শাহরাস্তি হোমিও কলেজের প্রভাষক ডাঃ বাসেতের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টারঃ শাহরাস্তি উপজেলার দোয়াভাঙ্গা এলাকার ‘চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ’র প্রভাষক ডাঃআব্দুল বাসেতের বিরুদ্ধে তার শিক্ষা সনদের তথ্য গোপন ও বয়স কমিয়ে নিয়োগ লাভ করে ১৬ বছর ধরে সরকারি বেতন ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

এবিষয়ে কলেজের অন্যান্ন (প্রভাষক) শিক্ষকরা ১৯ সেপ্টেম্বর, রেজিস্ট্রার বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক শিক্ষা চিকিৎসক কাউন্সিল ও

২২ সেপ্টেম্বর) রোজ রবিবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগে তারা জানান, শাহরাস্তি উপজেলার দোয়াভাঙ্গা এলাকার ‘চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ’র প্রভাষক ডাঃআব্দুল বাসেত তার শিক্ষা সনদের তথ্য গোপন ও বয়স কমিয়ে নিয়োগ লাভ করেন।যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও বেআইনি। তিনি ১৬ বছর ধরে সরকারের বেতন ভাতা অবৈধ ভাবে ভোগ করেছেন। এতদিন এই বিষয়টি তাদের জানা ছিল না। যখন তারা এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন,কলেজের সুনাম রক্ষার্থে তাৎক্ষণিক তারা রেজিস্টার বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি শিক্ষা চিকিৎসক কাউন্সিল ও চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট ডাঃ আব্দুল বাসেতের এহেন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয় যে,প্রভাষক ডাঃ আব্দুল বাসেতের নিয়োগ প্রক্রিয়াটি তৎকালীন সময়ে সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়া করা হয়েছে। প্রভাষক আব্দুল বাসেত এর জন্ম ২৩/০৫/১৯৭৩ সালে।

আর উনার চাকুরিতে যোগদানের তারিখ ২১/১২/২০০৮ সালে।বাংলাদেশ হোমিও বোর্ডের নিয়োগ বিধিমালা-২০১৩ অনুযায়ী চাকুরিতে যোগদানকালীন বয়স সর্বোচ্চ ৩২-বছর থাকলেও ডাঃআব্দুল বাসেতের যোগদানকালীন সময়ে তার বয়স ছিল প্রায় ৩৬ বছর যা নিয়োগবিধিমালা বিধি বহির্ভূত কাজ।

এছারাও আরো বলা হয় যে, হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে প্রভাষক পদে আবেদনের পূর্বশর্ত হলো একজন চিকিৎসক রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হতে হবে। উক্ত চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন প্রদানের তারিখ হতে তিন বছর পূর্ণ হতে হবে।অথচ ডাক্তার বাসেতের রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত সনদে দেখা যায় তিনি ২০১১ সালে সনদ প্রাপ্ত হন, যার নং-২১৩৮২।আর তিনি তথ্য গোপন করে চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ (শাহরাস্তি) প্রভাষকের পদ বাগিয়ে নিয়ে ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত থাকা অবস্থায় তৎকালীন রাজনৈতিক দলের প্রভাব বিস্তার করে ২০০৮ সালে তিনি ঐ কলেজে যোগদান করেন। যা নিঃসন্দেহে অনিয়ম ও বিধিবহির্ভূত কাজ।সুতরাং এতেই প্রতিীয়মান হয় যে তার নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ছিল সম্পূর্ণ অবৈধ। এই ১৬ বছর ধরে তিনি সরকারের যে বেতন ভাতা ভোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রভাষক ডাঃআব্দুল বাসেতের সাথে আলাপকালে তিনি জানান,কলেজে আমার নিয়োগ ও যোগদান সম্পর্কে তৎকালীন অধ্যক্ষ মহোদয়ই ভালো বলতে পারবেন তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না। এবং তার বিরুদ্ধে যে,অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়েছে এ সম্পর্কেও তিনি অবগত নন। এর বেশী কিছুই তিনি আর বলতে পারবেন না।

বিষয়টি সম্পর্কে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডাক্তার তামজিদ হোসেন এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি আমি দায়িত্বে আসার পূর্বেই হয়েছে। আমি এই ব্যাপারে অবগত নই। তৎকালীন সময় যিনি অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

বিষয়টি সম্পর্কে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা (ইউএনও)ও চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ শাহরাস্তি’র সভাপতি মো. ইয়াসির আরাফাতের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি এই অভিযোগ সম্পর্কে কিছুই জানিনা,আর ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে অবশ্যই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিষয়টি নিয়ে অত্র কলেজের শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও এলাকাবাসী দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।তারা বলেন,একজন ব্যাক্তি কিভাবে এতোদিন ধরে তার সনদের তথ্য গোপন করে এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৎকালীন সরকারি দলের প্রভাব বিস্তার করে চাকুরীতে যোগদান করে সরকারি টাকা আত্মসাত করেছে।আমরা এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম রক্ষার্থে সংস্লিস্ট কতৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এর সু-বিচার কামনা করছি।

সম্পর্কিত খবর