
চাঁদপুর খবর রিপোর্ট: চাঁদপুর জনবহুল রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের বিতর্কিত সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু ৫ আগস্ট পতিত আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় নাশকতা ও ভাংচুরের অভিযোগে মামলা রয়েছে।
এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর রেলওয়ে হকাস মাকেটে আধিপত্ত বিস্তার, দোকান থেকে চাঁদাবাজি ,দোকান হস্তান্তরের প্রভাব বিস্তার করে অর্থ আদায়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদপুর রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের পাশে ১৬’শ ফুট জায়গার উপর দ্বি-তল ভবন নির্মাণ করে ৩০টি দোকান বানিয়ে ০৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় হকার্স মার্কেটের বিতর্কিত সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনুসহ মার্কেট কমিটি।
তার সাথে হকার্স মাকেটের একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে, যারা তার অবৈধ এসব কাজে সহযোগিতা করেছে বলে সাধারণ ব্যবসায়ীরা জানায় ।
অভিযোগ রয়েছে ,হকার্স মার্কেটের আয় ব্যয় কিছুই বুঝিয়ে না দিয়ে পলাতক রয়েছেন। হকার্স মাকেটের ব্যবসায়ীরা এসব অভিযোগ করছে।
জানা গেছে, বতমানে চাঁদপুর রেলওয়ে হকার্স মাকেটের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনুর আত্মোগোপনে থাকার পর থেকে কমিটির কাযক্রমে অচলবস্থা দেখা দিয়েছে ।
অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে চাঁদপুর জনবহুল রেলওয়ে হকার্স মার্কেট। গতকাল ৪ অক্টোবর (শুক্রবার) হকার্স মার্কেটের ব্যাবসায়ী মালিক সমিতির অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু পলাতক রয়েছেন এবং সাধারণ সম্পাদক ওমরাহ হজ্জে গিয়েছেন।
এছাড়াও বিভিন্ন দোকানে খোঁজ নিয়েও তাঁর (সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু’র) কোনো খোঁজ বা তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি ৫ আগস্টের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পর থেকে পলাতক রয়েছেন শুনে তিনি কোথায় আছেন সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁর ব্যাক্তিগত নাম্বারে কল দিলে সেটি বন্ধ দেখায়।
এমনকি চাঁদপুর রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের দোকানীদের কাছে তাঁর বিষয়ে জানতে চাইলেও পাওয়া যায় নি কোনো সঠিক তথ্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেছেন, আওয়ামী সরকারের আমলে তিনি বিভিন্নভাবে লুটেপুটে খেয়েছেন। তাকে নিয়ে ইতোপূর্বে চাঁদপুরের স্থানীয় গণমাধ্যমে কয়েকবার সংবাদ হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, তিনি হকার্স মার্কেটের আয় ব্যায় কিছুই বুঝিয়ে না দিয়ে পলাতক রয়েছেন। তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন সে বিষয়ে কেউ ই খোঁজ দিতে পারছেন না।
এদিকে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের মালিক সমিতি এবং ব্যাবসায়ী সমিতি মিলে
নতুন করে মার্কেট পরিচালনা করার জন্য ২১ সদস্যের একটি উদ্যোক্তা কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এটি পূর্নাঙ্গ কমিটি নয়। ২১সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটির দায়িত্ব পালন করছেন কমিটির প্রধান দুই সমন্বয়ক- চাঁদপুর রেলওয়ে হকার্স মার্কেট লোটাস পুষ্পালয়ের মালিক- মোঃ শাহ আলম ও আঁখি ক্লথ স্টোর- মোঃ সোহেল খান।
কমিটির বিষয়ে এবং সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনুর বিষয়ে সমন্বয়ক কমিটির প্রধান শাহআলম এর কাছে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের কমিটি বিলুপ্ত। আগের কমিটির এখন আর কিছুই নেই। এখন নতুন করে আমরা ২১সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করেছি।
মার্কেটের শৃঙ্খলা ফিরাতে কেউ না কেউ তো দায়িত্ব নিতে হবে। সেই জায়গা থেকে আমরা শুরু করতেছি। সকল ব্যাবসায়ীর গ্রহণযোগ্যতা ও অংশগ্রহণেই নতুন করে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, চাঁদপুর রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের পাশে ১৬’শ ফুট জায়গার উপর দ্বি-তল ভবন নির্মাণ করে ৩০টি দোকান বানিয়ে ০৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় হকার্স মার্কেটের বিতর্কিত সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনুসহ মার্কেট কমিটি। এ মার্কেটের ৫ শতাধিক ব্যবসায়ীকে ধোকা দিয়ে ও বোকা বানিয়ে মসজিদ নির্মাণের নাম করে দ্বি-তল ভবন মার্কেট নির্মাণ করে।
এ ব্যাপাারে বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রামস্থ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রেলওয়ের তৎকালীন লাকসাম কাচারীর ভারপ্রাপ্ত আমিন আবু সাইদ পাটওয়ারী বাদী হয়ে হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ দুদু, জয়নাল আবেদীন, জাকির হোসেন নামে ০৩ জনকে বিবাদী করে চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শাসক দলীয় একটি মহল মার্কেট কমিটির সাথে যোগসাজেসে এ নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছে বলে হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ীরা জানান।
আর এর নেতৃত্বে ছিলেন রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের বিতর্কিত সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু । এ সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, লাকসাম কাচারীর ভারপ্রাপ্ত আমিন মোঃ আবু সাইদ পাটওয়ারী।