি, ৯নং আসামী রবিউল মিজি (২২), পিতা- মোবারক হোসেন মিজি, উভয় সাং-মৈশাদী, ৩নং ওয়ার্ড, ১০নং আসামী জুম্মন বেপারী (২২), পিতা-কালু বেপারী, ১১নং সিহাব বেপারী (২২), পিতা-মৃত আলমগীর বেপারী, ১৩নং আসামী রুবেল পাটোয়ারী (৩৮), পিতা-শাহজাহান পাটোয়ারী, ১৪নং আসামী জাবেদ পাটোয়ারী (৩৭), পিতা-সিরাজ পাটোয়ারী, ১৫নং আসামী ফারুক খান (৩৫), পিতা-মৃত আসলাম খান, ১৬নং আসামী কবির মুন্সি (৩০), পিতা-অজ্ঞাত, ১৭নং আসামী মোঃ উজ্জল (২৫), পিতা-অজ্ঞাত, ১৮নং আসামী হাসান গাজী (৩২), পিতা-মৃত ইউসুফ গাজী, সর্ব সাং-উত্তর মৈশাদী, পোঃ-মৈশাদী, থানা ও জেলা-চাঁদপুর সহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামী করা হয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বাহার মিয়া জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। মামলান ১নং আসামী শাহাদাত গাজী, ২নং আসামী সালাউদ্দিন মৃধা ও ১১নং আসামী জসিম বেপারীকে আটক করা হয়েছে। আটকৃত আসামীদের জামিন না-মঞ্জুর করে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করেছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। ১নং আসামী মো: শাহাদাত গাজী, পিতা-আবুল গাজী নাশকতা মামলারও আসামী করা হয়েছে । সে ছাত্রলীগের সক্রীয় সদস্য ।
এ ঘটনাটি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকও অবগত করা হয়েছে ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে,চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদি ইউনিয়নের তালতলা বাজারে ফিল্ম স্টাইলে অস্ত্র নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিছে। পেশীশক্তি দেখিয়ে সন্ত্রাসীরা এ কাজ করেছে । এই ঘটনায় প্রতিবাদ করায় যুবদল ও ছাত্রদলের প্রায় ১০ জন নেতাকর্মীকে কুপিয়ে গুরুত্ব আহত করেছে। শুক্রবার রাতে মৈশাদী তালতলা বাজারে সালাউদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে শাহাদাত গাজী ,অস্ত্রধারী তাপু মুন্সির ছেলে বাবু মুন্সী হারুন বেকারিতে গিয়ে ভয় দেখিয়ে হামলা চালায়। এ সময় সিসি ক্যামেরার ফুটেছে স্পষ্ট ভাবে ধারালো অস্ত্র হাতে নিয়ে ফিল্মি স্টাইলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে দেখা যায়।
অস্ত্র নিয়ে হামলা ও চাঁদাবাজির ঘটনায় তিন সন্ত্রাসীকে আটক করেছে মডেল থানা পুলিশ।
হঠাৎ করে অতর্কিতভাবে চাঁদার দাবিতে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া ও ঝঞ্জনানির আওয়াজে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ব্যবসায়ীরা। তালতলা বাজারে চাঁদাবাজির ঘটনার প্রতিবাদ করার পরপরই ইউনিয়ন বিএনপি অফিস ভাঙচুর চালিয়ে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাদের উপর হামলা চালায়।
এ সময় হামলায় আহত বিএনপি,যুবদল ও ছাত্রদলের মনির গাজী, সেলিম বেপারী ,রুবেল বেপারী, শাহিন গাজী, জাহিদ দেওয়ান, বোরহানকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল এনে চিকিৎসা করানো হয়।
আহতদের দেখতে ইউনিয়ন বিএনপি’র যুবদল ছাত্রদল সহ সদর উপজেলা যুবদলের নেতারা হাসপাতালে গিয়ে ভিড় জমায়।
এই ঘটনায় ওমর ফারুক বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই কামাল হোসেন প্রধান আসামি শাহদাত গাজী, দ্বিতীয় আসামি সালাউদ্দিন মৃধা ও ১২ নাম্বার আসামি জসীম বেপারীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মৈশাদী ইউনিয়নে চাঁদাবাজির ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রধান ও দ্বিতীয় আসামিসহ তিনজনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে অচিরেই গ্রেফতার করা হবে বলে জানায়।
এদিকে মৈশাদি ইউনিয়নের তালতলা বাজারে রাজনৈতিক দলের নব্য নেতারা এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটেছে বলে জানায়। এই ঘটনায় আরো যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানান আহতদের পরিবার বর্গ।
এলাকাবাসী আরো জানায়, ২৫ অক্টোবর বিকেলে মৈশাদী ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে মৈশাদী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ী এবং বহু মামলার আসামি সালাউদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলায় বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত ও জখম হয়।
বর্তমানে তাঁরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন এবং একজনকে ঢাকা রেফার করা হয়েছে। এ খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক সদর থানা পুলিশ ছাত্রলীগের কর্মী মো: শাহাদাত গাজী, পিতা আবুল গাজী, ঘটনার নাটের গুরু সালাউদ্দিন মৃধা, পিতা মৃত হাকিম মৃধা এবং ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মী এবং এলাকার ত্রাস জসিম বেপারী, পিতা আতিকুল্লাহ বেপারীকে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করেন। এতে আমরা এলাকাবাসী পুলিশের পেশাদারিত্ব কার্যক্রমে এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে আসে। পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এলাকাবাসী জানায় উত্তর মৈশাদীতে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী যারা মেয়েদেরকে ইভটিজিং করা সহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। ইয়াবা ব্যবসায়ী ডিলার ও মাদকাসক্ত বাবু মুন্সী, পিতা তাপু মুন্সি, রুবেল পাটোয়ারী, পিতা-শাহজাহান পাটোয়ারী এদেরকেও দ্রুত গ্রেফতার করে এলাকার শান্তি বজায় রাখতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উক্ত মামলার ১নং আসামী মো: শাহাদাত গাজী, পিতা-আবুল গাজী নাশকতা মামলারও আসামী। সে ছাত্রলীগের সক্রীয় সদস্য। চাঁদপুর সদর মডেল থানার মামলা নং -২৫, তারিখ-২৭ আগস্ট-২০২৪খ্রিস্টাব্দ, ধারা-১৪৩/১৪৯/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/ ৩০৭/৩৭৯/৪৩৬/৪২৭/৫০৬(২)/১০৯ পেনাল কোড, ১৮৬০ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। চাঁদপুর সদর থানা সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।