শামীম আহম্মেদ জয় : ভরা মৌসুমেও মেঘনা নদীতে ইলিশ পাচ্ছেন না মতলব উত্তর উপজেলার জেলেরা। দিনরাত নদীতে জাল ফেলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা।
যে মাছ পাচ্ছেন তাতে লাভ দূরে থাক, নৌকার জ্বালানি খরচই উঠছে না। এতে মাছ শিকারে যেতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন জেলেরা। আর এতে অভাব, অনটন আর অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তারা। কাঙ্ক্ষিত ইলিশের আশায় ধারদেনা আর এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে জাল বানিয়ে ও নৌকা মেরামত করলেও সেই ঋণ পরিশোধ নিয়ে অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন জেলেরা।
মৎস্য বিভাগের হিসাবে, গত চার বছর ধরে ইলিশের উৎপাদন এবং আহরণ ভালো হয়েছে। প্রতি বছর ইলিশ আহরণ ও লক্ষ্যমাত্রার মাত্রা বাড়লেও এ বছর ভরা মৌসুমে ইলিশের প্রাপ্যতা এখন পর্যন্ত কম থাকায় হতাশ জেলেরা।
জানা গেছে, নদীতে ইলিশ ধরার ওপর নির্ভরশীল মতলব উত্তর উপজেলার আট সহস্রাধিক জেলে। মাছ শিকারের উদ্দেশে প্রতিদিন জাল ও নৌকা-ট্রলার নিয়ে নদীতে নেমে পড়েন তারা। কিন্তু চলতি ভরা মৌসুমে সারা দিন জাল বেয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী ইলিশ পাচ্ছেন না তারা। এতে মাছ শিকারে গিয়ে যে খরচ হয় তার অর্ধেকও উঠছে না ইলিশ বিক্রির টাকায়। এতে চরম সংকটে পড়েছেন জেলেরা। ধারদেনা আর ঋণ পরিশোধের চিন্তায় চরম হতাশায় ভুগছেন।
জেলে আলী আরশাদ, ফুলচান বর্মন ও চাঁদ বর্মন, নুরুল হক বলেন, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম কিন্তু নদীতে ইলিশ নেই। সারা দিন নদীতে জাল ফেলেও মাছ পাচ্ছি না। এমন অবস্থায় সুদে ধারদেনা আর এনজিওর ঋণ কীভাবে শোধ করব সে চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারি না।
এদিকে, ইলিশসংকটে শুধু জেলেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, এমনটা নয়। আড়তদারদেরও চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। বিগত সময় এমন দিনে ইলিশের সরবরাহ বেশি থাকলেও এবার তা এনেক কমে গেছে বলে মনে করছেন তারা।
ইলিশা ঘাটের আড়তদার দেলু বেপারি বলেন, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। অন্যান্য বছরের এই সময়ে প্রচুর ইলিশ পাওয়া গেলেও বর্তমানে ইলিশের তেমন দেখা নেই।
মতলব উত্তর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাশ বলেন, এখন ইলিশ একটু কম পাওয়া যাচ্ছে। নদীতে ডুবোচর সৃষ্টি হওয়া, তলদেশে খাদ্য কমে যাওয়া এবং পানিদূষণের কারণে পদ্মা, মেঘনা নদীতে ইলিশের বিচরণ কিছুটা কমেছে।