ঘটছে দুর্ঘটনা : ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে উঠানামা করছে মধুরোড রেল স্টেশনের যাত্রীরা

মাসুদ হোসেন : ‘আনন্দ ভ্রমন আর নিরাপদ জীবন’ বাংলাদেশ রেলওয়ে যোগাযোগ। চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের মধুরোড রেলওয়ে স্টেশন নানা সমস্যায় জর্জরিত। এতে করে প্রতিনিয়ত যাত্রীরা পোহাচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

বিশেষ করে স্টেশনটির ফ্লোর মারাত্মকভাবে দেবে যাওয়ায় প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উঠানামা করতে গিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে মারাত্বক ভাবে আহত হচ্ছে বলে অনেক ভুক্তভোগী যাত্রীর অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মধুরোড রেলওয়ে স্টেশনের পূর্ব পাশে ট্রেনে যাত্রীদের উঠানামা সহ চলাচলের যে স্থান রয়েছে সে পথের একটি স্লাভের নিচের বালি সরে গিয়ে এক ফুটের মত দেবে গিয়েছে।

এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা। এছাড়াও যাত্রীদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে স্থাপিত প্লাটফর্মের কয়েকটি বেস্টনিও ভেঙ্গে ফেলায় নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছে যাত্রী সাধারণ। সেই সাথে এই স্টেশনের প্লাটফর্মে নেই যাত্রীদের বসার কোন ব্যবস্থা। এতে খুব কস্ট করে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বৃদ্ধ সহ সকল বয়সী যাত্রীগণকে। স্টেশনের ভিতরের একটি কক্ষে যাত্রীদের বসার জন্য কয়েকটি চেয়ার থাকলেও সেখানে যাননি যাত্রীরা।

কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, আমরা এই স্টেশন থেকে প্রায় সময় চট্টগ্রাম, লাকসাম সহ ট্রেনে করে বিভিন্ন স্টেশনে যাতায়াত করে আসছি। কিন্তু মধুরোড স্টেশনের চলমান কয়েকটি সমস্যা যাত্রীদেরকে মারাত্মক দুর্ভোগে ফেলে দেয়। আমরা এই সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি। অত্র এলাকার বাসিন্দা মামুন হোসেন ও ফারুক বেপারী জানান, আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি, এই স্টেশনের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।

পুরনো এই স্টেশনের উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য যাত্রী যাতায়াত করে আসছে। কিন্তু বিগত কয়েকদিন যাবত স্টেশনের পূর্ব দিকে একটি স্লাভ দেবে গিয়ে যাত্রীরা উঠানামায় মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। গত ৩-৪ দিন আগেও কয়েকজন যাত্রী চট্টগ্রামগামী সাগরিকা ট্রেনে দৌড়ে উঠতে গিয়ে দেবে যাওয়া স্লাভে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়াও রাতের বেলায় মেঘনা ট্রেন থেকে নামতে ও উঠতে গিয়েও আহত হয়েছেন অনেকে।

এ বিষয়ে মধুরোড রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার বলেন, আমি প্রায় দেড় মাস হবে এখানে এসেছি। এসেই স্টেশনের কয়েকটি সমস্যা লক্ষ্য করে আসছি। তবে গত কয়েকদিন যাবত প্লাটফর্মের একটি স্লাভ দেবে যাওয়ার কারনে ছোট বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন কয়েকজন যাত্রী। নিচের বালি পার্শ্ববর্তী জমিতে সরে গিয়ে আরেকটি স্লাভও দেবে যাওয়ার উপক্রম প্রায়। এই সমস্যাটির কথা চাঁদপুর ডিইএন কে জানানো হলে তারা এখানে এসে দেখে যান।

সোলাইমান হোসেন নামে চাঁদপুরের এক রেলওয়ে কর্মকর্তা বলেন, ১৫ ফুটের একটু স্লাভ দেবে গিয়েছে, আরেকটি স্লাভও আশংকাজনক। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখে এসে লাকসাম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

এমনকি সমস্যাটির ছবিও তুলে এনে ওখানে পাঠিয়েছি। নির্দেশনা এলে পরবর্তী প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

এ বিষয়ে লাকসাম ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী কর্মকর্তা শহীদ উল্যাহ দৈনিক চাঁদপুর খবরকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। সংশ্লিষ্ট স্টেশন মাষ্টার সমস্যাটির কথা আমাকে জানান নি। তারপরও আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করে সরেজমিনে গিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবো।

সম্পর্কিত খবর