দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কৃত স্কাউট সম্পাদকের বেহায়াপনা কাণ্ড

ফরিদগঞ্জ ব্যুরোঃ অর্থ লুটের বিষয়ে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার পর বহিষ্কৃত ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্কাউটের সম্পাদকের বেহায়াপনা কান্ডে অতিষ্ঠ রোভার-স্কাউট সদস্য এমনকি সয়ং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারাও৷

উপজেলা স্কাউটের বহিষ্কৃত কাণ্ডব-জ্ঞানহীন নির্লজ্জ সদ্য সাবেক সম্পাদক উপজেলা স্কাউটের ১৫ টি ব্যান্ড হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

২০ সেপ্টেম্বর সকালে প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে সুযোগ পেয়েই উপজেলা স্কাউট অফিস থেকে ১৫ টি ব্যান্ড সরিয়ে ফেলেন তিনি। পরে সেগুলো নিয়ে রাখেন ফরিদগঞ্জ বাস¯ট্যান্ডের নিকটবর্তী ফরিদগঞ্জ বালিকা দক্ষিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে৷ খবরটি ছড়িয়ে পড়লে পরে রোভার স্কাউটদের তোপের মুখে পড়ে সদ্য দায়িত্ব পাওয়া স্কাউট সম্পাদকের হস্তক্ষেপে উপজেলা স্কাউটের অর্থায়নে কেনা ব্যান্ডগুলো উদ্ধার করা হয়।

১৯ সেপ্টেম্বর বহিষ্কার হওয়ার পরও কয়েকজন স্কাউট শিক্ষার্থীকে নিয়েই নাম মাত্র ট্রুপ মিটিং করেন। বহিষ্কৃত সাবেক উপজেলা স্কাউট সম্পাদক ভিন্ন মহলের কাছে বলে বেড়াচ্ছেন তাকে আপাতত স্কাউট থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। স্কাউটিং থেকে তো আর বাদ দেয়া হয়নি।

কেন সরিয়েছেন উপজেলা স্কাউটের ব্যন্ড সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ওনুআ মুক্ত স্কাউট ইউনিটের সম্পদ এগুলো। আমি জাহাঙ্গীর স্যারের (সদ্য দায়িত্ব পাওয়া উপজেলা স্কাউট সম্পাদক) সাথে কথা বলে বাচ্চাদের শেখানোর জন্য ব্যান্ডগুলো নিয়েছি। অথচ অনুআা মুক্ত স্কাউট গ্রুপের নামে উপজেলা, জেলা কিংবা অঞ্চল পর্যায়ের কোথাও নেই এই দলের নামে কোন অনুমোদন। যে দলের বৈধ কোন অনুমোদনই নেই, স্কাউট সদস্যদের নিয়ে সক্রিয় কোন ইউনিট নেই। সেই দলের ব্যান্ড সেট আসবে কোথা থেকে? এমন প্রসঙ্গে হাস্য রসের জন্ম দিয়েছে বিতর্কিত এই উপজেলা স্কাউট সম্পাদক।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কথা হয় সদ্য দায়িত্ব পাওয়া উপজেলা স্কাউট সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন পাটওয়ারীর সাথে তিনি জানান, সেদিনকার জরুরী সভার পর এখন পর্যন্ত অফিসের যাবতীয় সকল কিছু সহ আমি দায়িত্ব বুজে পাইনি। গতকাল একজন রোভার সদস্যের মাধ্যমে আমি উপজেলা স্কাউট অফিস থেকে ব্যান্ড সেট একটি অটোতে করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এমন খবর পাই। আমি তাৎক্ষণিক সাবেক সম্পাদক জিয়াউর রহমান কে মুঠোফোনে কল দিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করি। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে আমি ফের খবর পাই উপজেলা স্কাউটসের ব্যান্ডগুলো ফরিদগঞ্জ বাস¯ট্যান্ড সংলগ্ন ফরিদগঞ্জ বালিকা দক্ষিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি অফিস কক্ষে রাখা হয়েছে। আমি তাৎক্ষণিক সেখানে ছুটে যাই এবং কল দিয়ে জিয়াউর রহমান কে সেখানে নেই। সবগুলো ব্যান্ডকে যেখান থেকে আনা হয়েছে সেখানে রেখে আসার জন্য বলি এবং তিনি একটি অটো যোগে সেগুলো স্কাউট অফিসে রেখে আসেন।

