
সমির ভট্রাচার্য্য : আজ মহাসপ্তমী গতকাল মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ।
গত বুধবার (৯ অক্টোবর)। মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে রোববার (১৩ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৫ দিনব্যাপী এ উৎসব।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বোধন। শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে এই বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিন্দ্রা ভাঙ্গার জন্য বন্দনা পূজা করা হবে। মন্ডপে-মন্দিরে মঙ্গলবার পঞ্চমীতে সায়ংকালে তথা সন্ধ্যায় এই বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার ষষ্ঠীপূজার মধ্যে দিয়ে সূচনা ঘটবে পাঁচদিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসব।
বোধন দুর্গাপূজার অন্যতম একটি আচার। বোধন শব্দের অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্ত। পূজা শুরুর আগে সন্ধ্যায় বেলশাখায় দেবীর বোধন দুর্গাপূজার একটি অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। শরৎকালের দুর্গাপূজায় এই বোধন করার বিধান রয়েছে। বিভিন্ন পূরাণ অনুসারে ভগবান রামচন্দ্র শরৎকালে রাক্ষসরাজ রাবণকে বধ করার উদ্দেশ্যে দুর্গাপূজা করেন।
লোকনাথ পঞ্জিকা অনুযায়ী, ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী ও ১২ অক্টোবর মহানবমী এবং ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি ঘটবে শারদীয় দুর্গোৎসবের।
শেষ মূহুর্তে মন্ডপে মন্ডপে নিখুঁত তুলির আঁচড়ে ফুঠে উঠেছে দেবী দূর্গার অনন্যসুন্দর অভয়াদানকারী রূপ। মতলব দক্ষিন উপজেলার ৩৩ টি পূজা মন্ডপসহ চাঁদপুর জেলায়,মোট ২২১ টি পূজামন্ডপে
এবার দুর্গাপূজো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
আগামীকাল বুধবার সকাল ৮টা ৪৪ সেকেন্ডের মধ্যে মহাষষ্ঠী কল্পনারম্ভ শেষ করতে হবে। সায়ংকালে দেবীর অধিবাস ও আমন্ত্রণ। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৫৩ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের মধ্যে দেবীর মহাসপ্তমী পুজা শেষ করতে হবে। ১১ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ৬টা ৫২ মিনিটের মধ্যে মহাষ্টমী পূজা এবং ৬টা ৫২ মিনিটে আরস্ত, এরপরেই কুমারী পূজা। পরে ৭টা ৪১ মিনিটের মধ্যে সন্ধী পূজা শেষ করতে হবে।
ওইদিনই সকাল ৭টা ৪১ মিনিট পর মহানবমী আরস্ত ও ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে মহানবমীর বিহিত পূজা শেষ করতে হবে। ১২ অক্টোবর শনিবার ৬টা ১২ মিনিটের মধ্যে মহানবমীর বিহিত অধিক পূজা শেষ করতে হবে। একই দিন সকাল ৭টা ৩৭ মিনিট গতে পূর্বাহ্নের মধ্যে দশমী পূজা সমাপন এবং দশমী পূজা সমাপনান্তে বিসর্জন। ১৩ অক্টোবর রবিবার প্রতীমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনব্যাপী শারদোৎসব। দেবী দুর্গা এবার ধরণীতে আসছেন দোলায় চড়ে। ফিরবেন ঘোটকে করে।
পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি প্রায়ই শেষ হয়েছে। সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ।
এদিকে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে সারাদেশের পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এবারের দুর্গাপূজা ঘিরে ব্যাপক তৎপর রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই উৎসব উপলক্ষে দেশজুড়ে পূজামণ্ডপগুলোতে থাকবে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আসন্ন দুর্গাপূজায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ইতোমধ্যে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একগুচ্ছ নির্দেশনাও জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপে গড়ে তোলা হয়েছে নিরাপত্তা বলয়। এছাড়া প্রতিটি মণ্ডপে পূজা চলাকালে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, র্যাব এবং অন্যান্য বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের মতলব দক্ষিন উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক চন্দন সাহা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা আগামী বুধবার থেকে শুরু হবে, যা আগামী ১৩ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, চাঁদপুরে এ বছর ২২১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে । এরই মধ্যে সকল মন্দিরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি সকলকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ।