গতকাল শুক্রবার খেলাফত মজলিস চাঁদপুর শহর শাখার উদ্যোগে শহর সভাপতি মাও সুলতান আহমদের সভাপতিত্বে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে অবমাননা এবং লেবাননে ইসরায়েলি হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে একটি সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বায়তুল আমিন চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ভারতের ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ড এবং ইসরায়েলের আগ্রাসী নীতির তীব্র নিন্দা জানান।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের জেলা সভাপতি তোফায়েল আহমদ বলেন, “মহানবী (সা:) এর অবমাননা বিশ্বের দেড়শো কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত করেছে, এবং আমরা এ ন্যক্কারজনক ঘটনার কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েলের বর্বর হামলা লেবাননের মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। আমরা অবিলম্বে এ ধরনের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।”
প্রতিবাদ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন এবং তারা হাতে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবিতে স্লোগান দেন।
খেলাফত মজলিস চাঁদপুর শহর শাখার সেক্রেটারি মাও রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা সাধারণ সম্পাদক মাও আবুল কালাম আযাদ, জয়েন সেক্রেটারি ফারুক মুহাম্মদ নোয়াইম, মনির হোসাইন, ইসলামী ছাত্র মজলিসের জেলা সভাপতি সাইফুদ্দিন আহমদ,আবু শাফায়াত এবং তারা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। নেতৃবৃন্দ মুসলিম দেশগুলোকে একসাথে থেকে আন্তর্জাতিক ফোরামে এ বিষয়ে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, “মহানবী (সা:) এর মর্যাদা সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের কাছে শ্রদ্ধার বিষয়। ভারতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার এ ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। এই ন্যক্কারজনক কাজ বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।” তারা ভারতের সরকারকে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক হামলার বিষয়ে বক্তারা বলেন, “ইসরায়েলের এ আক্রমণ শুধুমাত্র লেবাননের স্বাধীনতাকে লঙ্ঘন করে না, এটি আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আমরা এ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।”
বক্তারা মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যতদিন পর্যন্ত মুসলিম জাতি ঐক্যবদ্ধ না হবে, ততদিন এ ধরনের আক্রমণ ও অবমাননার ঘটনা ঘটতে থাকবে। আমাদের মুসলিম দেশগুলোকে শক্তিশালীভাবে এসব ঘটনা মোকাবিলা করতে হবে এবং বিশ্বমঞ্চে সঠিক নেতৃত্ব প্রদর্শন করতে হবে।”
প্রতিবাদ মিছিলের শেষে নেতৃবৃন্দ বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের প্রতিবাদ জানিয়েছি, তবে আমাদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেওয়া উচিত হবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ ধরনের হামলা ও অবমাননার ঘটনা বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
সমাবেশ ও মিছিলে চাঁদপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন থেকে খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণে বিশেষ দোয়া করা হয় এবং নেতৃবৃন্দ মুসলিম উম্মাহকে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।