মতলব দক্ষিণ প্রতিনিধি : নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্যে দিয়ে চলছে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর পূর্ব বাজারে অবস্থিত মিম জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। লাইসেন্স না থাকার কারনে সম্প্রতি ওই মিম জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সিলগালা করা হয়।
বেশ কয়েকমাস পর শুধুমাত্র লাইসেন্স করার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে কার্যক্রম চালু করেন হাসপাতালের মালিক জসিম উদ্দিন। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে হাসপাতালটির অব্যবস্থাপনাসহ নানা অনিয়মের চিত্র দেখা যায়।
একটি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স প্রবেশপথে টানানো, তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ ও লেবার রুম প্রটোকল,ডিউটি ডাক্তার বাধ্যবাধক থাকার কথা হলেও কিছুই নেই এ হাসপাতালে।
সরকারী নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে সকল বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্যাদি সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য একজন নির্ধারিত দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকতে হবে। একইসঙ্গে তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।
যে সকল প্রতিষ্ঠানের নাম ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল হিসেবে আছে, কিন্তু শুধুমাত্র ডায়াগনস্টিক অথবা হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে তারা লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যতিরেকে কোনোভাবেই নামে উল্লেখিত সেবা প্রদান করতে পারবে না।
ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটারগরিতে লাইসেন্স প্রাপ্ত, শুধুমাত্র সে ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া কোনোভাবেই অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে না। ক্যাটারগরি অনুযায়ী প্যাথলজি বা মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে।
বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রকারভেদ ও শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী সকল শর্তাবলী বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
► হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়োজিত সকল চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রির সনদ, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।
► হাসপাতাল, ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অপারেশন বা প্রসিডিউরের জন্য অবশ্যই রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে।
► কোন অবস্থাতেই লাইসেন্সপ্রাপ্ত বা নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যতীত চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেস্থেশিয়া প্রদান করা যাবে না। বিএমডিসি স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ ছাড়া যে কোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারি/ইন্টারভেনশনাল প্রসেডিউর করা যাবে না।
► সকল বেসরকারি নিবন্ধিত লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল, ক্লিনিকে লেবার রুম প্রটোকল অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
এ নির্দেশনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেরের মহাপরিচালকের অনুমোদন রয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন রোগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে এখানে নিয়মিতভাবে কোন ডাক্তার পাওয়া যায় না।
হাসপাতালের মালিক জসিম উদ্দিনকে না পেয়ে ওনার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মহিবুল্লা সৌরভ বলেন,হাসপাতালটির লাইসেন্স করা হয়েছে। তবে ডিউটি ডাক্তার নেই এবং অন্যান্য সমস্যাগুলো সম্পর্কে যে অভিযোগ পাওয়া গেছে তা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।