প্রেস বিজ্ঞপ্তি : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, চোর-দুর্নীতিবাজ, ডাকাত দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্রগঠন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, যার ভিতর ইনসাফ নেই, যে দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, ধর্ষক, জালিম সেই ব্যক্তি কীভাবে ইনসাফভিত্তিক সমাজ উপহার দেবে, কাজেই জালিম ও চোর-ডাকাতদের হাত থেকে ইসলামপন্থিদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ইসলামপন্থি দলগুলোর ঐক্য হলে ইসলামই হবে দেশের একমাত্র চাবিকাঠি। জালিমদের হাত থেকে আল্লাহভীরু নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা সময়ের অনিবার্য দাবি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের অধিকার আদায়ের জন্য ৫ আগস্ট জীবনবাজি রেখে হাজারো মায়ের বুক খালি করে আমরা দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা দ্বিতীয় বারেরমতো দেশ স্বাধীন করেছি।
এ দেশ আমার। এ দেশ আপনার। ঢাবি, বুয়েট আমাদের কিন্তু পড়ার অধিকার সবার। দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে দেশ সবার। মুসলিমদের পাশাপাশি সকল ধর্মের মানুষ এখানে নিরাপদ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সংখ্যালঘুদের নিয়ে যারা রাজনীতি করে তারাই হিন্দুদের মন্দিরে আক্রমণ চালায়।
৫ আগস্ট যে বৈষম্য ও জুলুমের বিরুদ্ধে বিজয় এনেছি পরবর্তী সময় এসে আমরা দেখলাম সেই আগের মতোই দখলদারি, চাঁদাবাজি, ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে একটি গোষ্ঠী। এসব বন্ধ করতে হবে। সবাই মিলে একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ভাগ্যাহত জনতার ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না। স্বাধীনতা অর্থবহ হবে না। রাষ্ট্র সংষ্কার করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সময়েল দাবি। কিন্তু ঘুরেফিরে দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় আনলে জনগণের দুঃখ-দুর্দশার অন্ত থাকবে না।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে করতে হবে। এতে কালো টাকার ছড়াছড়ি বন্ধ হবে। জনগণ ভোট দেবে মার্কাতে কোনো ব্যক্তিকে নয়। রাষ্ট্রেরও হাজার হাজার কোটি টাকা বেঁচে যাবে। চাঁদাবাজ ও দখলদারদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। এ দেশ আমাদের সকলের। সকল ধর্মের সকল নাগরিকের স্ব-স্ব অধিকারের পূর্ণ নিশ্চয়তা দিতে হবে।
ইসলাম ক্ষমতায় আসলে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গ্যারান্টি দিয়ে তিনি বলেন, ইসলাম ছাড়া মানবতার মুক্তি নাই। ইসলামী অর্থনীতি চালু হলে ঘুষ থাকবে না, লুটপাট হবে না। আদর্শিক পরিবর্তন ছাড়া গণমানুষের কাঙ্ক্ষিত মুক্তি অর্জন সম্ভব নয়।
গতকাল শুক্রবার ইসলামী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মতলব উত্তর উপজেলা শাখার উদ্যোগে স্থানীয় ছেংগারচর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান একক কোনো গোষ্ঠীর ছিলো না এ অভ্যুত্থান সকল দলের। সকল ছাত্র-জনতার। এককভাবে কোনো দল বা ব্যক্তি গণহত্যাকারী মাফিয়াগোষ্ঠীকে ক্ষমা করার অধিকার রাখে না। বিগত ১৬ বছরে হাজার হাজার মায়ের বুক খালি হয়েছে, অনেক বোনকে করা হয়েছে বিধবা, বাবার ছায়া থেকে বঞ্চিত হয়ে শত শত শিশুর আর্তচিৎকার আমরা এখনও শুনি। ১৬ বছরের নারকীয় তান্ডবের বিচার ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে ক্ষমা করার অধিকার কারো নেই।
গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের সেক্রেটারী জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হেলাল আহমাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক এইচ এম নিজাম, জেলা যুবনেতা শেখ হাবিবুর রহমান, শ্রমিকনেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ বেপারী, ছাত্রনেতা রাকিব হোসাইন, হাফেজ তানজিল প্রমুখ।