ইসমাইল হোসেন বিপ্লব,কচুয়া ॥ সামান্য বৃষ্টি হলেই কচুয়া শহীদ স্মৃৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কোয়াকোর্ট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বৃষ্টির পানি জমে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
বৃহস্পতিবার সরজমিনে প্রতিষ্ঠানে গেলে দেখা যায়, দু’টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঝ খানে এ মাঠটি। মাঠটি নিচু হওয়ায় এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই মাঠটির বেশির ভাগ অংশেই জমে হাঁটু পানি হয়ে যায়। অল্প কিছু অংশে পানি না থাকলেও তা কর্দমাক্ত হয়ে থাকে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে মাঠে নামতে পারছে না। জলাবদ্ধতার কারনে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে যেতে হাটু পানির উপর দিয়ে যেতে হয়।
অনেক সময় শিক্ষার্থীরা পা পিছলে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এতে করে জামা কাপর বই-খাতা কর্দমাক্ত হয়ে যায়। মাঠে জমে থাকা দুর্গন্ধ পানি থেকে এডিস মশা, ডেঙ্গু মশা, বিষাক্ত পোকামাকড় সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইদানিং কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগী প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তন্মধ্যে ৯জন ভর্তি রয়েছে। বাকী ৬জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে রয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানাযায়। এ ভাবে ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপ বাড়লে স্কুলের মাঠে জমে থাকা পানি থেকে ডেঙ্গু মশার সৃষ্টি হলে শিক্ষার্থীদের মাঝে ভয়াবহ রূপধারন করবে।এ পরিস্থিতিতে দ্রুততার সঙ্গে বিদ্যালয় মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের জোর দাবি জানান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভের সাথে জানান,প্রশাসনের কর্মকর্তরা একাধিক বার মাঠ পরিদর্শনে এসেও আশ^াস দিলেও কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। বাড়িতে বদ্ধ পরিবেশে থাকি, আবার বিদ্যালয়ে এসে শ্রেণিকক্ষেও একই অবস্থা। দ্রুত মাঠটি সংস্কার করার দাবি জানায় তারা।
স্থানীয় ও অভিভাবকরা জানায়, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের মাঠের জলাবদ্ধতা প্রশাসন ইচ্ছা করলেই নিরসন করতে পারতেন। তাদের মধ্যেও গাফলতি ছিলো। এ পানির কারনে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তি শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী উপলব্ধি করতে পারছে। মাঠটি শুধু স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরই নয়, গ্রামের যুবকদেরও খেলাধুলার মাঠ। উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের নামে বেনাম কাগজ কলমে প্রকল্প থাকলেও সরজমিনে কাজের অস্তিত্ব মেলেনি । ওই প্রকল্প টাকা রাঘব বোয়ালরা তসরুপ করে নিয়ে যায়। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় এ প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠটি আজকে অনেক বছর ধরে এই অবস্থা পড়ে রয়েছে। এটা দেখা যেন কেউ নেই ?
কচুয়া শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুন্সী মোহাম্মদ বাছির উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি নিয়ে কয়েকবার শিক্ষার্থী অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন জলবদ্ধতা নিরসনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদকে অবগত করলেও বিষয়টি বিগত দিনে প্রশাসন আমলে নেয়নি এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে বাস্তব ভিত্তিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
কোয়াকোর্ট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, আমি যোগদান করার পর থেকে দেখি একটু বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি জমে থাকায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা শারীরিক শিক্ষা ও মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না। বিষয়টি বিগত দিনে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে একাধিকবার জানানো হয়েছে। মাঠ সংস্করণের জন্য কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
নব যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্কুল মাঠের জলবদ্ধতা বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সাথে কথা বলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরসন করবো।