রোভার স্কাউট সদস্য রেদোয়ান খাঁন এই প্রতিবেদককে জানান, বহিষ্কারের পর তিনি কিভাবে উপজেলা স্কাউটস অফিসে জান এবং ব্যান্ড সেট আত্মসাথের চেষ্টা করেন তা আমার বোধগম্য নয়। বহিষ্কারের পর তার কাছে উপজেলা স্কাউট অফিসের চাবিই বা থাকে কিভাবে ? যিনি উপজেলা স্কাউটের ব্যান্ড সেট আত্মসাৎ করতে পারেন তার কাছে উপজেলা স্কাউটের নথিপত্র সহ যাবতীয় জিনিসপত্র কোনভাবেই সুরক্ষিত নয়।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্কাউটস কমিশনার হাসিনা আক্তার জানান, একটা অন্যায় করে বহিষ্কৃত হওয়ার পরও আবার উনি যে কাজটা করেছে তা নিন্দনীয়। সেদিনকার জরুরী সভায় তাকে বহিষ্কার করার পর তিনি যেহেতু দীর্ঘদিন এই অফিসটি ব্যবহার করেছেন তাই তিনি যেন অফিসের সকল জিনিসপত্র বুজিয়ে দিতে পারেন আর আমরাও তা বুঝে নিতে পারি সেজন্য কিছুটা সময় দেয়া হয়েছে। সব ঘুছিয়ে খুব সহসায় একটা মিটিংয়ের মাধ্যমে তিনি সকল কিছু বুজিয়ে দেয়ার কথা।

কিন্তু তার মাঝে তিনি উপজেলা স্কাউটের ব্যান্ড সেট নিয়ে যা করলেন তা ভাবতেও নিজের কাছে লজ্জাবোধ হচ্ছে। সে যেই হোক, কখনো অন্যায়কে সমর্থন করিনি আর করবোও না। কারো ব্যাক্তিগত অপরাধের জন্য সে যা শাস্তি পাওয়ার পাক, যা শাস্তি দেয়ার দেওয়া হোক। স্ব-জ্ঞানে কখনো অন্যায়ের পক্ষে ছিলাম না আর থাকবোও না।

এবিষয়ে উপজেলা কাব লিডার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন বাংলাদেশ স্কাউট জাতীয় সদর দপ্তর থেকে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর জন্য উৎসাহ উপকরন এর সাথে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ১ সেট করে ব্যান্ড দেওয়া হয় সেখান হতে উপজেলা স্কাউটের বহিস্কৃত সম্পাদক জিয়াউর রহমান শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষন দেওয়ার জন্য ৫-৬ সেট ব্যান্ড রাখেন গত কাল তিনি নির্বাহী কমিটিকে অবগত না করে অনত্র্য ব্যন্ড গুলো নিয়ে যান যা পরবর্তীতে আবার সন্ধ্যায় বাধ্য হয়ে উপজেলা স্কাউট আফিসে ফেরত দেন। যা স্কাউটিংয়ের জন্য নিন্দনীয় ও লজ্জাজনক।

এর আগে অর্থ আত্মসাৎ করায় জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে স্কাউট ও রোভার সদস্য অভিযোগ তোলে। অভিযোগের ভিত্তিতে অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলা স্কাউটসের এক জরুরী সভায় তাকে উপজেলা স্কাউট সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সম্পর্কিত খবর